রামজিয়া আল-ইরিয়ানি

ইয়ামেনি লেখিকা

রামজিয়া আব্বাস আল-ইরিয়ানি (رمزية عباس الإرياني, ১৯৫৪ - ১৪ নভেম্বর ২০১৩) ছিলেন একজন অগ্রণী ইয়েমেনি ঔপন্যাসিক, লেখক, কূটনীতিক এবং নারীবাদী। তিনি রামজিয়া আল-এরিয়ানি নামেও পরিচিত ছিলেন। ইয়েমেনের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আবদুল রহমান আল-ইরিয়ানির ছিলেন তার চাচা।[১]

জীবনী সম্পাদনা

তিনি ইয়েমেনের ইব মুফাহাজাহ বা গভর্নরেটের ইরিয়ান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাই জন্মস্থানের নাম অনুসারে তার নামের শেষে ইরিয়ানি শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে। তিনি তাইজের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। তারপর তিনি মিশরের কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৭৭ সালে এই বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি আরবি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮০ সালে তিনি ইয়েমেনের কূটনৈতিক শাখায় যোগদানকারী প্রথম মহিলা কূটনীতিক হন।[২] তিনি ইয়েমেনি মহিলা ইউনিয়নের (ইউডব্লিউইউ) প্রধান ছিলেন এবং আরব পরিবার সংস্থার বোর্ড সদস্য ছিলেন।[৩] তার রাজনৈতিক কাজে তিনি ইয়েমেনে নারীবাদের অক্লান্ত সমর্থক ছিলেন এবং নারীদের রাজনৈতিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে উৎসাহিত করেছিলেন। ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি ইয়েমেনি মহিলা ইউনিয়নের পরিচালক হিসেবে মূল বক্তৃতা দিয়েছিলেন।[৪] রামজিয়া আল-ইরিয়ানি ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বরে বার্লিনে অস্ত্রোপচার করা কালীন মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ নিজ দেশ ইয়েমেনের রাজধানী সানায় ফিরিয়ে আনা হয়। সেখানকার আর-রহমা কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।[২]

লেখা সম্পাদনা

কিশোর বয়স থেকেই রামজিয়া আল-ইরিয়ানি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। সেসময় থেকেই তার বিভিন্ন রচনা প্রকাশিত হতে থাকে। ১৯৭০ সালে প্রকাশিত তার উপন্যাস হায়াত আল-জশাহ (দ্য ভিক্টিম অফ গ্রিড বা লোভের শিকার) কোনো ইয়েমেনি নারীর রচিত প্রথম উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত হয়।[৫][৬] তার ছোট গল্পের প্রথম বই লাআল্লাহু ইয়াউদ (হয়তো সে ফিরে আসবে) ১৯৮১ সালে সিরিয়ার দামেস্ক থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। তারপর থেকে, তিনি আরও কয়েকটি ভলিউম ফিকশনের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি শিশুদের বই লিখেছেন। তিনি ইয়েমেনি নারী পথিকৃৎদের উপর রাইদাত ইয়েমেনিয়াত (১৯৯০) নামে একটি বইও লিখেছিলেন। আল-ইরিয়ানির ছোটগল্প আরব নারী লেখকদের একটি কাব্যগ্রন্থে ইংরেজি অনুবাদে প্রকাশিত হয়েছে।[৭]

আল-ইরিয়ানি লেখালেখি প্রধানত পুরুষতান্ত্রিক ইসলামি সমাজে লিঙ্গ সংক্রান্ত সমস্যাগুলির সমাধান করে।[৮] তিনি আরব সমাজে নারীদের শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কেও লেখেন।[৯] তার কাজের অন্যান্য বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংগ্রাম।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

 

  1. Ayhan, Veysel (২০১১)। "Turkish-Yemeni Relations: Yemen's view on Turkey"। International Middle East Peace Research Center। এপ্রিল ১০, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "Yemen Loses a Great Female Leader"National Yemen। ১৭ নভেম্বর ২০১৩। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৫ 
  3. Al-Mutawakel, A. M. A. (2005) Gender and the Writing of Yemeni Women Writers ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে Amsterdam: Dutch University. আইএসবিএন ৯০-৩৬১৯-১২২-X.
  4. Al-Sakkaf, Nadia (৮ মার্চ ২০১২)। "Prime Minister: 'Yemen Would be Better Off With a Woman Leader.'"Yemen Times। ১৪ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৫ 
  5. Arab women writers: a critical reference guide, 1873-1999, by Radwa Ashour, Ferial Jabouri Ghazoul, Hasna Reda-Mekdashi
  6. Ramziya al-Iryani (in Arabic). kataranovels.com
  7. Cohen-Mor, Dalya (2005) Arab Women Writers: An Anthology of Short Stories Albany: SUNY Press. আইএসবিএন ০৭৯১৪৬৪১৯৯. (page 186 & page 227).
  8. al-Wadhaf, Yahya Hassan (2013)(?) "A Critical Reading to a Short Story by Ramizia Al-Eryani ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে Journal of Social Studies. Vol. 20 (?) No. 3 (?) (2014?). pp 7-26. retrieved 12 May 2016
  9. al-Wadhaf, Yahya Hassan (2013)(?) op.cit. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে retrieved 12 May 2016

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা