রেংমিটচ্য ভাষা
রেংমিটচ্য ভাষা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও মিয়ানমারের একটি ভাষা।[৩] এটি বর্তমানে সংকটাপন্ন-বিপন্ন একটি ভাষা। এটি স্বতন্ত্র কিন্তু নিকটবর্তী খুমি এবং ম্রো ভাষার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ভাষা।
রেংমিটচ্য | |
---|---|
দেশোদ্ভব | বাংলাদেশ |
অঞ্চল | পার্বত্য চট্টগ্রাম মিয়ানমার |
মাতৃভাষী | ৬ (২০২২)[১]
|
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-৩ | অজানা (নেই ) |
গ্লোটোলগ | reng1255 [২] |
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রক্কালে আলীকদমে কয়েকটি পাড়ায় শতাধিক রেংমিটচ্যভাষী পরিবার ছিল। ক্লাউস-ডিয়েটার ব্রাউনস ও লোরেন্স জি লোফলার ১৯৬০-এর দশকে ম্রো; হিল পিপল অন দ্য বর্ডার অব বাংলাদেশ নামে একটি বইয়ে লিখেছেন, “আরাকান থেকে আসা খুমি নামে রেংমিটচ্য ভাষার একটি উপজাতি মাতামুহুরী উজানের ম্রোদের সঙ্গে মিশে গেছে।”[৪][৩]
এ ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী আলীকদম উপজেলার সদর থেকে ১০-১২ মাইল দূরে তৈনখালের উপত্যকায় অবস্থিত ক্রাংসিপাড়ায় প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাস করছেন।[৫] ২০১৩ সালে এই ভাষার বক্তা হিসেবে ৩৬ জনকে পাওয়া গিয়েছিল।[১] ২০১৪ সালে তা কমে ৩০ জনের নিচে দাঁড়ায়। সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালে এই ভাষায় কথা বলতে পারতেন ১০ জন।[৬] ২০২২ সালে প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী এ ভাষাভাষীর সংখ্যা ৬ জন। এদের বেশিরভাগ হলেন ৬০ উর্ধ্ব ব্যক্তি। ছয়জনের মধ্যে চারজন আলীকদম ও দুজন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম ম্রো জনগোষ্ঠীর পাড়ায় বসবাস করেন।[১] মায়ানমার ও ভারতে অভিবাসন এবং স্থানীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতির সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংস্কৃতি পরিত্যাগ করা প্রভৃতি কারণে এ ভাষাভাষী লোকেরা বিলুপ্ত হচ্ছে।[৭]
ভাষাবিজ্ঞানী পিটারসন (২০১৭) রেংমিটচ্য ভাষাকে খোমীয় ভাষাসমূহের একটি হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করেন।[৮]
ভাষাটির কিছু শব্দের উদাহরণ হল:[৩]
- চবা (ধান)
- হুং (পাহাড়)
- তুই (পানি)
- বেহেক (ছাগল)
- আই চি ক কাইকো (আমি তোমাকে ভালোবাসি)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ চাকমা, বুদ্ধজ্যোতি (২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২)। "যে ভাষা জানেন মাত্র ৬ জন"। প্রথম আলো।
- ↑ হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "রেংমিটচ্য"। গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট।
- ↑ ক খ গ "ভাষা উদ্ধার অভিযান"। কালের কণ্ঠ। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ BRAUNS (ফেব্রুয়ারি ১৯৯০)। Mru: Hill People on the Border of Bangladesh। Birkhäuser; ১ম সংস্করণ। পৃষ্ঠা ২৪৮। আইএসবিএন 978-3764318161।
- ↑ শাহরিয়ার, আলাউদ্দিন (২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "বিলুপ্ত রেংমিটচা ভাষার সন্ধান"। এনটিভি অনলাইন।
- ↑ "ম্রো ভাষার ৫ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন"। সমকাল। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ ডেস্ক, ভিডিও। "ওরা হারিয়ে গেলে হারিয়ে যাবে আমাদের একটি ভাষা"। www.prothomalo.com। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ পিটারসন, ডেভিড। ২০১৭। "অন কুকি-চিন সাবগ্রুপিং।" পিকাস সিজি ডিং ও জামিন পেলকে, সম্পাদক। সোসিওহিস্টোরিকাল লিঙ্গুইস্টিক ইন সাউথইস্ট এশিয়া: নিউ হরাইজনস ফর তিবেতো-বার্মান স্টাডিস ইন অনার অফ ডেভিড ব্র্যাডলি, ১৮৯-২০৯। লাইডেন: ব্রিল।