ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা

ভৌগলিক উপাত্ত সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন

ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা-র (ইংরেজি: Geographic Information System) মাধ্যমে দৈশিক তথা ভৌগোলিক উপাত্ত সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করা হয়। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হল জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (Geographic Information System) এবং একে সংক্ষেপে জি আই এস (GIS) বলা হয় । জি আই এস হল ভূতথ্যবিজ্ঞান -এর একটা বৃহত্তর অংশ।[১]

বেসিক জিআইএস এর ধারণা

সাধারণ ভাবে ভৌগোলিক তথ্যের সংহতি, সংরক্ষণ, সম্পাদনা, বিশ্লেষণ, বণ্টন ও প্রদর্শনে ব্যবহৃত তথ্য ব্যবস্থা প্রনালীকে এই পরিভাষিক শব্দটির প্রকাশ করা যেতে পারে। জি আই এস আপ্লিকেশন-এর সাহায্যে উভ:ক্রিয় (interactive) জিজ্ঞাসা (ব্যবহারকারীকৃত অনুসন্ধান), দৈশিক তথ্যের বিশ্লষণ,মানচিত্রে উপাত্তের সম্পাদনা এবং এই সমস্ত কার্যাবলীর প্রদর্শন সম্ভব।[২][৩] ভৌগোলিক তথ্যবিজ্ঞান (Geographic information science) হল ভৌগোলিক ধারণা, ব্যবহার ও ব্যবস্থা প্রণালীর ভিত্তিগত বিজ্ঞান।[৪] জি আই এস ব্যপক অর্থে বিভিন্ন প্রযুক্তি, প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিকে নির্দেশ করে। প্রকৌশল, পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা, পরিবহন. বীমা, দূরসঞ্চার এবং ব্যবসা বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জি অই এসের ব্যবহার করা হয়।[৩] এই কারণে, জি আই এস এবং অবস্থানিক বোধবিদ্যা (location intelligence) ব্যবহার অবস্থান ভিত্তিক পরিসেবা প্রদানের অধার হতে পারে। অবস্থানকে সূচক চল গণ্য করে সম্পর্কহীন তথ্যকে GIS-এর মাধ্যমে সম্পর্কযুক্ত করা সম্ভব।পৃথিবীতে অবস্থান বা পরিসর বা স্থান-কালকে ঘটনার তারিখ/সময় দিয়ে ও x, y, z স্থানাঙ্কে যথাক্রমে দ্রাঘিমা, অক্ষাংশউচ্চতা দ্বারা প্রকাশ করা যায়।

উন্নয়নের ইতিবৃত্ত সম্পাদনা

রজার টমিলসন সর্বপ্রথম "geographic information system" এই কথাটি ব্যবহার করেন ১৯৬৮ সালে তার একটি প্রবন্ধে যার নাম ছিল "A Geographic Information System for Regional Planning”।[৫] তিনি জি আই এস এর জনক হিসাবে উপাধিত।[৬]

 
জন স্নো'র মানচিত্রের (১৮৫৫ ) এডমণ্ড উইলিয়ম গিলবার্ট'কৃত সংস্করণটি (১৯৫৮) লন্ডনের সোহো-তে ১৮৫৪ সালের দুর্ভিক্ষে কলেরা প্রাদুর্ভাবের মূল অবস্থান গুলি দেখানো হয়েছে

বহুপূর্বে, ১৮৩২ মহামারী-সংক্রান্ত-বিদ্যাতে দৈশিক বিশ্লেষণের ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায় "Rapport sur la marche et les effets du choléra dans Paris et le département de la Seine".[৭]

জি আই এস বিষয়ক কৌশল এবং প্রযুক্তি সম্পাদনা

    • gis এর কাজ

১. তথ্য আহরণ ও সংরক্ষণ করা ২.তথ্য সংরক্ষণ ও হারিয়ে গেলে পুনরুদ্ধার করা ৩. তথ্য আদান-প্রদান ৪.তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করা ৫.ফলাফল তৈরি ও উপস্থাপন করা

    • কৌশল ও প্রযুক্তি

১.নিকটতম অনুধাবন ( aerial photograph) ২. দূর অনুধাবন (satellite sensor/image) ৩.অক্ষাংশ বা স্থানবিভেদে পারস্পরিক বা অ-পারস্পরিক ও বর্ণনামূলক তথ্য সমন্বয় বা সংযোগ ঘটিয়ে অধিকতর ব্যবহার উপযোগী করা বা dbms(database management system ) ৪.cad(computer aided design) ৫.gps(global positioning system) ৬. Digital information

ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা সাহায্যে দৈশিক বিশ্লেষণ সম্পাদনা

★বনসম্পদ ব্যবস্থাপনায়(GIS): যেমন- বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার পাহাড়িয়া বনভূমি, সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনভূমি ইত্যাদি। ★জলবায়ু পরিবর্তনে(GIS): যেমন- উদ্ভিজ্জ, বায়ুমন্ডল, বৃষ্টিপাত, বাস্তুসংস্থানের মধ্যে মিথষ্ক্রিয়ার নকশা বা মডেল তৈরি। ★সামরিকক্ষেত্রে ও অপরাধ বিশ্লেষণে (GIS): যেমন- অপরাধ এলাকা চিহ্নিতকরণ, ডিজিটাল অপরাধ মানচিত্র তৈরি, যুদ্ধের কৌশন নির্ধারণ, শত্রুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, ঔষধপত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ ইত্যাদি। ★ দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রশমনেঃ যেমন- ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিতকরণ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ধারণ, ভূকম্প এলাকা চিহ্নিতকরণ ইত্যাদি।

কিছু জি আই এস সফটওয়্যার সম্পাদনা

  1. ESRI's ArcGIS
  2. QGIS
  3. gVGIS
  4. ILWIS
  5. MapWindow GIS
  6. Clark Lab's IDRISI and TerrSet

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Geographic Information Systems as an Integrating Technology: Context, Concepts, and Definitions"। Kenneth E. Foote and Margaret Lynch, The Geographer's Craft Project, Department of Geography, The University of Colorado at Boulder। ৮ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৫ 
  2. Clarke, K. C., 1986. Advances in geographic information systems, computers, environment and urban systems, Vol. 10, pp. 175–184.
  3. Maliene V, Grigonis V, Palevičius V, Griffiths S (২০১১)। "Geographic information system: Old principles with new capabilities"Urban Design International। পৃষ্ঠা 1–6। ডিওআই:10.1057/udi.2010.25 
  4. Goodchild, Michael F (২০১০)। "Twenty years of progress: GIScience in 2010"। Journal of Spatial Information Scienceডিওআই:10.5311/JOSIS.2010.1.2 
  5. "The 50th Anniversary of GIS"। ESRI। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৩ 
  6. "Roger Tomlinson"। UCGIS। ২০১৪-০২-২১। ২০১৫-১২-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-১৬ 
  7. "Rapport sur la marche et les effets du choléra dans Paris et le département de la Seine. Année 1832"। Gallica। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১২