মধ্যাহ্ন (উপন্যাস)

মধ্যাহ্ন বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ রচিত উপন্যাস। এর প্রথম খণ্ড ২০০৬-এ এবং ২য় খণ্ড ২০০৭-এ প্রকাশিত হয়। ১৯০৫-এ কাহিনী শুরু, শেষ ১৯৪৭-এ ভারত বিভাগের পূর্বে। এটি একটি কাহিনীবহুল, চরিত্রবহুল আখ্যান যা রচনায় হুমায়ূন আহমেদ একটি ঐতিহাসিক পটভূমিকে অবলম্বন করেছেন। তবে এটি কোনো ঐতিহাসিক উপন্যাস নয়। এ উপন্যাসে লেখক তার জন্মপূর্ববর্তী গ্রামীণ বাংলার বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগের একটি বিশেষ কালখণ্ড পুনর্নির্মাণ করেছেন। বলা হয়েছে, “মধ্যাহ্নে ইতিহাস আছে, ঐতিহাসিকতা নেই”।

মধ্যাহ্ন
প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ
প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ
লেখকহুমায়ুন আহমেদ
মূল শিরোনামমধ্যাহ্ন
প্রচ্ছদ শিল্পীধ্রুব এষ
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধারাবাহিকমধ্যাহ্ন
বিষয়ইতিহাস আশ্রিত
ধরনউপন্যাস
প্রকাশিতফেব্রুয়ারি ২০০৭ (১ম খণ্ড), ফেব্রুয়ারি ২০০৮ (২য় খণ্ড), ২০০৮ (সমগ্র)
প্রকাশকঅন্যপ্রকাশ, ৩৮/২ক বাংলাবাজার , ঢাকা।
মিডিয়া ধরনছাপা (শক্তমলাট)
পৃষ্ঠাসংখ্যা২৩৯ (১ম খণ্ড), ২৪০ (২য় খণ্ড)
আইএসবিএন৯৮৪ ৮৬৮ ৪৩৫ ২ (১ম খণ্ড), ৯৮৪ ৮৬৮ ৪৮৬ ৭ (২য় খণ্ড), ৯৮৪ ৮৬৮ ৪৯৪ ৮ (সমগ্র) {{ISBNT}} এ প্যারামিটার ত্রুটি: অবৈধ অক্ষর

প্রকাশের ইতিহাস সম্পাদনা

উপন্যাসটি দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়। অন্যপ্রকাশ থেকে ২০০৬ সালে এর প্রথম খণ্ড এবং ২০০৭ সালে এর ২য় খণ্ড প্রকাশিত হয়।[১] ২০০৮-এর মে মাসে দুই খণ্ড একত্রে প্রকাশ করা হয়। প্রকাশক অন্যপ্রকাশ। প্রচ্ছদ ধ্রুব এষ

উৎসর্গ সম্পাদনা

এ উপন্যাসটি স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে উৎসর্গ করা হয়েছে। এটি তাকে উৎসর্গ করা দ্বিতীয় গ্রন্থ। প্রথম উৎসর্গীকৃত গ্রন্থটির নাম "চলে যায় বসন্তের দিন"; তখনো তাদের বিয়ে হয়নি। ১৯৯০ দশকের মধ্যভাগ থেকে হুমায়ূন আহমেদ তার গ্রন্থ উৎসর্গ করার সময় আকর্ষণীয় কথা লিখে আসছেন। মধ্যাহ্ন উৎসর্গ করতে গিয়ে তিনি লিখেছেনঃ
‍"মেহের আফরোজ শাওন
পরম করুণাময় ত্রিভুবনের শ্রেষ্ঠ উপহার তাকে দিয়েছেন।
তার কোলভর্তি নিষাদ নামের কোমল জোছনা। আমার মতো অভাজন
তাকে কি দিতে পারে? আমি দিলাম মধ্যাহ্ন।
তার কোলে জোছনা, মাথার উপর মধ্যাহ্ন। খারাপ কি?"

উল্লেখ্য, নিষাদ হুমায়ূন আহমেদের পুত্র।

কাহিনী সংক্ষেপ সম্পাদনা

উপন্যাসটির কাহিনী শুরু হয়েছে ১৯০৫-এ, গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে। ঐতিহাসিক পটভূমি নির্মাণের জন্য হুমায়ূন আহমেদ বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগের বাংলাদেশের নেত্রকোণা এলাকা বেছে নিয়েছেন। পঞ্চাশ বছর বয়স্ক প্রৌঢ় বৃদ্ধ হরিচরণের পুকুর ঘাটে বসে আছেন - এমন একটি দৃশ্য দিয়ে আখ্যানভাগের সূচনা। আর মৃত্যুরোগ থেকে মুক্তি পেতে নগ্নাবস্থায় শশাঙ্ক পাল একটি গাছকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন - এমন একটি দৃশ্য দিয়ে প্রথম খন্ডের সমাপ্তি।

মধ্যাহ্ন দূর অতীতের আবহে লালিত। এ উপন্যাসের কাঠামোয় হুমায়ূন আহমেদ একটি ঐতিহাসিক পটভূমিকে পরোক্ষে আশ্রয় করেছেন। ঐতিহাসিক উপন্যাস সচরাচর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা কেন্দ্র ক’রে আবর্তিত হয়। সেই অর্থে ‘মধ্যাহ্ন’ কোনো ঐতিহাসিক উপন্যাস নয়। এ উপন্যাসে হুমায়ূন আহমেদ তার জন্মপূর্ববর্তী বিংশ শতাব্দীর একটি বিশেষ কালখণ্ড পুনর্নির্মাণ করার প্রয়াস পেয়েছেন মাত্র। ইতিহাস ঝুলে আছে সময় রেখার মতো, নিছকই মঞ্চের বাইরে, যদিও বেশকিছু চরিত্র বাস্তব। মধ্যাহ্নে ইতিহাস আছে, ঐতিহাসিকতা নেই।

চরিত্রসমূহ সম্পাদনা

কাহিনী শুরু হয়েছে বান্ধবপুর নিবাসী সফল ও সৎ ব্যবসায়ী হরিচরণ সাহাকে নিয়ে যিনি মুসলমান একটি বালককে আদর করার দোষে সমাজচ্যুত হন এবং পরবর্তীতে ঋষিসুলভ জীবন বেছে নেন। এর পর একে-একে যুক্ত হয়েছে এলাকার ব্রাহ্মণ অম্বিকা ভট্টাচার্য ঘটনাক্রমে মুসলমান হ’তে হ’লে যার নাম হয় সিরাজুল ইসলাম ঠাকুর; কাঠমিস্ত্রি সুলেমান; সুলেমানের রূপবতী জুলেখা তালাকের পর যে আশ্রয় নেয় বেশ্যাপল্লীতে যদিও শেষাবধি কোলকাতায় গিয়ে সে চানবিবি নামে সুকণ্ঠি গায়িকা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে; সুলেমানের রূপবান পুত্র জহির; সোনাদিয়ার জমিদার বাবু শশাংক পাল; অন্যতম সমাজপতি ন্যায়রত্ন রামনিধি চট্টোপাধ্যায়; শল্লার দশআনির মুসলমান জমিদার নেয়ামত হোসেন এবং তার অর্থে নির্মিত জুম্মাঘরের ইমাম মাওলানা ইদরিস; সোনাগঞ্জ লঞ্চঘাটের টিকেটবাবু ধনু শেখ পরবর্তীকালে যে হয় লঞ্চের মালিক, জমিদার এবং বিপ্লবী জীবনলালকে ধরিয়ে দিয়ে লাভ করে ব্রিটিশরাজের দেয়া খানসাহেব উপাধি; কলিকাতা প্রবাসী মণিশংকর দেওয়ান; স্বদেশী-করা যুবক শশী ভট্টাচার্য যার প্রকৃত নাম কিরণ গোস্বামী এবং তার সতীর্থ জীবনলাল চট্টোপাধ্যায়; কবিরাজ সতীশ ভট্টাচার্যের কন্যা যমুনা যাকে ধর্ষণের কারণে সমাজপতিরা বেশ্যালয়ে আশ্রয় গ্রহণের বিধান দেন; অদূরবর্তী সোহাগগঞ্জ বাজারের রঙিলা নটিবাড়ির মালেকাইন সরযুবালা; মোহনগঞ্জের বরান্তর গ্রামের মসজিদের ইমাম এবং গায়ক আব্দুল হক যার ডাকনাম উকিল মুন্সী ও তার নিঃসন্তান স্ত্রী ‘লাবুসের মা’; মোহনগঞ্জের বাম গ্রামের বিদ্বান মানুষ শৈলজারঞ্জন মজুমদার এবং সর্বশেষে জোড়াসাঁকোর ব্রাহ্ম জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যিনি গান লেখেন, গানে সুর দেন। অনুপস্থিত থেকেও ভূমিকা রেখেছে হরিচরণ সাহার কন্যা শিউলি— সে শৈশবে পুকুরে ডুবে মারা গিয়েছিল।

