রূহ আফজা

ঘনীভূত স্কোয়াশ

রূহ আফজা (হিন্দি: रूह अफ़ज़ा ; উর্দু: روح افزا‎‎) একটি ঘনীভূত স্কোয়াশ। এটি উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের নাকি কর্তৃক ১৯০৬ সালে এটির উপাদান প্রণীত হয়।[১] এটি যাত্রা শুরু করে পুরাতন দিল্লি থেকে। বর্তমানে হামদর্দ (ওয়াক্‌ফ) ল্যাবরেটরীজের বাংলাদেশ, ভারতপাকিস্তান শাখা এটি উৎপাদন করে থাকে। এটি রমযান মাসে ইফতারের সময় উপমহাদেশের বহু মুসলমান পানীয় হিসেবে খেয়ে থাকেন। এটি সিরাপ আকারে বিক্রি হলেও পানি বা দুধ এবং বরফ ইত্যাদির সংমিশ্রণে সরবত বানিয়ে ইফতারের সময় খাওয়া হয়ে থাকে। [২]

রূহ আফজা
রূহ আফজার লোগো
উদ্ভাবকারীহাকিম হাফিজ আব্দুল মজিদ
বাজারে ছাড়ার বছর১৯০৭
কোম্পানিহামদর্দ ল্যাবরেটরীজ (ওয়াক্‌ফ) বাংলাদেশ
ওয়েবসাইট[৩]

ইতিহাস সম্পাদনা

 
রূহ আফজার বোতল
 
রূহ আফজার সিরাপ থেকে তৈরিকৃত শরবত

১৯০৬ সালে ইউনানি চিকিৎসক হাকিম হাফিজ আব্দুল মজিদ পুরাতন দিল্লিতে তার চিকিৎসালয় স্থাপন করে। পরের বছর তিনি রূহ আফজা বাজারে আনেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তার বড় ছেলে ভারত থেকে গেলেও ছোট ছেলে পাকিস্তান চলে যায় এবং সেখানে করাচিতে দুই রুম নিয়ে স্বতন্ত্র হামদর্দ (ওয়াক্‌ফ) ল্যাবরেটরীজ চালু করে।[৩][৪]

২০১০ সালে শেফ নিতা মেহতা রূহ আফজার বাণিজ্যিক প্রচারণায় অংশ নেন।[৫]

উপাদান সম্পাদনা

রূহ আফজা সিরাপের উপাদানসমূহ হল:[৬]

  • গাছ গাছড়া: খুরফা বীজ, চিকোরি, কমন গ্রেপ ভাইন, ইউরোপীয় সাদা শাপলা, শাপলা, পদ্ম, তারাফুল, ধনে
  • ফল: কমলালেবু, সাইট্রন,আনারস , আপেল, বেরি, স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি, লোগানবেরি, কালো জাম, চেরি, কনকর্ড গ্রেপস, ব্ল্যাককুরান্ট, তরমুজ
  • সবজি: পালংশাক, গাজর, মিন্ট,ধুন্দল
  • ফুল: গোলাপ, কেওড়া, লেবু, কমলা
  • মূল: ভেটিভার

সরবত প্রস্তুত প্রণালী সম্পাদনা

  • ১ গ্লাস ঠাণ্ডা পানি/ দুধ
  • ২ টেবিল চামচ রূহ আফজা
  • ২টি ছোট বরফখণ্ড

অতিরিক্ত সম্পাদনা

রূহ আফজা সিরাপ ঠাণ্ডা দুধ ও বরফের সংমিশ্রণে খাওয়া হয়ে থাকে। রূহ আফজা সাধারণত রমযান মাসে দিনশেষে রোযা ভাঙার পর ইফতারের সময় সরবত বানিয়ে খাওয়া হয়ে থাকে।[৭] রূহ আফজার মিশ্রণকে পানির সাথে মেশানো হলে তা সরবতের রূপ নেয়। রূহ আফজা সিরাপ প্রায়ই কুলফি আইসক্রিমসেমাইয়ের সাথে মিশিয়ে ফালুদা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

সমালোচনা সম্পাদনা

বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন প্রচারের অভিযোগে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোহা. কামরুল হাসান ৩০ মে ২০১৮ সালে রূহ আফজার বিপণন প্রতিষ্ঠান হামদর্দের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এতে বলা হয় ‘৩৫ ফলের রস দিয়ে তৈরি রূহ আফজা’ এমন তথ্য দিয়ে যে বিজ্ঞাপনে প্রচার করা হয় তা সঠিক নয়।[৮] মামলার প্রেক্ষিতে একই বছরের ১২ জুন বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত ১-এর বিচারক এএফএম মারুফ চৌধুরী বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন প্রচারের দায়ে হামদর্দকে চার লাখ টাকা জরিমানা করেন।[৯][১০][১১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. [১][২] Introduction-history Hamdard Rooh Afza
  2. H. Panda (২০০৪), Handbook on Ayurvedic Medicines with Formulae, Processes and Their Uses, National Institute of Industrial Research, আইএসবিএন 81-86623-63-9, ... When we keep in mind the many qualities Rooh Afza's ingredients described above, it is easy to understand why it has been found to be an exceptionally appropriate summer drink ... [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Rooh Afza, the syrup that sweetens the subcontinent's summers"The National (Abu Dhabi)। এপ্রিল ২৭, ২০১২। 
  4. "1907 Rooh Afza: Lal salaam"Mint। আগস্ট ১০, ২০১২। 
  5. "Hamdard gives century-old Rooh Afza a facelift"Hindustan Times। ২৮ জুন ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১২ 
  6. "Rooh Afzalː The unique composition of Rooh Afza"। ৯ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৯ 
  7. Roohafza reigns supreme in Pakistan during Ramzan
  8. "রুহ্ আফজার বিরুদ্ধে মামলা"জাগো নিউজ। ৩১ মে ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৯ 
  9. "রুহ আফজা'কে চার লাখ টাকা জরিমানা স্পেশাল ম্যাজিষ্ট্রেট বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের রায়"দৈনিক ইত্তেফাক। ৩১ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৯ 
  10. "রুহ আফজাকে চার লাখ টাকা জরিমানা"দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৯ 
  11. "'রুহ আফজা'কে চার লাখ টাকা জরিমানা"বাংলা ট্রিবিউন। ১২ জুন ২০১৮। ৩১ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা