ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এফ.সি.- আর্সেনাল এফ.সি. কলহ (১৯৯০)

১৯৯০ সালের ২০শে অক্টোবর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব তাদের ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফুটবল লীগের ১৯৯০-৯১ মৌসুমের প্রথম বিভাগের একটি খেলায় আর্সেনাল ফুটবল ক্লাবের মুখোমুখি হয়। আর্সেনাল ম্যাচটি এক গোলের ব্যাবধানে জিতলেও দুই দলের মধ্যে তুমুল কলহের কারণেই খেলাটি ইতিহাসে বেশি স্মরনীয় হয়ে আছে। ফলাফল স্বরুপ ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা দ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফ.এ.) উভয় দলেরই পয়েন্ট কেটে নিয়ে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এফ.সি. বনাম আর্সেনাল এফ.সি.
প্রতিযোগিতা১৯৯০-৯১ প্রথম বিভাগ ফুটবল ডিভিশন
তারিখ২০শে অক্টোবর ১৯৯০
রেফারিকেইথ হ্যাকেট (সাউথ ইয়র্কশায়ার)
দর্শক সংখ্যা৪৭,২৩২
আবহাওয়াবেশিরভাগ মেঘলা[১]

প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে আর্সেনালের সুইডিশ মিডফিল্ডার আন্দ্রেস লিম্পার এর পা থেকে ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে। দ্বিতীয়ার্ধে লিম্পার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডার ডেনিস আরউইনের কাছ থেকে বল দখলের জন্য চেষ্টা চালান। সেসময় লিম্পারের সতীর্থ নাইজেল উন্টারবার্ন ডেনিস আরউইনকে একটি ট্যাকেল করেন যা থেকে পরবর্তীতে দুদলের খেলোয়াড়দের মাঝে একটি দাঙ্গার সুত্রপাত হয়। উভয় দলের সকল খেলোয়াড় ই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়েন। এই হট্টোগোল বিশ সেকেন্ডের ও অধিক স্থায়ী হয়েছিল। কিন্তু রেফারি কেইথ হ্যাকেট শুধুমাত্র লিম্পার ও উইন্টারবার্ন কে হলুদ কার্ড দেখান।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং আর্সেনাল তাদের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে জরিমানা ধার্যের মাধ্যমে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আর্সেনাল তাদের ম্যানেজার জর্জ গ্রাহামকেও এজন্য দণ্ডিত করে। খেলাটিকে কলঙ্কিত করায় খেলার এক মাস পরে দ্য এফ.এ. উভয় দলকে ৫০,০০০ পাউন্ড জরিমানা করে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর এক পয়েন্ট কর্তন করা হলেও ১৯৮৯ সালে নরউইচ সিটির বিপক্ষে ম্যাচে একইরকম একটি দাঙ্গা বাঁধানোয় আর্সেনালের দুই পয়েন্ট কেটে নেয়া হয়। যদিও এই পয়েন্ট কর্তন আর্সেনালের শিরোপা জয়ে কোনো বাঁধার সৃষ্টি করতে পারেনি।[২] আর্সেনাল মাত্র এক ম্যাচে পরাজিত হয়ে লীগ শিরোপা জিতেছিলো।

২০১৩ সাল পর্যন্ত ইংলিশ লীগ ফুটবল ইতিহাসে এটিই একমাত্র ঘটনা যেখানে কোনো দলের খেলোয়াড়দের অসদাচরণের জন্য দলের পয়েন্ট ছাঁটাই করা হয়। এই ম্যাচটিকে উভয় দলের চির প্রতিদন্দিতা দ্বারা প্ররোচিত হিসেবে মনে করা হয়। উভয় দলই ১৯৯০ এবং ২০০০-এর দশকে শিরোপার জন্য একে অন্যের বিপক্ষে লড়াই করতো।  

পটভূমি

সম্পাদনা
 
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এই ম্যাচের পুর্বে দুদলের সাক্ষাত কখনো কখনো ঘটনাবহুল মোকাবেলায় পরিণত হত।[৩] ১৯৮৭ সালের জানুয়ারিতে আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর ম্যানেজার হিসেবে স্যার এলেক্স ফার্গুসনের প্রথম মোকাবেলাতেই তার দল আর্সেনালের টানা ২২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়।[৪] ওল্ড ট্রাফোর্ডের ঐ ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আর্সেনালকে ২-০ গোলে পরাজিত করে।[৩] নরম্যান হোয়াইটসাইডকে ফাউল করার অপরাধে আর্সেনালের ড্যাভিড রোক্যাসেলকে মাঠ ছাড়তে হয়। যেটি পরবর্তীতে তার সতীর্থদের সাথে ইউনাইটেডের কোচিং স্টাফদের মধ্যে দ্বন্দের সৃষ্টি করে।[৩]

পরের মৌসুমে হাইবারিতে এফ.এ. কাপের পঞ্চম রাউন্ডের খেলায় উভয় দল আবার মুখোমুখি হয়। খেলা শেষের দুই মিনিট আগে আর্সেনাল ২-১ গোলে এগিয়ে থাকলে সেই মুহুর্তে ইউনাইটেড একটি পেনাল্টি পায়।[৫] পেনাল্টিতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড গোল দিতে পারলে অবশ্য ফিরতি ম্যাচ খেলতে হতো দুদলকে। পেনাল্টিটি ব্রায়ান ম্যাকক্লেয়ার গোলবারের উপরে দিয়ে মারেন। নাইজেল উইন্টাবার্ন এজন্য ম্যাকক্লেয়ারকে ব্যঙ্গ করেন। এর আগে নরউইচ সিটির বিপক্ষে ১৯৮৯ এর নভেম্বরে ১৯ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে হাঙ্গামা বাঁধানোয় আর্সেনালকে ২০,০০০ পাউন্ড জরিমানা করা হয়।[৬][৭]

আগের ম্যাচে দুই দল সম্পূর্ণ ভিন্ন ফলাফল নিয়ে সেই ম্যাচ খেলতে নামে। এর আগের ম্যাচে ২৯ সেপ্টেম্বর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড নটিংহ্যাম ফরেস্টের কাছে ঘরের মাঠে হেরে যায়।[৮] ফরেস্টের হয়ে স্টুয়ার্ট পিয়ার্স অষ্টম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন। এটি ছিল সেবারের মৌসুমে লীগে তাদের তৃতীয় হার এবং ঘরের মাঠে সাত মাসে প্রথম পরাজয়।[৯] অন্যদিকে আর্সেনাল তাদের আগের ম্যাচে নরউইচ সিটিকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল।[১০] ইউনাইটেড এর চেয়ে পাঁচ পয়েন্ট এগিয়ে থাকা আর্সেনাল ১৮ পয়েন্ট নিয়ে লীগ টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল।[১১] ম্যানচেস্টার ইউনাটেডের অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে দলের শিরোপা জেতার সম্ভাবনা নিয়ে ইউনাইটেড বস ফার্গুসন বলেন, বর্তমানে শিরোপা জয়ে আশাবাদী ছয়টি ক্লাব লীগ লিডার লিভারপুলের চেয়ে পিছিয়ে আছে। অন্য দল গুলোর মত আমাদের ও সুযোগ পেলে তার সদব্যবহার করা উচিত।[১২]

মাঝমাঠে ইউনাইটেড ভিভ এন্ডারসন এর বদলে পল ইনচকে মূল একাদশে রাখে। মাঝমাঠে ঝড় তোলা ডেনিস আরউইনকে রাইট ব্যাক পজিশনে ফিরিয়ে আনা হয়। দলের নিয়মিত অধিনায়ক ব্রায়ান রবসন ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে ১৯৯০ ফিফা বিশ্বকাপে খেলার(( সময় পাওয়া চোট থেকে আরোগ্য লাভের পথে ছিলেন। তাই নেইল ওয়েব সেই ম্যাচে ইউনাইটেডের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। আর্সেনালের আন্দেস লিম্পার ১০ অক্টোবর পশ্চিম জার্মানীর বিপক্ষের ম্যাচে চোটের কারণে অংশ নিতে না পারলেও চোটমুক্ত হয়ে ইউনাইটেডের বিপক্ষে মাঠে নামেন। মিডফিল্ডার মাইকেল থমাস ও খেলার জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হয়েছিলেন। 