মধ্যাহ্ন শুরু শেষ পর্যন্ত উপভোগ্য নানাকাহিনীর সমন্বিত অবয়ব। তবে একটি ঘটনা সর্বস্ব গল্পাবর্ত মাত্র। হরিচরণ সাহার ঋষি সুলভ চারিত্র্যের বিপরীতে জমিদার শশাঙ্ক পালের ভোগবাদিতা বা মাওলানা ইদরিসের নিষ্কলুষ ব্যক্তিমানসের বিপরীতে ধুরন্ধর ধনু শেখের নির্লজ্জতা ও শঠতার তুলনা অনেক প্রশ্ন জাগিয়ে তোলে। তালাকের পর কাঠমিস্ত্রি সুলেমানের স্ত্রী জুলেখা বাপের বাড়ি না গিয়ে বারবনিতার জীবন বেছে নেয়। তার এই কঠিন অথচ অকাতর সিদ্ধান্ত মানবমনের জটিল ও রহস্যময় দিকের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করে, পাঠককে ভাবিত করে। লেখকেরা এই সাধারণত এই জটিলতার ব্যাখ্যা দিতে অভ্যস্ত; তারা ঘটনার কার্যকারণ অনুসন্ধানে আগ্রহী। তাতে মননশীলতার স্বাক্ষর রচিত হয়, রচনার পরিধি বৃদ্ধি লাভ করে। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ কেবল ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। ঘটনার অনুসন্ধানে না গিয়ে তিনি সেই সব ঘটনা টেনে এনছেন যা পূর্বজদের রচনায় স্থান লাভ করেনি। কখনো কখনো অতিলৌকিক বা আধিভৌতিক ঘটনার অনায়াস সংগ্রন্থনে জাদুবাস্তবতার মোহ সৃষ্টি হয়েছে।

আলোচনা সম্পাদনা

মধ্যাহ্ন হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম প্রধান শিল্পকীর্তি। তার উপন্যাসগুলো সাধারণত ছোট মাপের হয়ে থাকে, বিপরীতে এটি একটি বড় মাপের উপন্যাস। ঐতিহাসিক না-হলেও এটি ইতিহাসাশ্রয়ী। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে গ্রাম বাংলার নগরায়ন, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, বিভিন্ন মানুষের চরিত্রের নানা দিক এই উপন্যাসে অঙ্কিত হয়েছে নানা আকর্ষণীয় ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে।

মধ্যাহ্নের গাঁথুনি আনুপূর্ব দৃঢ়; অভিন্ন একটি ছন্দ কাহিনী প্রবাহে সৌষাম্য রক্ষা করেছে, যা যে-কোনো বড় মাপের রচনার অন্যতম শর্ত। বিভিন্ন ঘটনার পরিসর নিয়ন্ত্রণ করেছেন তিনি সযত্ন মনোযোগে। ঘটনাবলির পরম্পরা রক্ষিত হয়েছে স্বাভাবিক ধারাবাহিকতায়। ঘটনা গ্রহণ ও বর্জ্জনে তিনি অসামান্য দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। পৃথিবী রূপ বোঝানোর জন্য শিল্পী রঙ-তুলি নিয়ে পুরো পৃথিবীর ছবি আঁকতে বসেন না; সহস্র দৃশ্যপট থেকে বাছাই ক’রে তিনি কয়েকটি দৃশ্যপট তৈরি করেন মাত্র। এখানেই তার বিবেচনাবোধ পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। এই নিরিখে হুমায়ূন আহমেদের বিবেচনাবোধ অসাধারণ। এই উপন্যাসে ঘটনা নির্বাচনের স্বাভাবিকতা প্রশ্নোর্ধ।

কেবল একটি বিশেষ সময়কে হুমায়ূন আহমেদ ধারণ করেন নি, বিভিন্ন রকম মানুষের চরিত্র এঁকেছেন যার মধ্যে রয়েছেন শিল্পচার্য জয়নুল আবেদিনও। কাহিনীর প্রয়োজনেই তিনি তৈরী করেছেন সম্ভব-অসম্ভব নানা চরিত্র। এ উপন্যাসে পুনর্বার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে লেখকের স্বল্প পরিসরে চরিত্রচিত্রণের অসামান্য ক্ষমতা। ইনিয়ে-বিনিয়ে বর্ণনা তার রচনায় পাওয়া যায় না। ঝটিতে মাত্র কয়েকটি বাক্যে একটি মানুষের ছবি তিনি পরিপূর্ণভাবে ফুটিয়ে তুলিতে পারেন। পাঁচ-সাতটি মোক্ষম সংলাপে ফুটে ওঠে একটি মানুষের চারিত্রিক প্রবণতা। বলা হয়েছে, পৃথিবীতে আর কোনো লেখক এত স্বল্প পরিসরে কোনো মানব চরিত্র সুনির্দিষ্টভাবে দাঁড় করাতে পারেন এমন উদাহরণ সহসা খুঁজে পাওয়া যায় না।

বাস্তবতার সঙ্গে অসম্ভবের সন্ধি হুমায়ূন আহমদের প্রিয় কৌশল যা মধ্যাহ্ন উপন্যাসেও লেখক দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছেন। নানা অলৌকিক ও আধিভৌতিক কাহিনীকণাকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রশ্রয় দিয়ে লেখক প্রমাণ করেছেন তিনি জাদু বাস্তবতার দক্ষ কারিগর। অন্যান্য অনেক রচনার মতো এ উপন্যাসেও অসম্ভবের বহুবর্ণ উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। অতুলনীয় বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ বয়ান করেছেন মানুষের অভিজ্ঞতা, কল্পনা, বিশ্বাস ও চিন্তার ভারসাম্যমণ্ডিত সংশ্লেষ। যদিও মধ্যাহ্ন একটি ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস, তবু প্রিয় এই কৌশলটি সার্থকভাবেই প্রয়োগ করেছেন লেখক এই রচনায়। অতিলৌকিক ও অতিপ্রাকৃতিক ঘটনাবলি রহস্যের ঘেরাটোপে বন্দি থেকেও বিশ্বাসযোগ্যতার জোরে স্বাভাবিক মনে হয়। তার সৃষ্ট ঘটনাগুলো উপভোগ্য অথচ কষ্টকল্পনা কিংবা অপ্রাসঙ্গিকতার অভিযোগ দায়ের করার অবকাশ নেই।

যদিও পাঠকের মনোরঞ্জনই গল্পকার হুমায়ূন আহমেদের প্রধান লক্ষ্য, তবু সমাজের সর্বপ্রকার চালচিত্র হুমায়ূন আহমেদের গল্পে স্থান লাভ করেছে। সর্বপ্রকার মানবচরিত্র ভূমিকা রেখেছে তার গল্পের মানচিত্রে। ব্যাপক অভিজ্ঞতার সঙ্গে সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ও কল্পনাশক্তি যুক্ত হওয়ার ফলে তার চরিত্রগুলো সর্বদাই কৌতূহলোদ্দীপক। এ প্রসঙ্গে প্রণিধানযোগ্য যে সমাজ ও মানুষের সঙ্গে এই লেখকের সম্পর্ক নির্বিরোধী। ফলে চরিত্রচিত্রণে তার নিঃসক্ত অবস্থান স্পষ্ট। তার রচনায় পাঁকের ছবি থেকে পদ্ম বাদ পড়ে যায় নি। হুমায়ূন আহমেদের চরিত্ররা ‘ভালো-মন্দ সকলি মিলায়ে’ মানুষ। চরিত্রচিত্রণে তিনি রাজনীতি করেন না; সাহিত্যের মানুষদের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের সম্পর্ক অরাজনৈতিক। প্রতিহিংসাপরায়ণতা বা বিদ্বেষের চরিতার্থতায় ব্যবহৃত হয়নি তার কলম। লেখকের রাজনীতি শিল্পবিরোধী। হুমায়ূন আহমেদের গল্পে সকল চরিত্র সমান গুরুত্ব লাভ করে, যেমনটি দেখা যায় মিলান কুণ্ডেরার উপন্যাসে।

বাংলা উপন্যাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য কাহিনী ও চরিত্রের আদি-মধ্য-অন্ত ধারাবাহিক বিস্তার। যেমন তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় একটি সমান্বয়ী ভঙ্গিতে রাঢ় অঞ্চলের মানুষের জীবনচিত্র চিত্রায়িত করেছেন। অন্যদিকে সাধারণত মূল কোনো একটি চরিত্রকে কেন্দ্র ক’রে আবর্তিত হয় আখ্যানভাগ ইংরেজিভাষী সাহিত্যবিদরা যাকে বলেন প্রোটাগনিস্ট। মধ্যাহ্ন উপন্যাসে না আছে কাহিনীর আদি-মধ্য-অন্ত ধারাবাহিক বিস্তার, না আছে কোন প্রোটাগনিস্ট। কার্যত হুমায়ূন আহমেদের অন্য সব উপন্যাসের মতোই মধ্যাহ্ন একটি বহুকেন্দ্রিক বিবরণী যার মধ্যে লেখকের দৃষ্টি কেবল কয়েকটি সমসাময়িক ঘটনার ওপর আলো ফেলে গেছে। ফলে মধ্যাহ্ন যাকে বলে একটি বিশেষ জনপদের আলেখ্য সে রকম কোনো ঐতিহাসিক দলিলে পর্যবসিত হয়নি। হুমায়ূন আহমদের অন্যান্য রচনার মতোই মধ্যাহ্ন কয়েকটি মানব চরিত্রের একটি উপভোগ্য উপাখ্যান। কোনো বিশেষ বক্তব্য প্রতিষ্ঠার জন্য এটি লেখা হয়নি, লেখক কোনো বিশেষ দর্শনোপলব্ধি থেকেও এটি লিখেছেন এমন ভাবার কারণ পরিদৃষ্ট হয় না, কোনো বানোয়াট জীবনজিজ্ঞাসার ভারে মধ্যাহ্ন ভারাক্রান্ত নয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. নন্দী, দীপন (১৪ জুলাই ২০১৭)। "সময়কে ছাড়িয়ে 'মধ্যাহ্ন'"সমকাল। ১৩ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৯ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা