মারি ড্রেসলার
মারি ড্রেসলার (ইংরেজি:Marie Dressler; ৯ই নভেম্বর, ১৮৬৮ - ২৮শে জুলাই, ১৯৩৪) ছিলেন একজন কানাডীয়-মার্কিন অভিনেত্রী ও কৌতুকাভিনেতা। তার জন্মনাম লেইলা মারি কোয়ের্বার। তিনি নির্বাক ও মহামন্দা-যুগীয় অন্যতম চলচ্চিত্র তারকা।[২][৩] তিনি মঞ্চেও সফল ছিলেন। তিনি ভডেভিল ও কমিক অপেরায় অভিনয় করেছেন। ১৯১৪ সালে তিনি প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৩১ সালে তিনি মিন অ্যান্ড বিল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।
মারি ড্রেসলার | |
---|---|
Marie Dressler | |
![]() মারি ড্রেসলার | |
জন্ম | লেইলা মারি কোয়ের্বার ৯ নভেম্বর ১৮৬৮ |
মৃত্যু | ২৮ জুলাই ১৯৩৪ | (বয়স ৬৫)
মৃত্যুর কারণ | ক্যান্সার |
সমাধি | ফরেস্ট লন মেমোরিয়াল পার্ক, গ্লেনডেল |
নাগরিকত্ব | কানাডীয় মার্কিন |
পেশা | অভিনেত্রী |
কর্মজীবন | ১৮৯২–১৯৩৪ |
দাম্পত্য সঙ্গী | জর্জ হোপার্ট (বি. ১৮৯৯–১৯০৬) জেমস হেনরি ডাল্টন (বি. ১৯০৪–১৯২১)[ক] |
১৪ বছর বয়সে বাড়ি ত্যাগ করার পর ড্রেসলার বিভিন্ন মঞ্চ দলের সাথে সফরে করে মঞ্চে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। তথাকথিত সুন্দরী না হওয়া স্বত্ত্বেও তিনি তার প্রতিভা দিয়ে মানুষকে হাসানোর মাধ্যমে প্রশংসা অর্জন করেন। ১৮৯২ সালে তিনি ব্রডওয়ে থিয়েটারে অভিনয় শুরু করেন এবং তা ১৯২০ এর দশক পর্যন্ত চলে। তিনি মূলত হাস্যরসাত্মক চরিত্রে অভিনয় করতেন। ব্রডওয়েতে তার একটি সফল চরিত্র সাথে মিল রেখে নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র টিলিস পাঙ্কচার্ড রোম্যান্স (১৯১৪) এ চার্লি চ্যাপলিন ও মেবল নরম্যান্ডের সাথে অভিনয় করেন। তিনি কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্যেও কাজ করেন, কিন্তু বেশিরভাগ সময় তিনি নিউ ইয়র্ক সিটিতে মঞ্চে অভিনয় করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তিনি অন্যান্য তারকাদের সাথে মিলে লিবার্টি বন্ড বিক্রিতে সহায়তা করেন। ১৯১৯ সালে তিনি মঞ্চের গায়কদলের প্রথম সম্মেলন আয়োজনে সহায়তা করেন।
প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
লেইলা মারি কোয়ের্বার ১৮৬৮ সালের ৯ই নভেম্বর কানাডার অন্টারিওর কোবুর্গ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা অ্যানা (জন্মনাম: হেন্ডারসন) ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ এবং পিতা আলেকজান্ডার রুডলফ কোয়ের্বার (১৩ই এপ্রিল, ১৮২৬ - নভেম্বর, ১৯১৪) ছিলেন জার্মান বংশোদ্ভূত ক্রিমীয় যুদ্ধের সাবেক কর্মকর্তা। আলেককজান্ডার জার্মানির নিউ-রুপ্পিনের লিন্ডোউয়ে জন্মগ্রহণ করেন এবং ইংল্যান্ডের সারির উইম্বলডনে মারা যান। দুই বোনের মধ্যে লেইলা ছোট, তার বড় বোন বোনিটা লুইস কোয়ের্বার (জানুয়ারি ১৮৬৪ - ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯)। বোনিটা নাট্যকার রিচার্ড গ্যান্থনিকে বিয়ে করেন।[৪]
চলচ্চিত্র কর্মজীবনসম্পাদনা
ড্রেসলার তার নিজের ভূমিকায় দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের অভিনয় করেন ১৯১৪ সালে ৪৪ বছর বয়সে। ১৯১৪ সালে তিনি ম্যাক সেনেট পরিচালিত হাস্যরসাত্মক টিলিস পাঙ্কচার্ড রোম্যান্স চলচ্চিত্রে চার্লি চ্যাপলিন ও মেবল নরম্যান্ডের সাথে অভিনয় করেন। ১৯২৯ সালে তিনি ফ্র্যাংক লয়েড পরিচালিত দ্য ডিভাইন লেডি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
তিনি গম্ভীর চলচ্চিত্র ভূমিকায় কাজ শুরু করেন। ওয়ালেস বিরির বিপরীতে মিন অ্যান্ড বিল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৩২ সালে এমা চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি আরেকটি একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, কিন্তু হেলেন হেয়েসের কাছে পরাজিত হন।
মৃত্যুসম্পাদনা
ড্রেসলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৩৪ সালের ২৮শে জুলাই ৬৫ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারায় মৃত্যুবরণ করেন। হিদার চ্যাপেলের দ্য উই কার্ক ও'তে এক গোপন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর তাকে গ্লেনডেলের ফরেস্ট লন মেমোরিয়াল পার্কের গ্রেট সমাধিতে সমাহিত করা হয়।[৫]
তিনি তার বোন বোনিটার জন্য ৩১০,০০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ সম্পত্তি রেখে যান।[৬] এছাড়া তিনি তার ১৯৩১ সালে কেনা একটি গাড়ি ও ৩৫,০০০ মার্কিন ডলার তার ২০ বছর বয়সী গৃহপরিচারিকা মামি স্টিল কক্স এবং ১৫,০০০ মার্কিন ডলার তার ভৃত্য ও কক্সের স্বামী জেরি আর. কক্সকে দান করে যান।[৭]
উত্তরাধিকারসম্পাদনা
চলচ্চিত্র শিল্পে তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬০ সালে ১৭৩১ ভাইন স্ট্রিটে হলিউড ওয়াক অব ফেমে তার নামাঙ্কিত তারকা খচিত হয়।[৮] মিন অ্যান্ড বিল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পর ড্রেসলার ও ওয়ালেস বিরি হলিউডের গ্রম্যান্স চাইনিজ থিয়েটারে তাদের পদচিহ্ন রাখেন, যেখানে খোদাই করে লেখা রয়েছে "আমেরিকার নতুন প্রিয়মুখ, মিন ও বিল'।[৯]
টীকাসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "U.S. passport application (1924)"। ancestry.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ শোকগাথা ভ্যারাইটি, ৩১ জুলাই ১৯৩৪, পৃ. ৫৪।
- ↑ "Marie Dressler: North American Theatre Online"। alexanderstreet (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Famous Star Is Dead at 62"। Montreal Gazette (ইংরেজি ভাষায়)। জুলাই ৩০, ১৯৩৪। পৃষ্ঠা 1, 9। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Marie Dressler Loses Long Battle For Life"। দ্য পোর্টসমাউথ টাইমস। ২৯ জুলাই ১৯৩৪। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৮ – গুগল নিউজ-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Marie Dressler's Will Is Probated"। পিটসবার্গ পোস্ট-গেজেট। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস। ১৫ আগস্ট ১৯৩৪। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৮ – গুগল নিউজ-এর মাধ্যমে।
- ↑ গা, স্যাভানা (১০ এপ্রিল ১৯৩৬)। "Marie Dressler's Old Servants Open Night Club for Negros With Money Actress Left Them"। দি ইভনিং ইন্ডিপেন্ডেন্ট। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৮ – গুগল নিউজ-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Marie Dressler | Hollywood Walk of Fame"। ওয়াক অব ফেম (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ লি ১৯৯৭, পৃ. ১৮২।
গ্রন্থপঞ্জিসম্পাদনা
- কেনেডি, ম্যাথিউ (২০০৬)। Marie Dressler: A Biography, With a Listing of Major Stage Performances, a Filmography And a Discography। ম্যাকফারল্যান্ড। আইএসবিএন 0-7864-0520-1।
- লি, বেটি (১৯৯৭)। Marie Dressler: The Unlikeliest Star। কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। আইএসবিএন 0-8131-2036-5।
- সিলভারম্যান, স্টিভেন এম. (১৯৯৯)। Funny Ladies। হ্যারি এন. আব্রামস ইঙ্ক। আইএসবিএন 0-8109-3337-3।
আরও পড়ুনসম্পাদনা
- স্টুর্টেভ্যান্ট, ভিক্টোরিয়া (২০০৯)। A Great Big Girl Like Me: The Films of Marie Dressler। আরবানা, ইলিনয়: ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। আইএসবিএন 978-0-252-07622-0।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- ইন্টারনেট ব্রডওয়ে ডেটাবেজে মারি ড্রেসলার (ইংরেজি)
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে মারি ড্রেসলার (ইংরেজি)