মৌমাছি
এই নিবন্ধটি ইংরেজি উইকিপিডিয়ার সংশ্লিষ্ট নিবন্ধ অনুবাদ করে সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। (আগস্ট ২০২৪) অনুবাদ করার আগে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশাবলী পড়ার জন্য [দেখান] ক্লিক করুন।
|
মৌমাছি বা মধুমক্ষিকা বা মধুকর (ইংরেজি: Bee) বোলতা এবং পিঁপড়ের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত মধু সংগ্রহকারী পতঙ্গবিশেষ। মধু ও মোম উৎপাদন এবং ফুলের পরাগায়ণের জন্য প্রসিদ্ধ।[১] পৃথিবীতে ৯টি স্বীকৃত গোত্রের অধীনে প্রায় কুড়ি হাজার মৌমাছি প্রজাতি আছে,[২] যদিও এর বেশিরভাগেরই কোন বর্ণনা নেই এবং এর প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। আন্টার্কটিকা ব্যতীত পৃথিবীর সকল মহাদেশে যেখানেই পতঙ্গ-পরাগায়িত সপুষ্পক উদ্ভিদ আছে, সেখানেই মৌমাছি আছে। ভারতে সচরাচর চার প্রকার মৌমাছি দেখা যায় তার বৈজ্ঞানিক নাম Apis indica (এপিস ইন্ডিকা), Apis melliferra (এপিস মেলিফেরা), Apis dorsata (এপিস ডরসাটা) , Apis Florida (এপিস ফ্লোরিডা)
মৌমাছি সময়গত পরিসীমা: Early Cretaceous - Recent, ১০–০কোটি | |
---|---|
পুষ্পরেণু সংগ্রহরত মধুমক্ষিকা (Apis mellifera) | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Arthropoda |
শ্রেণী: | Insecta |
বর্গ: | Hymenoptera |
উপবর্গ: | Apocrita |
মহাপরিবার: | Apoidea |
শ্রেণীবিহীন: | Anthophila |
Families | |
Andrenidae | |
প্রতিশব্দ | |
Apiformes |
বির্বতন
সম্পাদনাCrabronidae পরিবারের বোলতারা হল মৌমাছির পূর্বপুরুষ, যারা ছিল অন্য পতঙ্গ শিকারী। পতঙ্গ শিকার থেকে পরাগে আসার কারণ সম্ভবত যে পতঙ্গগুলো শিকার করা হত সেগুলো ফুলে ফুলে ঘুরত এবং সেগুলো পুষ্পরেনু দ্বারা আংশিক আচ্ছাদিত থাকত। সেগুলোই বোলতার লার্ভাকে খাওয়ানো হত। একই রকম বিবর্তন সংঘঠিত হয়েছিল vespoid বোলতার ক্ষেত্রে, যেখানে পরাগের বোলতারা এসেছিল তাদের শিকারী পূর্বপুরুষদের থেকে। ছাপ থেকে পাওয়া নয় এমন ফসিল, এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে নিউ জার্সির এম্বারে , এটি ক্রেটাসিয়াস যুগের ফসিল এবং ফসিলটি হল corbiculate bee মৌমাছির।[৩]
শারীরিক গঠন
সম্পাদনামৌমাছির দেহ ত্রিখণ্ডিত, এদের দেহে মস্তক, বক্ষ এবং উদার থাকে। এদের দুই জোড়া ডানা রয়েছে। এদের দেহের মাপ ১-১.৫ সেন্টিমিটার(প্রায় ½ ইঞ্চি থেকে ¾ ইঞ্চি)
মৌমাছিরা ঘন্টায় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার বেগে উড়তে পারে। এদের দুই পাশে দুটি করে মোট চারটি ডানা থাকে। সেকেন্ডে ২৪০ বার ডানা ঝাপটায় এরা। মৌমাছি ক্ষুধার্ত থাকলে দিনে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে। তবে সাধারণত এরা চাকের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে।[৪]
জীবন প্রণালী
সম্পাদনাপ্রত্যেকটি মৌচাকে মৌমাছিরা বসতিবদ্ধ হয়ে একটি বড় পরিবার বা সমাজ গড়ে বাস করে ৷ আকার ও কাজের ভিত্তিতে মৌমাছিরা তিন সম্প্রদায়ে বিভক্ত:
- রানি মৌমাছি যা একমাত্র উর্বর মৌমাছি,ডিম পাড়তে সক্ষম
- ড্রোন বা পুরুষ মৌমাছি
- কর্মী মৌমাছি বা বন্ধ্যা মৌমাছি
বুদ্ধিমত্তা
সম্পাদনামৌমাছির চাকের গঠন ষড়ভুজাকার হওয়ায় গবেষকেরা ভাবতেন, মৌমাছি বুঝি জ্যামিতি জানে৷ বিস্ময়কর ভাবে গবেষণা করে দেখা গেছে মৌমাছিরা যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করতে পারে৷ [৫]
প্রচলিত নামসমূহ
সম্পাদনামৌমাছি , মধু মাছি, মধু মক্ষিকা
বিভিন্ন প্রজাতি
সম্পাদনাপৃথিবীতে মৌমাছির প্রায় বিশ হাজার প্রজাতি আছে। ভারতে বেশ কয়েক প্রজাতির মৌমাছি দেখা যায়। তন্মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপ:
- রকি বা পাহাড়ি মৌমাছি (Apis dorsata): এরা ভালো মধু সংগ্রাহক এবং এদের প্রতি উপনিবেশ থেকে গড়ে ৫০-৮০ কেজি ফলন পাওয়া যায়৷
- লিটল বী বা ক্ষুদে মৌমাছি : (Apis florata): এরা খুব কম মধু উপন্ন করে এবং প্রতি উপনিবেশ থেকে প্রায় ২০০-৯০০ গ্রাম মধু পাওয়া যায়৷
- ইণ্ডিয়ান বী বা ভারতীয় মৌমাছি (Apis indica): এরা বছরে প্রতি উপনিবেশ থেকে গড়ে ৬-৮ কেজি মধু দেয়৷
- ইউরোপিয়ান বী বা ইউরোপিয় মৌমাছি [ইতালীয় মৌমাছি] (Apis mellifera): প্রতি উপনিবেশ থেকে গড়ে ২৫-৪০ কেজি মধু পাওয়া যায়৷
এগুলি ছাড়াও কেরলে আর একটি প্রজাতি পাওয়া যায় যারা "হুলবিহীন মৌমাছি" নামে পরিচিত৷ এরা আদৌ হুলবিহীন নয়, প্রকৃতপক্ষে এদের হুল পূর্ণ বিকশিত হয় না৷ তবে এরা খুব ভালো পরাগসংযোজক৷ এরা বছরে ৩০০-৪০০ গ্রাম মধু উৎপাদন করে৷[৬]
উপযোগিতা
সম্পাদনামধু
সম্পাদনাপ্রস্ফুটিত ফুলের মকরন্দ অথবা ক্ষরণ কিংবা ফুল ব্যতীত গাছের অপর কোন জীবিত অংশ থেকে মৌমাছিদের দ্বারা সংগৃহীত, রুপান্তরিত অথবা নিজেদের ক্ষরিত পদার্থের মিশ্রিত সঞ্চিত অথবা পরিণত হবার জন্য মৌচাকে মজুত করা তরল, সান্দ্র অথবা কেলাসিত পদার্থ হল মধু।
মৌচাক
সম্পাদনামৌচাক হলো মৌমাছির আবাসস্থল। এটি তৈরী হয় মোম জাতীয় পদার্থ দিয়ে। মৌচাকে ক্ষদ্র ক্ষুদ্র ষড়ভূজ প্রকোষ্ঠ থাকে। মৌমাছি এসব প্রকোষ্ঠে মধু সঞ্চয় করে। এছাড়া ফাঁকা প্রকোষ্ঠে মৌমাছি ডিম পাড়ে, লার্ভা ও পিউপা সংরক্ষণ করে। মৌমাছি নিজেই দেহাভ্যন্তরে মোম তৈরী করে। এই মোম প্রকৃতপক্ষে ফ্যাটি এসিডের ইস্টার। এর রাসায়নিক সংকেত হলো C15H31COOC30H61.[৭]।
‘শ্রমিক মৌমাছির’ দেহে আটটি ক্ষুদ্র গ্র্যাণ্ড থেকে মোমশ্বল্ক নি:সৃত হয়। নি:সরণের সময় মোমশ্বল্ক থাকে স্বচ্ছ যা কালক্রমে সাদা ও পরে ঈষদচ্ছ বর্ণ ধারণ করে। সহস্রাধিক মোমশ্বল্ক থেকে এক গ্রাম মোম পাওয়া সম্ভব।
মৌমাছির বিষ
সম্পাদনামৌমাছির হুল ফুটানো বিষ খুবই যন্ত্রণাদায়ক। কিন্তু মৌমাছির হুল থেকে সংগৃহীত বিষ রোগ নিরাময়ের উপাদান হিসাবে কাজ করতে পারে বলে গবেষকরা দাবী করেছেন। নিউজিল্যান্ডের নেলসন হানি এন্ড মার্কেটিং নামীয় একটি কোম্পানি জানিয়েছে, গেঁটে বাতজনিত ব্যথা নিরাময়ে প্রদাহ নিরোধক হিসাবে কাজ করে মৌমাছির বিষ। তাদের মতে, মৌমাছির বিষ প্রয়োগে বাতের চিকিৎসা নতুন ধারণা নয়। কোন কোন ক্লিনিকে মৌমাছির হুল ফুটিয়ে বাতের চিকিৎসা করা হয়। যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ডস এজেন্সি জানিয়েছে, আগামী মাসে নিউজিল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানিটির আবেদনের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। নেলসন হানি এন্ড মার্কেটিং মৌমাছির বিষ বাজারজাতকরণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে অনুমোদন চেয়েছে।[৮] মৌমাছির বিষে সাধারণত থাকে মিথানয়িক এসিড বা ফর্মিক এসিড (HCOOH)।
পরাগায়ণ
সম্পাদনাফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ানোর সময় মৌমাছিরা তাদের পা এবং বুকের লোমের ফুলের অসংখ্য পরাগরেণু বয়ে বেড়ায়। এক ফুলের পরাগরেণু অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে পড়লে পরাগায়ণ ঘটে, যার ফলশ্রুতিতে উৎপন্ন হয় ফল। এভাবে মৌমাছিরা পরাগায়ণের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে ফল ও ফসলের উৎপাদন বাড়ায়।
মৌমাছির গঠনতন্ত্র
সম্পাদনা-
মৌ সংগ্রহ করে চাকে ফিরছে একটি মৌমাছি
-
স্ত্রী মৌমাছির দেহ
গ্যালারি
সম্পাদনা-
Bumble bee and honey bee
-
European honey bee on a Sphaeralcea flower. Mesa, Az
-
European honey bee in a Sphaeralcea flower. Mesa, Az
-
Bumblebee, Bombus sp. startles Agapostemon virescens. Madison, Wi
-
European honey bee collecting pollen from a rose.
-
European honey bee collecting nectar from small flowers. McKinney, Texas.
-
European honey bee on Apple blossom
-
Honey bee approaching a milk thistle flower
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "বাংলাপিডিয়া মৌমাছি নিবন্ধ"। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০০৯।
- ↑ Danforth, B.N., Sipes, S., Fang, J., Brady, S.G. (2006) The history of early bee diversification based on five genes plus morphology. Proceedings of the National Academy of Sciences 103: 15118-15123.
- ↑ Cardinal, Sophie; Danforth, Bryan N. (২০১১)। "The Antiquity and Evolutionary History of Social Behavior in Bees"। PLoS ONE। 6 (6): e21086। ডিওআই:10.1371/journal.pone.0021086। পিএমআইডি 21695157। পিএমসি 3113908 ।
- ↑ "বিজ্ঞানচিন্তা: মৌমাছি নিয়ে ১০টি মজার তথ্য"। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ কিশোর আলো (জুলাই ২০১৯)। অঙ্ক কষতে পারে মৌমাছি। পৃষ্ঠা ১৭ (শেষ প্যারা)।সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১৯
- ↑ মৌমাছি পালন(এপিকালচার)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Umney, Nick; Shayne Rivers (২০০৩)। Conservation of Furniture। Butterworth-Heinemann। পৃষ্ঠা 164।
- ↑ তথ্যতীর্থ আমাদের কিশোরগঞ্জ
আরও দেখুন
সম্পাদনাআরও পড়ুন
সম্পাদনা- O'Toole, Christopher, and Raw, Anthony. (1991). Bees of the World. New York: Facts on File.
- Michener, Charles D. (2007). The Bees of the World, second edition. Baltimore: Johns Hopkins.
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- All Living Things Images, identification guides, and maps of bees
- Bee Genera of the World
- Carl Hayden Bee Research Center ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ নভেম্বর ২০০৫ তারিখে
- Rescuing Australian stingless bees
- The first bee of spring ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ জুন ২০০৯ তারিখে
- Solitary Bees & Things Solitary Bees in British gardens
- Scientists identify the oldest known bee, a 100 million-year-old specimen preserved in amber
- Search for North American species at Bugguide here
- The Bumblebee Conservation Trust - Learn about the UK's bumblebees, recent declines and how you can help
- For Hymenoptera: Bees and other related Insects[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] Natural History of Bees, Wasps, and Insects
- Bee images on Morphbank, biological image database ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে
- Dickinson Lab
- Video: Life Cycle of a Honey Bee
- Video: Orchid Bees
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |