মিষ্টান্ন প্রস্তুত করে যে সম্প্রদায় তাদেরকে ময়রা বলে। তারা মোদকজাতি নামেও পরিচিত। কুরি ও মধুনাপিত পেশাগত দিক বিবেচনায় ময়রাদের সেমগোত্রীয়। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাঙালী সমাজে তারা পৃথক সম্প্রদায় হিসাবে পরিচিত হত। ময়রাদের তৈরী মিষ্টির সাধারণ উপকরণগুলো হল দুধ, ছানা, ময়দা, ঘি, গুড় এবং চিনি। হিন্দু ধর্মের আচর ও রীতির সাথে দুধের যোগসূত্র থাকায় ময়রার পেশাকে পবিত্র পেশা হিসাবে দেখা হতো। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দুধ ও মিষ্টান্ন সরবরাহ করে তার পবিত্রতা রক্ষা করে বলে হিন্দু সমাজে ময়রাদের অবস্থান উঁচুতে। হিন্দুদের সামাজিক বর্ণ বিভাজনে ময়রারা নবশাক সম্প্রদায়ভুক্ত। ব্রাহ্মনগন তাদের ছোঁয়া অন্ন ও জল গ্রহণ করেন। [১]

ঢাকার ময়রা সম্প্রদায় সম্পাদনা

১৮৩০ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী ঢাকায় ৩৮২ ঘর হিন্দু ঘোষ পরিবারছিল। এসময়ে অল্প সংখ্যক মুসলিম মিষ্টি প্রস্তুতকারীও বসবাস করতেন। এ সকল মুসলিম মিষ্টপ্রস্তুতকারীগন মোরব্বাওয়ালা হিসাবে পরিচিত ছিলেন। ঢাকার বিখ্যাত মিষ্টির মধ্যে অন্যতম ছিল, সন্দেশ, রসগোল্লা, মতিচুর, মিহিদানা, মোরব্বা, নকুল, মুরাগি, শকর পারা, জিলাবি বা জিলাপি, বালুশাহী, খাজা, পেড়া, বুনদিয়া, আমৃত্তি প্রভৃতি। অতীতে ঢাকার চক বাজার, উর্দু রোড, ফরাশগঞ্জ, লালবাগবাংলাবাজার মিষ্টির জন্য বিখ্যাত ছিল। কালাচাঁদ গন্ধবণিক, মরণ চাঁদ ও সীতারাম মিষ্টান্ন ভাণ্ডার এই তিনটি দোকান ছিল পুরোন ঢাকার বিখ্যাত মিষ্টি বিক্রির স্থান। [২]

তথ্য উৎস সম্পাদনা

  1. "ময়রা"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৯ 
  2. "বণিক বার্তা - ময়রা ও মোরব্বাওয়ালা"Bonik Barta। ২০১৬-০৩-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৭-০৩