সার-সংক্ষেপ

সম্পাদনা

প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে ইউনাইটেড গোলের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরী করে। কিন্তু স্টিভ ব্রুস এর হেড তারই সতীর্থ ম্যাকক্লেয়ার এর দ্বারা অসাবধানতাবশত আর্সেনালের গোলমুখে আটকে যায়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর মিডফিল্ডে দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আর্সেনাল ম্যানেজার জর্জ গ্রাহাম মিডফিল্ডার লিম্পার ও রোক্যাসেল কে আরো আক্রমণাত্তক অবস্থানে খেলার নির্দেশ দেন এবং আক্রমণভাগের খেলোয়াড় পল মার্সনকে সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলান। প্রথমার্ধ শেষ হবার দুই মিনিট পুর্বে লিম্পারের গোলে আর্সেনাল এগিয়ে যায়। ডানদিক থেকে করা পল ডেভিসের করা কর্নারে পা ছুঁইয়ে দিতে লিম্পার ইউনাইটেড এর পেনাল্টি বক্সে ঢুকে পড়েন। মাইক ফিলান লিম্পারের এগিয়ে যাওয়াকে অহেতুক মনে করে তাকে আর থামানোর চেষ্টা করেননি। ডেভিসের বাড়িয়ে দেয়া বলকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বা পায়ের শটে বল জালে জড়ান। গোলকিপার লেস সিলেয় বলটি থামানোর চেষ্টা করলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। বল গোল লাইন অতিক্রম করায় রেফারি কেইথ হ্যাকেট আর্সেনালের গোল দিয়ে দেন। ভিডিও তে স্পষ্টতই গোল লাইন অতিক্রমের ছবি দেখায় ম্যানচেস্টার কোচ ফার্গুসন এ নিয়ে কোন তর্ক না করে রেফারির সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মন্তব্য করেন।   

দ্বিতীয়ার্ধে আর্সেনাল তাদের লিড দ্বিগুণ করার সুযোগ হাতছাড়া করে। লিম্পারের ডিফেন্সভেদী পাসে ড্যাভিড রোক্যাসেল বল নিয়ে এগিয়ে গেলেও সিলেয় এর নৈপুন্যে আর্সেনালকে গোলবঞ্চিত থাকতে হয়। ম্যাচের ৬৬তম মিনিটে ইউনাইটেড মার্ক রবিন্স কে মাঠে নামায়। লেখক ও সাংবাদিক ব্রায়ান গ্লানভিলে একে "হতাশার বহিঃপ্রকাশ" হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। এটি তাদের আক্রমণের ধার বাড়ালেও আর্সেনালকে ইউনাইটেডের দুর্বল ডিফেন্স এর সুযোগ নিয়ে পালটা আক্রমণের পথ খুলে দিয়েছিল।

ম্যাচের মেয়াদ যখন এক ঘণ্টার কাছাকাছি তখনি ঝামেলা শুরু হয়। লিম্পারের সাথে বল দখলের লড়াই করা আরউইন কে ট্যাকেল করে বসেন আর্সেনালের উইন্টারবার্ন। ফলস্বরুপ ইউনাইটেড এর ম্যাক্লেয়ার ও আরউইন উইন্টারবার্ন ও লিম্প্রারকে আক্রমণ করেন। পল ইনচকে বিজ্ঞাপনী বোর্ডগুলোর দিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। ইউনাইটেডের সকল খেলোয়াড় আর্সেনালের সকল আউটফিল্ডারের সাথে দাঙ্গায় লিপ্ত হয়ে যান। যদিও অনেকেই পরিস্থিতি শীতল করার চেষ্টা করেন। আর্সেনাল গলকিপার ডেভিড সিম্যান শুধুমাত্র এই সংঘর্ষে লিপ্ত হননি। ২০ সেকেন্ডের ও অধিক সময় ধরে হট্টগোল চলতে থাকে।পরিস্থিতি শান্ত হলে রেফারি লিম্পার ও উইন্টারবার্নকে কার্ড দেখালেও ইউনাইটেডের খেলোয়াড়রা কোনোপ্রকার শাস্তি পাননি। দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদক স্টিফেন বিয়েরলি পরবর্তীতে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য টনি অ্যাডামসের প্রশংসা করেন।

GK 1   Les Sealey
RB 2   Denis Irwin   79'
LB 3   Clayton Blackmore
CB 4   Steve Bruce
CM 5   Mike Phelan
CB 6   Gary Pallister
RM 7   Neil Webb (c)
CM 8   Paul Ince
CF 9   Brian McClair
CF 10   Mark Hughes
LM 11   Lee Sharpe   66'
Substitutes:
FW 12   Mark Robins   66'
DF 14   Lee Martin   79'
Manager:
  Alex Ferguson
 
GK 1   David Seaman
RB 2   Lee Dixon
LB 3   Nigel Winterburn   59'
CM 4   Michael Thomas   55'
CB 5   Steve Bould
CB 6   Tony Adams (c)
RM 7   David Rocastle   77'
CM 8   Paul Davis
CF 9   Alan Smith
CF 10   Paul Merson
LM 11   Anders Limpar   59'
Substitutes:
MF 12   Perry Groves   77'
DF 14   David O'Leary
Manager:
  George Graham
  • Linesmen:
    • D Orrell (Greater Manchester)
    • RR Rawson (South Yorkshire)
  • Standby official: R Byrne (Greater Manchester)

ম্যাচের নিয়ম

  • অতিরিক্ত সময় বা পেনাল্টি ছাড়া ৯০ মিনিটের ম্যাচ।
  • জয়ী দলের জন্য তিন পয়েন্ট।
  • ড্র হলে উভয় দল এক পয়েন্ট করে পাবে
  • দুজন বদলী খেলোয়াড় থাকতে পারব।
  • সর্বোচ্চ দুজনকে বদলী করা যাবে।


পাদটীকা

  • পতাকার প্রতিনিধিদের জাতিয়তা নির্দেশ করে।

পরিসংখ্যান

সম্পাদনা
খাত
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
আর্সেনাল
গোল


বলদখল অর্জন
৪৩% ৪৬%
বলদখল হারানো
৯১% ৮২%
লক্ষ্যে শট
১১

লক্ষ্যের বাইরে শট


অফসাইড


ফ্রি-কিক
১৪
১৮
কর্নার-কিক


হলুদ কার্ড


লাল কার্ড


ম্যাচ পরবর্তী

সম্পাদনা

দ্য টাইমসের স্টুয়া্ররট জোনস তার ম্যাচ রিপোর্টের শেষে লিখেছিলেন খেলা থেকে কালিমা মোচনের জন্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও আর্সেনালকে দুঃব্যবহারের জন্য শাস্তি দেয়া ছাড়া দ্য ফুটবল আস্যোসিয়েশনের জন্য কোন পথ খোলা নেই।একটি অভ্যন্তরীন জিজ্ঞাসাবাদের আয়োজন করে ইউনাইটেড দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল।এলেক্স ফার্গুসন অনশীলনে তার খেলোয়াড়দেরকে খেলটি পুনরায় দেখতে বাদ্য করেছিলেন।পরবর্তীতে ক্লাবের পক্ষ থেকে আরউইন,ম্যাকক্লেয়ার ও ইনচকে জরিমানা করা হয় বলে দাবি করা হয়।আর্সেনাল ও বিবাদে জড়িয়ে পড়া লিম্পার,উইন্টারবার্ন,ডেভিস ও রোক্যাসেলকে জরিমানা করে ইউনাইটেডের পথ অনুসরণ করে।অন্যদিকে ম্যানেজার জর্জ গ্রাহামকে এই ঘটনার জন্য ৯০,০০০ পাউন্ডের জরিমানা গুনতে হয়।আর্সেনালের চেয়ারম্যান পিটার হিল-উড তার সিদ্ধান্ত তার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন,"দুবছরের মধ্যে একইরকম দুটি ঘটনা ঘটা মোটেও কাম্য নয়।আর্সেনালকে কলঙ্কিত করায় আমি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।" 

ইউরোপিয়ান ফুটবলের কর্তা ইউয়েফার চাপের শিকার হয়ে এফ.এ. সেদিনের ম্যাচ রেফারি হ্যাকেটসহ ঐ ম্যাচের অন্যান্য অফিশিয়ালদের কাছে দাঙ্গা সম্পর্কে জানতে চায়।ম্যাচের তিনদিন পরে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দলকে শাস্তি দেয়া হয়।পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি হট্টোগোলের তিনটি পৃথক ভিডিও দেখেন ও ক্লাব প্রতিনিধিদের আত্মপক্ষ সমর্থনে মতামত জানতে চান। ১৯৯০ এর নভেম্বরে আর্সেনাল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কে ৫০,০০০ পাউন্ড করে জরিমানা করার পাশাপাশি উভয় দলের লীগ পয়েন্ট কেটে নেয়া হয়।আর্সেনালের দুই পয়েন্ট কর্তন করা হলেও ইউনাইটেডের পয়েন্ট থেকে এক পয়েন্ট কেটে নেয়া হয়।

পয়েন্ত কর্তনের সময় আর্সেনাল লিগ লিডার লিভারপুলের থেকে আট পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে ও শহর প্রতিদ্বন্দ্বী টটেনহ্যামের থেকে এগিয়ে থেকে টেবিলে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল।ও'লিরে এ সম্পর্কে মন্তব্য করে যেয়ে বলেন,"আজ রাতে লিভারপুলে উল্লাস হবে কারণ এই পয়েন্ট কর্তন আমাদের শিরপা জয় অনেক কঠিন করে দিলো।তবে তার সতীর্থ লিম্পার আশাবাদী ছিলেন।তিনি বলেন,"এটা খুবই কঠোর ছিল।লিভারপুলকে টপকানো খুব কঠিন হয়ে গেলেও অসম্ভব নয়।''

শেষ পর্যন্ত পুরো মৌসুমে মাত্র এক ম্যাচ হেরে রানার আপ লিভারপুলের চেয়ে সাত পয়েন্ট এগিয়ে থেকে আর্সেনাল প্রথম বিভাগের শিরোপা নিজেদের করে নেয়।হেইসেল স্টেডিয়াম বিপর্যয়ের ঘটনায় দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরে প্রথম দল হিসেবে আর্সেনাল পুনরায় ইউরোপিয়ান কাপে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে।ষষ্ঠ অবস্থানে লীগ শেষ করা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও একদম খালি হাতে ফিরেনি।তারা ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপের শিরোপা জিতে মৌসুম শেষ করে। 

দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের এমা ব্যারো এই ম্যাচটিকে ১৯৯০ ও ২০০০ দশকে উভয় দলের চির প্রতিদ্বন্দ্বীতা দ্বারা প্ররোচিত হিসেবে মনে করা হয়।পরবর্তীতে এই হট্টগোল সম্পর্কে কথা বলতে যেয়ে উইন্টারবার্ন স্বীকার করেন,"এই কলহের কারণে দুদলের মধ্যে বিবাদ অনেক বেড়ে গিয়েছিল এবং এই দুঃসম্পর্ক অনেকদিন স্থায়ী হয়েছিল।কিন্তু আমি পেশাদারিত্ব থেকে জেতার জন্য মরিয়া ছিলাম।এটি কি আমাকে অনুতপ্ত করে?বিন্দুমাত্র ও না।এটি দুই ক্লাবের ইতিহাসেরই একটি ঘটনা যা অনেকদিন ধরে ঘটে আসছে।" 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Weather"The Times। London। ২০ অক্টোবর ১৯৯০। পৃষ্ঠা 26। 
  2. Gibson, Colin; Harris, Harry (১৩ নভেম্বর ১৯৯০)। "The £5m penalty"। Daily Mirror। London। পৃষ্ঠা 30–31। But the FA decided that Arsenal had not learned the lesson of a year ago when they were fined £20,000 and Norwich £50,000 for a player brawl at Highbury. 
  3. Lawrence, Amy (২৬ এপ্রিল ২০০৯)। "Bad blood is simmering again as United and Arsenal prepare to lock horns"The Observer। London। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  4. White, Clive (২৬ জানুয়ারি ১৯৮৭)। "Referee's failure to curb Whiteside leaves Old Trafford game in ruins"The Times। London। পৃষ্ঠা 27। 
  5. Jones, Stuart (২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮)। "Cup heavyweights prepare to meet in two outstanding ties"। The Times। London। পৃষ্ঠা 42। 
  6. Murray, Scott (১৯ নভেম্বর ২০১১)। "Norwich City v Arsenal – as it happened"theguardian.com। Guardian News and Media। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  7. Wilson, Paul (২১ অক্টোবর ১৯৯০)। "Arsenal in bother after pitch battle"। The Observer। London। পৃষ্ঠা 28। 
  8. Ball, Peter (১ অক্টোবর ১৯৯০)। "Pearce pounces to unsettle United's Pecsi preparations"The Times। London। পৃষ্ঠা 36। 
  9. United's last defeat at Old Trafford came against Liverpool on 18 March. See
  10. Signy, Dennis (৮ অক্টোবর ১৯৯০)। "Dour Arsenal lack the killer instinct"The Times। London। পৃষ্ঠা 38। 
  11. "English Division One table, 07-10-1990"statto.com। Statto Organisation। ২০১৪-০৩-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৪ 
  12. White, Clive (২০ অক্টোবর ১৯৯০)। "Ferguson trying to catch the chasers"The Times। London। পৃষ্ঠা 29। 

টেমপ্লেট:Arsenal F.C. matches