মাদাগাস্কার দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকা মহাদেশের উপকূলে অবস্থিত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এটি মালাগাসি নামেও পরিচিত। মাদাগাস্কার দ্বীপটি পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপগুলোর মধ্যে অন্যতম। আন্তানানারিভো মাদাগাস্কারের রাজধানী।

মাদাগাস্কারের প্রজাতন্ত্র

মাদাগাস্কারের জাতীয় পতাকা
পতাকা
মাদাগাস্কারের জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: Tanindrazana, Fahafahana, Fandrosoana  (মালাগাসি)
Patrie, liberté, progrès  (ফরাসি)
"পূর্বপুরুষের-ভূমি, স্বাধীনতা, অগ্রগতি"
মাদাগাস্কারের অবস্থান
রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
আন্তানানারিভো
সরকারি ভাষামালাগাসি, ফরাসি, ইংরেজি
জাতীয়তাসূচক বিশেষণমালাগাসি[]
সরকারপ্রজাতন্ত্র
এনদ্রি রেজোলিনা
Jean Ravelonarivo
স্বাধীনতা 
• তারিখ
২৬শে জুন ১৯৬০
• পানি (%)
০.১৩
জনসংখ্যা
• জুলাই ২০০৯ আনুমানিক
১৯,৬২৫,০০০[] (৫১)
• ২০২১ আদমশুমারি
২৮,২৬৩,৮৫৭
জিডিপি (পিপিপি)২০০৯ আনুমানিক
• মোট
$২০.৩৬৩ বিলিয়ন[] (১২২তম)
• মাথাপিছু
$৯৮১.১৫[] (২১২তম)
জিনি (২০০১)৪৭.৫
উচ্চ
মানব উন্নয়ন সূচক (২০০৭)বৃদ্ধি ০.৫৩৩
ত্রুটি: মানব উন্নয়ন সূচক-এর মান অকার্যকর · ১৪৩তম
মুদ্রাMalagasy ariary (MGA)
সময় অঞ্চলইউটিসি+৩ (EAT)
• গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি)
ইউটিসি+৩ (পর্যবেক্ষণ করা হয়নি)
কলিং কোড২৬১
ইন্টারনেট টিএলডি.mg
২৭শে এপ্রিল ২০০৭ থেকে সরকারী ভাষা।
রিং-লেজযুক্ত লেমুর ১০০ টিরও বেশি পরিচিত প্রজাতির মধ্যে একটি এবং লেমুর উপ-প্রজাতি শুধুমাত্র মাদাগাস্কারে পাওয়া যায়

মালাগাসি ভাষায় মাদাগাস্কারকে বলা হয় মাদাগাসিকারা এবং এখানকার জনগোষ্ঠীকে বলা হয় মালাগাছি।[] মধ্যযুগে ইউরোপীয়দের দ্বারাই মাদাগাস্কার শব্দটি জনপ্রিয়তা পায়।[] ১৩ শতকে ভেনেশিয় অভিযাত্রী মার্কো পোলো প্রথম মাদাগেইসকার শব্দটির উল্লেখ করেন। যদিও তিনি সোমালির মোগাদিসুর ভ্রম অনুবাদে এই নামটি ব্যবহার করেন।[]

মালাগাসি ভাষাতে, মাদাগাস্কার দ্বীপটি মাদাগাস্কার [মাদাসাস্কারের] এবং তার জনগণকে মালাগাসি বলা হয়। দ্বীপের নাম "মাদাগাস্কার" স্থানীয় মূলত নয়, বরং ইউরোপীয়রা মধ্য ইউরোপে জনপ্রিয় ছিল। নাম মাদাগিস্কার প্রথম ১৩ শতকের ভার্জিনিয়ান এক্সপেরারি মার্কো পোলো এর স্মরণে মোগাদিশু নামে একটি দূষিত লিপ্যন্তর হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছিল। সোমালিয়া বন্দর যা দিয়ে পোলো দ্বীপটিকে বিভ্রান্ত করেছিল ১৫০০ সালে সেন্ট লরেন্সস দিবসে, পর্তুগিজ পরিদর্শক দিজো দিয়াস দ্বীপে অবতরণ করে এবং এটি সাও লৌন্নকো নামকরণ করে। পোলো এর নাম রেনেসাঁ মানচিত্রে পছন্দ এবং জনপ্রিয় ছিল। মাদাগাস্কারের কোনও মালাগাসি ভাষার নাম না বলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর এই দ্বীপটি ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে হয়, যদিও কিছু সম্প্রদায়ের নিজস্ব অংশ বা তাদের সমস্ত ভূখণ্ডের নিজস্ব নাম রয়েছে যা তারা বাস করত।

ইতিহাস

সম্পাদনা

রাজনীতি

সম্পাদনা

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

সম্পাদনা

মাদাগাস্কারের মোট আয়তন ৫৮৭,০৪০ বর্গ কিলোমিটার (২২৬,৬৬০০ বর্গ মাইল) সাথে ৫৮১,৫৪০ বর্গ কিলোমিটার (২২৪,৫৩০ বর্গ মাইল) জমি এবং ৫,৫০০ বর্গ কিলোমিটার (২,১০০ বর্গ মাইল) জলাশয় । মাদাগাস্কার বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দ্বীপ এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ দেশ[] সর্বোচ্চ চূড়াটি ২,৮৭৬ মিটার (৯,৪৩৬ ফুট) উঁচুতে মেরোমোকোট্রো এ , যা দ্বীপের উত্তরে সারাতানানা ম্যাসিফ অঞ্চলে। রাজধানী আন্তানানারিভো দ্বীপের কেন্দ্রস্থলের নিকটবর্তী কেন্দ্রীয় উচ্চভূমিতে রয়েছে। এটির ১,২২৫,২৫৯ কিমি (৪৩৭,০৭৫ বর্গ মাইল) এর ২৫ তম বৃহত্তম স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে । মাদাগাস্কার আফ্রিকা ভূখণ্ডের থেকে ৪০০ কিলোমিটার (২৫০ মাইল) পূর্বে। []

অর্থনীতি

সম্পাদনা

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

জনস্বাস্থ্য

সম্পাদনা

মাদাগাস্কারে প্রজননের হার হলো নারীপিছু গড়ে ৫টি করে সন্তান। এদেশে প্রতি ১ লাখ লোকের জন্য গড়ে ২৯ জন করে চিকিৎসক রয়েছে। ২০০৫ সালের হিসাবে এদেশে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি ১০০০টি শিশুর মধ্যে ৭৪। একবিংশ শতকের শুরুর হিসাবে এখানে সদ্যোজাত শিশুদের জন্য অনুমিত জীবনকাল ৫৮.৪ বছর। ২০০৪ সালে চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্যখাতে সরকারী ব্যয়ের পরিমাণ ছিলো মাথাপিছু ২৯ মার্কিন ডলার।[]

সংস্কৃতি

সম্পাদনা

মাদাগাস্কারের সংস্কৃতিতে একজন জীবিত মানুষের চেয়ে একজন মৃত মানুষের গুরুত্ব অনেক বেশি। সে হিসেবে একজন বয়স্ক মানুষের গুরুত্ব তাদের কাছে অনেক বেশি, কারণ তিনি খুব অল্প সময়েই সম্মানিত একটি জীবনে পদার্পণ করতে চলেছেন। কোনো শিশু যদি তার চেয়ে বয়োজ্যাষ্ঠ কারো আগে কিছু খেয়ে ফেলে, তাহলে তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হয়। খাবার টেবিলেও বসার স্থান, খাবার পরিবেশনের প্রক্রিয়ায় বয়োজ্যাষ্ঠদের আলাদা মর্যাদা প্রাধান্য পায়।[১০]

পারিবারিক চিরশয়নের স্থান (কবর)-কে মালাগাসিরা বলেন "তানিন্দ্রাজানা" (বাংলায়: পূর্বপুরুষের ভূমি)। সম্প্রদায় থেকে সম্প্রদায়ে তানিন্দ্রাজানা'র ধরন বিভিন্ন হয়: মেরিনা মন্দির বানানো হয় পাথর আর সিমেন্ট দিয়ে, ভিতরে ছোট কুঠুরিতে মৃতদেহ জড়িয়ে রাখা হয় রেশমি কাপড়ে; মাহাফালি মন্দিরগুলো পাথরের তৈরি হলেও কাঠের পোস্ট দিয়ে ফ্রেম করা হয়, যেগুলোতে আবার মানুষ আর জীবজন্তুর কারুকার্য করা থাকে; পশ্চিম উপকূলের মরণদাভা নদী তীরবর্তী সাকালাভা সম্প্রদায়ের ছাদে দেখা যায় শৌর্যবীর্য, প্রজনন ইত্যাদির প্রতীকায়নে বিভিন্ন যৌনাসনের চিত্র।[১০]

মাদাগাস্কারে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারী থাকলেও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মালাগাসিই জানাহারি (বাংলায়: সৃষ্টিকর্তা) একজন পরম ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন; কেউ তাকে আন্দ্রিয়ামানিত্রা (বাংলায়: মিষ্টি বা সুগন্ধির অধিকর্তা) নামেও ডাকেন।[১০]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Malagasy" is the correct form in English; Embassy of Madagascar, Washington D.C. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে "Madagascan" is used only for the island, not its people National Geographic Style Manual
  2. Department of Economic and Social Affairs Population Division (2009). "World Population Prospects, Table A.1" (.PDF). 2008 revision. United Nations. Retrieved on 2009-03-12.
  3. "Madagascar"। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-০১ 
  4. National Geographic। "Style Manual"। ১০ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১২ 
  5. Cousins (1895), pp. 11–12
  6. Room (2006), p. 230
  7. "Island Countries Of The World"। WorldAtlas.com। ২০১৭-১২-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১০ 
  8. "About Madagascar"Cortez USA Tours & Travel। ২০১২। সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২৪, ২০১৭ 
  9. "hdrstats.undp.org"। ২৬ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০০৯ 
  10. এখানে-সেখানে: মাদাগাস্কার — কাজী জহিরুল ইসলাম; ছুটির দিনে ৪০১ (পৃষ্ঠা ৯) জুন ২, ২০০৭ - দৈনিক প্রথম আলো।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
সরকারী
সাধারণ তথ্য
সংবাদ মিডিয়া
বাস্তব্যবিদ্যা
বিবিধ