মুরুদেশ্বর
মুরুদেশ্বর,দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের উত্তর কন্নড় জেলার ভটকল তহশিলের একটি অতিপরিচিত শহর৷ মুরুদেশ্বর হিন্দুদেবতা শিবের অপর নাম৷ আরব সাগরের তীরে অবস্থিত শহরটি বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম শিব মূর্তি ও মুরুদেশ্বর মন্দিরের জন্য বিখ্যাত৷ মুরুদেশ্বর রেলওয়ে স্টেশনটি ম্যাঙ্গালোর থেকে মুম্বাই অবধি বিস্তৃৃত কোঙ্কণ রেলপথের অন্তর্গত৷
মুরুদেশ্বর ಮುರುಡೇಶ್ವರ (মুরুদেশ্ভ়র) | |
---|---|
শহর | |
কর্ণাটকে মুরুদেশ্বরের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ১৪°৫′৩৭.০২″ উত্তর ৭৪°২৯′১.৭৭″ পূর্ব / ১৪.০৯৩৬১৬৭° উত্তর ৭৪.৪৮৩৮২৫০° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | India |
রাজ্য | কর্ণাটক |
জেলা | উত্তর কন্নড় জেলা |
ভাষা | |
• সরকারী | কন্নড় |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৫৮১৩৫০ |
টেলিফোন কোড | ০৮৩৮৫ |
যানবাহন নিবন্ধন | কে.এ.-৪৭(KA-47) |
নামকরণ ও পৌরাণিক কথা
সম্পাদনামুরুদেশ্বর নামটি রামায়ণের সমসাময়িক বলে অনুমান করা হয়৷
হিন্দু দেব-দেবীরা আত্মালিঙ্গ প্রকারের দিব্যপ্রতীকের পূজার্চনার মাধ্যমে অমরত্ব লাভ করতেন৷ তেমনই লঙ্কার রাজা রাবণ অমরত্বলাভের ইচ্ছায় শিবের আত্মার প্রতীক আত্মালিঙ্গ পূজনে ব্রতী হন৷ ফলে রাবণ শিবের নিত্যপূজা শুরু করেন৷ মহেশ্বর সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে বরদান করেন ও রাবণ তাঁর থেকে আত্মালিঙ্গ প্রাপ্তির ইচ্ছা প্রকাশ করে৷ শিব সম্মতিদান করেন ও পুর্বসতর্ক করেন যেন রাবণ এই মূর্তি তাঁর রাজ্যে গিয়েই স্থাপিত করেন, নতুবা এই লিঙ্গ যেখানে ভূস্পর্শ করবে সেখানেই স্থায়ী হয়ে যাবে৷ এই বরদান পেয়ে আত্মালিঙ্গসহ রাবণ নিজ রাজ্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন৷
শ্রী বিষ্ণু সমগ্র ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হন ও রাবণের অমরত্বপ্রাপ্তির ফলাফল উপলব্ধি করেন৷ তিনি শিবপুত্র গণেশকে প্রেরণ করেন যেন রাবণ এই আত্মালিঙ্গ কখনোই নিজরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে৷ স্কন্দপুর্বজ জানতেন রাবণ কখনো তার সান্ধ্য-আহ্নিক সব দৈনিক অন্যান্য পূজার কাজ অসম্পূর্ণ রাখেন না৷ এই সুযোগই তিনি ব্যবহার করেন আত্মালিঙ্গ পুণরুদ্ধারের জন্য৷
লঙ্কেশ্বরের যাত্রাপথে গোকর্ণের নিকট উপস্থিত হলে বিষ্ণু মায়াবলে ছদ্মসূর্যাস্ত ও সান্ধ্য আবহাওয়ার প্রকাশ ঘটান৷ এমন সময় রাবণের সান্ধ্য-আহ্নিকের কথা স্মরণ হয় ও শিবদত্ত আত্মালিঙ্গের ভুনিবেশের কথা মনে করে বিচলিত হন৷ এমন সময় শ্রীশশিবর্ণ নাম্নী ব্রাহ্মণবালকবেশে গণেশ এসে উপস্থিত হলে রাবণ পূজার্চনার কাজ সম্পন্ন না হওয়া অবধি তাঁকে আত্মালিঙ্গের দায়িত্ব প্রদান করেন৷ শ্রীবিনায়ক এই শর্তে রাজী হন যে তিনি রাবণকে তৃৃতীয়বার ডাকির পর ও না এলে তিনি দায়িত্বসারা হবেন৷
যথাপি রাবণ ফিরে এসে দেখেন আত্মালিঙ্গটি ভূস্থাপিত হয়েছে৷ কেশব তখন পুনরায় তার মায়ার নিষ্পত্তি ঘটালে সূর্যোদয় ঘটে৷ রাবণ তার প্রতি হওয়া ছলনার কথা বুঝতে পারেন ও লিঙ্গ উদ্ধারের চেষ্টা করলে কিছু টুকরো এদিক ওদিক ছড়িয়ে পড়ে৷ তেমনই একটি টুকরো সুরাৎকলে এসে পড়ে ও প্রতিষ্ঠা পায় সদাশিব মন্দির৷ পরে তিনি লিঙ্গমুখারকটি নষ্ট করার চেষ্টা করলে তা ৩৭ কিলোমিটার দূর সজ্জেশ্বরে পতিত হয়৷ আবরকের নিম্নাংশ ১৬ ও ১৯ কিলোমিটার দূরে গুণেশ্বর ও ধরেশ্বরে পতিত হয়৷
অন্তিমে রাবণ আত্মালিঙ্গের বস্ত্র ছুড়ে ফেলেন যা কণ্ডুকাগিরি অঞ্চলের মৃৃধেশ্বরে পতিত হয়, এই মৃৃধেশ্বর কালক্রমে মুরুদেশ্বর নামে পরিণত হয়৷
চিত্তাকর্ষক স্থান
সম্পাদনা- মুরুদেশ্বর মন্দির ও রাজগোপুরা: ভব্যমন্দিরটি কর্ণাটকের তিনদিকে আরব সাগর দ্বারা বেষ্টিত কণ্ডুকাগিরিতে অবস্থিত৷ কুড়িতল বিশিষ্ট গোপুরমটি ৺শিবের উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত৷ ২৪০ ফুট উঁচু রাজগোপুরার উচ্চতল থেকে ১২৩ ফুট শিবমূর্তি পরিদর্শনের সুবন্দোবস্ত রয়েছে৷ পাহাড়ের পাদদেশে একটি রামেশ্বর শিবমন্দির ও শিবলিঙ্গ রয়েছে, তাছাড়া শ্রীঅক্ষয়গুণ শিবলিঙ্গ শানেশ্বর মূর্তি ও রয়েছে৷
- বিস্তৃৃত সমুদ্রসৈকত ও নৌবহরের ব্যবস্থা রয়েছে৷
- দ্বিতীয় উচ্চতম শিবমূর্তিটি এখানেই অবস্থিত৷[১][২][৩]
-
দ্বিতীয় উচ্চতম শিবমূর্তি
-
মুরুদেশ্বর মন্দিরের গোপুরম
-
মুরুদেশ্বর মন্দিরের শিখর
-
মুরুদেশ্বর সমুদ্রসৈকত
-
মুরুদেশ্বরের সম্পূর্ণ দৃৃশ্য
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "A Shivaratri gift for people of Bijapur"। The Hindu। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০১৯।
- ↑ World's tallest Siva idol
- ↑ madur। "Murdeshwar - Raja Gopura - Fort - Shiva Temple"। Karnataka.com।