মার-পা-ছোস-ক্যি-ব্লো-গ্রোস

মার-পা-ছোস-ক্যি-ব্লো-গ্রোস (তিব্বতি: མར་པ་ཆོས་ཀྱི་བློ་གྲོས་ওয়াইলি: mar pa chos kyi blo gros) বা মারপা লোৎসাওয়া বা অনুবাদক মারপা (১০১২-১০৯৭) একজন তিব্বতী বৌদ্ধধর্মসাধক ও আচার্য ছিলেন। ভারত থেকে মহামুদ্রাবজ্রযান বৌদ্ধশিক্ষা তিনি তিব্বতে নিয়ে যান ও কাগ্যু গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠা করেন। [১]

মার-পা-ছোস-ক্যি-ব্লো-গ্রোস

প্রথম জীবন সম্পাদনা

১০১২ খ্রিষ্টাব্দে তিব্বতের দক্ষিণ ভাগে অবস্থিত ল্হো-ব্রাগ অঞ্চলের ছু-খ্যের নামক স্থানে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে মার-পা-ছোস-ক্যি-ব্লো-গ্রোস জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল মার-পা-দ্বাং-ফ্যুং-'ওদ-জের (ওয়াইলি: mar pa dbang phyug 'od zer) এবং মাতার নাম ছিল র্গ্যা-মো-'ওদ-জের (ওয়াইলি: rgya mo 'od zer)। তিনি 'ব্রোগ-মি-শাক্য-য়ে-শেস নামক এক বৌদ্ধ পন্ডিতের নিকটে তিন বছর ধরে সংস্কৃত শিক্ষা লাভ করে ভারত যাত্রার সিদ্ধান্ত নেন।[২]

ভারত যাত্রা সম্পাদনা

এরপর মারপা প্রথমে নেপাল গিয়ে নারো পার দুই শিষ্য পৈণ্ডা পার নিকট সংস্কৃত ও ছিথের পার নিকট চতুঃপীঠতন্ত্র সম্বন্ধে তিন বছর শিক্ষা লাভ করেন। পরে তাদের নির্দেশে মারপা নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটে পুল্লহারিতে নারো পার নিকটে গিয়ে অনুত্তরযোগতন্ত্রের মহাযোগতন্ত্র ও যোগিনীতন্ত্র সম্বন্ধে শিক্ষা লাভ করেন। এই সময়ে তিনি জ্ঞানগর্ভকুক্কুরী পার সাথে শিক্ষালাভ করেন। তিনি মৈত্রী পার নিকট মহামুদ্রা তত্ত্ব সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করেন। সেখানে বারো বছর ভারতে শিক্ষালাভ করে তিনি তিব্বত ফিরে যান। তিব্বতে ফিরে গিয়ে তিনি ধর্ম্প্রচার করে প্রচুর ধনসম্পত্তির অধিকারী হন। এই সময় তিনি ব্রো-ব্রো-লুং নামক স্থানে একটি শিক্ষাকেন্দ্র চালু করেন এবং ব্দাগ-মেদ-মা (ওয়াইলি: bdag med ma) নামক এক মহিলাকে বিবাহ করলে তাদের দার-মা-ম্দো-স্দে (ওয়াইলি: dar ma mdo sde) নামক এক পুত্রের জন্ম হয়। এরপরে মারপা আরো দুই বার ভারত ও তিনবার নেপাল গিয়ে নারো পার কাছে শিক্ষালাভ করেন।[২]

বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার সম্পাদনা

 
মার-পা-ছোস-ক্যি-ব্লো-গ্রোস

তিব্বতে মারপা মহামুদ্রানারো পার ছয় যোগ সম্বন্ধে শিক্ষাদান করেন। পরবর্তীকালে এই দুই তত্ত্ব কাগ্যু ধর্মসম্প্রদায় নামক একটি তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম সম্প্রদায়ের মূল তত্ত্ব হয়ে ওঠে। মেস-স্তোন-ত্সোন-পো-ব্সোদ-নাম্স-র্গ্যাল-ম্ত্শান (ওয়াইলি: mes ston tshon po bsod nams rgyal mtshan), র্জে-ব্ত্সুন-মি-লা-রাস-পা, র্ঙ্গোগ-স্তোন-ছোস-ক্যি-র্দো-র্জে (ওয়াইলি: rngog ston chos kyi rdo rje) এবং ম্ত্শুর-স্তোন-দ্বাং-গি-র্দো-র্জে (ওয়াইলি: mtshur ston dbang gi rdo rje) তার চার প্রধান শিষ্য ছিলেন।[২] মারপা বহু বছর ধরে সংস্কৃত বৌদ্ধ গ্রন্থগুলিকে তিব্বতী ভাষায় অনুবাদ করেন। তিনি লাদাখের জাংস্কার উপত্যকায় স্তোংদে বৌদ্ধবিহার নির্মাণ করেন।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. samye.org: The Kagyu Lineage: the Tibetan Lineage Masters: Marpa the Translator ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে
  2. Quintman, Andrew (2010-09)। "Marpa Chokyi Lodro"The Treasury of Lives: Biographies of Himalayan Religious Masters। সংগ্রহের তারিখ 2013-11-23  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. Stongdey Monastery, Buddhist Temples

আরো পড়ুন সম্পাদনা

  • The Life of Marpa the Translator. By Nalanda Translation Committee, Shambhala Publications, Inc. 1982. আইএসবিএন ১-৫৭০৬২-০৮৭-৩, আইএসবিএন ১-৫৬৯৫৭-১১২-০
  • Андросов В.П., Леонтьева Е.В. (২০০৯)। Марпа и история Карма Кагью. Жизнеописание Марпы переводчика в историческом контексте школы Карма Кагью। Россия: Открытый Мир। পৃষ্ঠা 512। আইএসবিএন 978-5-9743-0134-6  (রুশ)
  • Bacot, Jacques. 1937. La vie de Marpa le traducteur: suivie d'un chapitre de l'Avandana de l'oiseau Nilakantha. Paris: Paul Geuthner.
  • Davidson, Ronald M. 2005. Tibetan Renaissance: Tantric Buddhism in the Rebirth of Tibetan Culture. New York: Columbia University Press.
  • Decleer, Hubert. 2004. “Mar pa.” In Lindsay Jones, ed., Encyclopedia of Religion. Second edition. New York: Macmillan Reference, pp. 5715–5716.
  • Nālandā Translation Committee, tr. 1986. The Life of Marpa the Translator. Boston: Shambhala Publications.
  • Quintman, Andrew, tr. 2010. The Life of Milarepa. New York: Penguin Classics.
  • Roerich, George N. 1976. The Blue Annals. 2d ed. Delhi: Motilal Banarsidass.
  • Wylie, Turrell. "Marpa's Tower: Notes on Local Hegemons in Tibet." History of Religions 3 (1964): 278-91.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা