মীর কাসিম

ঔপনিবেশিক যুগের দ্বিতীয় নবাব এবং মীর জাফরের জামাতা

মীর কাসিম (পুরা নাম মীর মুহম্মদ কাসিম আলী খান) (মৃত্যু ৮ মে, ১৭৭৭) ১৭৬০ সাল থেকে ১৭৬৩ সাল পর্যন্ত বাংলার নবাব ছিলেন। পলাশীর যুদ্ধ পরবর্তী নবাব মীর জাফরকে ক্ষমতাচ্যুত করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মীর কাসিমকে ক্ষমতায় বসায়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকায় মীর জাফর ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে চুক্তি করতে সচেষ্ট হন। ব্রিটিশরা ডাচদের ক্রমেই পরাজিত করে এবং মীর জাফরকে ক্ষমতাচ্যুত করে মীর কাসিমকে ক্ষমতায় বসায়। [] মির কাসিম পরবর্তিতে ইংরেজদের সাথে সামরিক যুদ্ধে জড়িয়ে পরেন। বক্সারের যুদ্ধে তিনি ইংরেজ বাহিনীর হাতে পরাজিত হন। বলা হয়ে থাকে এই যুদ্ধই ছিল বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার সর্বশেষ সুযোগ।

মীর কাসিম
'নাসির-উল-মুলক (দেশ বিজেতা)
ইতমাজ-উদ-দৌলা (জাতীয় রাজনীতিক)
আলী জাহ (উচ্চ মান)
নুসরৎ জঙ্গ (যুদ্ধে বিজয়ী)
রাজত্ব১৭৬০–১৭৬৩ (ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বারা পদচ্যুত ঘোষিত , ৭ জুলাই, ১৭৬৩)[]
রাজ্যাভিষেক২০ অক্টোবর ১৭৬০ (পাটনা, ১২ মার্চ ১৭৬১)
পূর্বসূরিমীর জাফর
উত্তরসূরিমীর জাফর
মৃত্যু৮ মে ১৭৭৭(১৭৭৭-০৫-০৮)
দিল্লির সন্নিকটে কোতওয়াল
দাম্পত্য সঙ্গীনবাব ফাতিমা বেগম সাবিহা (মীর জাফর ও শাহ খানুমের কন্যা)
বংশধরমির্জা গুলাম উরাইজ জাফরি

মির্জা মুহাম্মাদ বাগির উল হুসাইন
নবাব মুহাম্মাদ আজিজ খান বাহাদুর

নবাব বদরউদ্দিন আলি কাহ্ন বাহাদুর
পূর্ণ নাম
মীর মুহম্মদ কাসিম আলী খান
রাজবংশনাজাফি
পিতামীর রাজি খান
ধর্মশিয়া ইসলাম

মীর কাসিম ইংরেজ শোষণের বিরুদ্ধে বরাবরই প্রতিবাদী ছিলেন। চুক্তি মোতাবেক বর্ধমান, মেদিনীপুর ও চট্টগ্রাম এ তিনটি জেলার রাজস্ব আয় তিনি কোম্পানিকে প্রদান করেন। কোম্পানির কাছে মীর জাফরের বকেয়া দেনা পরিশোধের দায়ও তার উপরে বর্তায়। ক্ষমতালাভের পর তিনি স্বাধীনভাবে শাসন কাজ পরিচালনায় সচেষ্ট হন। মীর কাসিম একটি চৌকস সামরিক বাহিনী এবং পূর্ন রাজকোষের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেছিলেন। তিনি তার দক্ষ কূটনীতির মাধ্যমে মুঘল সম্রাট শাহ আলমের স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তিনি তার রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে মুঙ্গেরে স্থানান্তর করেন। জমি জরিপ ব্যবস্থার সংস্কার সাধন করেন। নতুন ভূমি কর প্রবর্তন করেন। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পায়। সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের বেতন প্রদান করা সম্ভব হয়।

বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে তিনি নিরুদ্দেশ হন। ৮ মে ১৭৭৭ সালে দিল্লীর কাছে সম্ভবত শোথ রোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি অত্যন্ত দরিদ্রপিড়ীত ছিলেন। তার রেখে যাওয়া একমাত্র সম্পদ, দুইটি শাল বিক্রি করে তার দাফনের কাজ সম্পাদন করা হয়।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Reign of Mir Qasim"  Authors list-এ |প্রথমাংশ1= এর |শেষাংশ1= নেই (সাহায্য)
  2. মোহাম্মদ শাহ (২০১২)। "মীরকাসিম"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743