মন্থনা জমিদার বাড়ি
মন্থনা জমিদার বাড়ি বা দেবী চৌধুরানীর বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার মন্থনা নামক স্থানে অবস্থিত, যা বর্তমানে রাজবাড়ী নামে পরিচিত। এটি এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। [১]
মন্থনা জমিদার বাড়ি | |
---|---|
বিকল্প নাম | পীরগাছা রাজবাড়ি মন্থনা রাজবাড়ি দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ি |
সাধারণ তথ্যাবলী | |
ধরন | বাসস্থান, মন্দির, বাংলো বাড়ি, পুকুর |
অবস্থান | পীরগাছা উপজেলা |
ঠিকানা | পীরগাছা সদর |
শহর | পীরগাছা উপজেলা, রংপুর জেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
উন্মুক্ত হয়েছে | ১৭০৩-৪ খ্রিঃ |
স্বত্বাধিকারী | বর্তমান রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন (খাস জমি) |
Height | |
শীর্ষ তলা পর্যন্ত | ০১ তলা বিশিষ্ট ০৩ টি প্রধান আবাসন ভবন। এবং ০৩টি মন্দির |
Dimensions | |
অন্যান্য মাত্রা | ২৮ একর জমির উপর নির্মিত |
কারিগরী বিবরণ | |
উপাদান | ইট, সুরকি ও রড |
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রায় ০৮ একর জায়গা জুড়ে ১৭০৩-৪ খ্রিঃ এই জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন। তবে এই জমিদার বাড়ির আশেপাশে বিস্তৃত আরো ২০ একর জায়গা আছে যেগুলো খাল এবং বড় পুকুর ও ফসলি জমি বেষ্টিত রয়েছে। এই জমিদার বাড়ি ও বংশের প্রতিষ্ঠাতা জমিদার অনন্তরাম। জমিদার অনন্তরাম কোচবিহার রাজার একজন কর্মচারী ছিলেন। তিনি একজন বারেন্দ্রীয় ব্রাহ্মণ ছিলেন। কোচবিহার রাজার কর্মচারীর থাকা অবস্থায় তিনি উক্ত এলাকার জমিদারী লাভ করেন। তখন তিনি কোচবিহার মহারাজার শাসনাধীন আওতায় জমিদার ছিলেন। পরবর্তীতে ১৭১১ সালে মোঘল আমল বাহিনী কোচবিহার আক্রমণ করে। তখন কোচবিহারের যত কর্মচারী ও জমিদার ছিলো সকলেই মোগলদের পক্ষে যোগদান করেন। এই জমিদার অনন্তরামও তখন মোগলদের পক্ষে চলে যান এবং মোগলদের শাসনের আওতাধীন জমিদারী পরিচালনা করতে থাকেন। একাধারে জমিদার বংশধররা এই জমিদার বাড়ির জমিদারী পরিচালনা করতে থাকেন। জমিদার অনন্তরামের পুত্র যাদবেন্দ্র নারায়ণ, এরপর তার পুত্র রাঘবেন্দ্র নারায়ণ, এরপর তার পুত্র নরেন্দ্র নারায়ণ এই জমিদারীর পরিচালনা করতে থাকেন। কিন্তু জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ ছিলেন নিঃসন্তান। তাই তিনি নিঃসন্তান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে জমিদারী পরিচালনার দায়িত্ব নেন তার স্ত্রী জয় দুর্গা দেবী। যিনি ইতিহাসে দেবী চৌধুরানী নামে পরিচিত। তার নাম ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয় তার কর্মফলের জন্য। কারণ তিনি একজন জমিদার হয়েও প্রজাদের সাথে প্রজা বিদ্রোহ ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দলন একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।[২]
অবকাঠামো
সম্পাদনাএখানে একতলা বিশিষ্ট তিনটি ভবন আছে। এছাড়া এখানে তিনটি মন্দির আছে।
বর্তমান অবস্থা
সম্পাদনাপূর্বে অনেক অট্টালিকা থাকলেও এখন আর তেমন নেই, সবগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। এবং অনেক ভবন দখল করে বসবাস করছে, এখন কয়েকটি ভবন রয়েছে সেগুলো শ্যাওলা, লতা-পাতায় জরাজীর্ণ হয়ে রয়েছে। তবে এখনো কয়েকটি মন্দির ও পুকুর অবশিষ্ট্য রয়েছে। [৩] জমিদার বাড়ির সদর গেটটি ভেঙ্গে গেছে, বোঝার উপায় নেই যে এটা কোন জমিদার বাড়ির গেট ছিল। জমিদার বাড়ির ০৪ টি বড় পুকুর এবং ০১ টি খাল জমিদার বাড়িকে ঘিরে' খনন করা হয়েছিল। তবে পুকুরগুলো সরকারি ইজারায় চলমান আছে। জমিদারবাড়ির উত্তর-দক্ষিণ এবং পশ্চিম ও পূর্ব দিকেও বেশকিছু আবাদি জমি আছে, এসব জমি সরকারী ইজারায় চলমান রয়েছে।
গ্যালারী
সম্পাদনা-
জমিদার বাড়ির উত্তর দিকের পরিত্যাক্ত ভবন
-
জমিদার বাড়ির পশ্চিম দিকের পরিত্যাক্ত ভবন
-
জমিদার বাড়ির ঐতিহাসিক মন্দির
-
জমিদার বাড়ির ঐতিহাসিক ভবতা রাণী শিব মন্দির
-
জমিদার বাড়ির নতুন মন্দির-১
-
জমিদার বাড়ির নতুন মন্দির-২
-
জমিদার বাড়ির পরিত্যাক্ত কুয়া
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "পীরগাছা রাজবাড়ি (মন্থনা জমিদার বাড়ি)!"। ২৭ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৯।
- ↑ "মন্থনার ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি/দেবী চৌধুরানীর বাড়ি"। www.unfoldbangla.com। ২০২১-০৭-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-৩১।
- ↑ "ভ্রমণ: ঘুরে আসুন রংপুরে দেবী চৌধুরাণীর রাজবাড়ি"। ঢাকা টাইমস। ২০২০-০২-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-৩১।