রজার এফ. টমলিনসন (১৭ নভেম্বর, ১৯৩৩- ৭, ফেব্রুয়ারি, ২০১৪)[২] একজন ইংরেজ ভূগোলবিদ এবং আধুনিক কম্পিউটারাইজড ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থার (জিআইএস) প্রধান উদ্ভাবক ছিলেন। তিনি ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থার জনক হিসেবে স্বীকৃত।[৩]

রজার টমলিনসন
রজার টমলিনসন
জন্ম(১৯৩৩-১১-১৭)১৭ নভেম্বর ১৯৩৩
মৃত্যু৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪(2014-02-07) (বয়স ৮০)
সান মিগেল ডি অ্যালেন্ডে, মেক্সিকো
জাতীয়তাব্রিটিশ
মাতৃশিক্ষায়তননটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়, আকেডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন
পেশাভূগোলবিদ
পুরস্কারইউসিজিআইএস ফেলো,[১] অর্ডার অফ কানাডা, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির অ্যালেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল পুরস্কার, রয়াল কানাডিয়ান জিওগ্রাফিকাল সোসাইটির স্বর্ণপদক, রয়াল জিওগ্রাফিক সোসাইটির মারচিসন পুরস্কাল, নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট, আকেডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট, ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট, অন্টারিও ল্যান্ড সার্ভেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্মানসূচক সদস্য, লেথব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট, ইউআরআইএসএ জিআইএস হল অফ ফেম

জীবনী সম্পাদনা

ডঃ টমলিনসন নিউমার্কেট (ইংল্যান্ডে) এর বাসিন্দা ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার আগে তিনি ১৯৫১ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত রয়েল এয়ার ফোর্সে পাইলট ও ফ্লাইং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

সামরিক চাকরির পরে ডঃ টমলিনসন যথাক্রমে ভূগোলভূতত্ত্ব বিভাগে দুটি পৃথক স্নাতক ডিগ্রির জন্য নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং আকেডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছিলেন। তিনি ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। সেখানে তিনি কানাডার ল্যাব্রাডর অঞ্চলের হিমবাহসম্পর্কিত ভূমিরূপবিদ্যায় বিশেষীকরণ করেছিলেন। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে তার ডক্টরাল থিসিসের শিরোনাম ছিল: The application of electronic computing methods and techniques to the storage, compilation, and assessment of mapped data.

ডঃ টমলিনসন পেশাজীবনের প্রথমদিকে আকেডিয়ার সহকারী অধ্যাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি অন্টারিওর অটোয়ার স্পার্টান এয়ার সার্ভিসেসের (ম্যাকগিলে পড়াশোনা শেষে) কম্পিউটার ম্যাপিং বিভাগের পরিচালক হিসাবে কাজ করেন। তিনি কানাডার সরকারের সাথে প্রথমে পরামর্শক এবং পরে বন ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাথে আঞ্চলিক পরিকল্পনা ব্যবস্থার পরিচালক হিসাবে কাজ করেন।

১৯৬০ এর দশকে অটোয়াভিত্তিক বিমান সমীক্ষা সংস্থা, স্পার্টান এয়ার সার্ভিসেসের সাথে কাজ করার সময়কালে ডঃ টমলিনসন কম্পিউটার প্রযুক্তির সাথে ভূমি ব্যবহার ম্যাপিংয়ের সমন্বয়ের ধারণা করেছিলেন। এই ধারণা থেকেই তিনি বিশ্বের প্রথম কম্পিউটারাইজড ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা, কানাডা ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থার সূচনা, পরিকল্পনা এবং পরিচালনা করেন।

১৯৭০ এর দশক থেকে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ডঃ টমলিনসন বিভিন্ন প্রাইভেট সেক্টর, সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার জন্য ভৌগোলিক পরামর্শ এবং গবেষণায় কাজ করেছেন। মূলত তার অটোয়াভিত্তিক সংস্থা, টমলিনসন অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের মাধ্যমে তিনি ভূগোলবিদের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ায় তার সংস্থার শাখা রয়েছে।

তিনি ১২ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক ইউনিয়ন জিআইএস কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৮৮ সালে আইজিইউ গ্লোবাল ডেটাবেস প্ল্যানিং প্রকল্পের চেয়ারম্যান হিসাবে বিশ্বব্যাপী ভৌগোলিক তথ্য প্রাপ্যতার ধারণার সূচনা করেছিলেন। তিনি কানাডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ জিওগ্রাফারদেরও সভাপতি ছিলেন।

পুরস্কার এবং সম্মাননা সম্পাদনা

তিনি পেশাগত পরিষেবা দেওয়ার জন্য কানাডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ জিওগ্রাফারের দুর্লভ পুরস্কার পেয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমেরিকান জিওগ্রাফারদের অ্যাসোসিয়েশন তাকে ১৯৯৫ সালে প্রয়োগকৃত ভূগোলের জন্য জেমস আর. অ্যান্ডারসন মেডেল অফ অনার প্রদান করে। ২০০৫ সালে তিনি রবার্ট টি. অ্যাঙ্গীনব্রুগ ডিস্টিংগুইশড কেরিয়ার অ্যাওয়ার্ডের প্রথম প্রাপক হন।

ডঃ টমলিনসন রয়েল জিওগ্রাফিকাল সোসাইটির অনারারি ফেলো এবং ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থার বিকাশের জন্য মর্চিসন অ্যাওয়ার্ডের বিজয়ী ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি জিআইএসের সাথে আজীবন কাজের জন্য জিআইএস ওয়ার্ল্ড লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন। ১৯৯৭ সালে তিনি ইএসআরআই লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের প্রথম প্রাপক ছিলেন। ২০০৪ সালে, শিল্পে তার অসংখ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে, জিআইএস সার্টিফিকেশন ইনস্টিটিউট ডঃ টমলিনসনকে লাইফটাইম জিআইএস অ্যাচিভমেন্টের জন্য জিআইএসপি সার্টিফিকেট প্রদান করে। তাকে ইউরিসার জিআইএস হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়[৪] এবং আজীবন সদস্যপদ লাভ করেন। ২০১০ সালে টমলিনসন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল পদক পেয়েছিলেন (জ্যাক ড্যাঞ্জারমন্ডের সাথে)।[৫] ২০১১ সালে অন্টারিও ল্যান্ড সার্ভেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন তাকে সম্মানসূচক সদস্যপদ দেয়। ডঃ টমলিনসন জিওপ্যাটিয়াল ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যাসোসিয়েশন লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।[৬] ২০১৩ সালে টমলিনসনকে একজন ইউসিজিআইএস ফেলো হিসাবে ভূষিত করা হয়েছিল।

সম্প্রতিকালে, তাকে ইউনিভারসিটি কলেজ লন্ডনের ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়, আকেডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় এবং লেথব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেটস ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি রয়্যাল কানাডিয়ান জিওগ্রাফিকাল সোসাইটির স্বর্ণপদক লাভ করেন এবং গভর্নর জেনারেল দ্বারা "ভূগোলকে বিষয় হিসাবে পরিবর্তন করার জন্য" অর্ডার অফ কানাডায় ভূষিত হন। ২০১৩ সালে গভর্নর জেনারেল তাকে অর্ডার অফ কানাডার অফিসার হিসাবে পদোন্নতি দিয়েছিলেন।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Archived copy"। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  2. Roger Tomlinson, Geographer
  3. Greiner, Lynn (১৭ ডিসেম্বর ২০০৭)। "Putting Canada on the map: Father of digitized mapping recounts how a stroke of luck led him to develop the world's first geographic information system"The Globe and Mail 
  4. David Sampson। "Roger Tomlinson"। URISA। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১৪ 
  5. David Braun (১৩ জুলাই ২০১০)। "Nat Geo awards Alexander Graham Bell Medals to GIS pioneers"। National Geographic Society। ২৪ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০১১ 
  6. "Archived copy" (পিডিএফ)। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  7. http://www.gg.ca/document.aspx?id=15215

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা