ভুটানের জাতীয় জাদুঘর

ভুটানের জাদুঘর

ভুটানের জাতীয় জাদুঘর হলো পশ্চিম ভুটানের পারো শহরে অবস্থিত একটি সাংস্কৃতিক জাদুঘর। পারো শহরটি গৌরবময় ইতিহাস এবং অসংখ্য পবিত্র স্থানে সমৃদ্ধ। পারো উপত্যকাকে পৃথিবীর সবশেষ 'শ্যাংরি-লা' (কাল্পনিক পৌরানিক ভূমি) হিসাবে বিবেচনা হয়। তা জং নামে পরিচিত বহু পুরোনো একটি ভবনকে ভুটানের তৃতীয় বংশের রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুকের নির্দেশে ১৯৬৮ সালে সংস্কার করে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। তা জং মানে হলো ওয়াচ টাওয়ার। এখানে দাঁড়ালে নিচের পারো উপত্যকার অপরূপ সব সৌন্দর্য দেখা যায়। ব্রোঞ্জের মূর্তি এবং চিত্রাঙ্কনের সুন্দর চিত্রসহ ভুটানি শিল্পের কিছু সেরা নমুনা রাখার জন্য এখানে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছিল। ব্যাপক সংগ্রহ রক্ষণের জন্য এখানে উপযুক্ত গ্যালারিও নির্মাণ করা হয়। শিল্পের কাজগুলি বৈজ্ঞানিক ও মার্জিতভাবে এখানে প্রদর্শিত করা হয়।

ভুটানের জাতীয় জাদুঘর
ভুটানের জাতীয় জাদুঘর
মানচিত্র
স্থাপিত১৯৬৮
অবস্থানপারো, ভুটান
স্থানাঙ্ক২৭°২৫′৪৩″ উত্তর ৮৯°২৫′৩২″ পূর্ব / ২৭.৪২৮৭৩° উত্তর ৮৯.৪২৫৫৬° পূর্ব / 27.42873; 89.42556
সংগ্রহের আকার৩০০০
পরিচালকখেনপো ফুন্টশোক তাশি
মালিকভুটান সরকার
টেনচেন গুম্ফা থেকে পারোর দৃশ্য

বর্তমানে জাতীয় জাদুঘরের দখলে রয়েছে ভুটানি শিল্পের ৩,০০০টিরও বেশি কাজ, যা ভুটানের ১,৫০০ বছরেরও বেশি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সকলের সামনে তুলে ধরা হয়। বিভিন্ন সৃজনশীল ঐতিহ্য এবং শৃঙ্খলার সাথে বর্তমানের ও অতীতের একটি অসাধারণ মিশ্রণের প্রতিনিধিত্ব এই জাদুঘরে এলে দেখা যায়। প্রদর্শনীতে মূল্যবান বৌদ্ধ নিদর্শন রয়েছে যা পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের আকর্ষণ করে। জাদুঘরটি ছয়টি তলা নিয়ে গঠিত। এখানকার প্রদর্শনী সংগ্রহালয়ে বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস, দেশের ইতিহাস, নৃতাত্ত্বিক বিষয়ে নানান সংগ্রহ রয়েছে। এই জাতীয় জাদুঘরে দুটি বেদীও রয়েছে, যা ধর্মীয় ইতিহাসের দিক থেকে বিশেষ পরিচয় বহন করে। দেশী ও বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্য ভুটানের জাতীয় জাদুঘরটি একটি প্রধান আকর্ষণ।

ভুটানে জাদুঘর আন্দোলনের সূত্রপাত বেশ পুরানো। তিব্বতের ৩৩তম বৌদ্ধ রাজা স্রোংটসান গাম্পোর দ্বারা খ্রিস্টীয় ৭ ম শতাব্দীতে পারো কিচু লাখাং এবং বুমথাং জাম্পল লাখাং নির্মাণের মাধ্যমে মঠ ও মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় এই আন্দোলনের খোঁজ পাওয়া যায়।[১]

ইতিহাস সম্পাদনা

পারোর তা-জং-এর ঐতিহাসিক ভবনে ভুটানের জাতীয় জাদুঘরটি রয়েছে। ১৯৪৯ সালে পারো ভ্যালির প্রথম গভর্নর, পনলপ তেনজিন দ্রুকদ্রা দ্বারা এই জাদুঘরটি নির্মিত হয়েছিল, যিনি দ্বিতীয় দ্রুক দেশি (ভুটানের অস্থায়ী প্রধান) হয়েছিলেন। ১৬৫৬ সাল থেকে ১৬৬৮ পর্যন্ত দেশটি শাসন করেছিলেন। তিনি ঝাবদ্রুং নগাওয়াং নামগেলের সৎ ভাইও ছিলেন।

তা-জং অর্থাৎ ওয়াচ টাওয়ারটি ১৬৫১ সালে সম্পন্ন হয়েছিল। এটি তিব্বত আক্রমণকারী বাহিনীর জন্য একটি আউটপোস্ট এবং ওয়াচ টাওয়ার হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Dorji, Chenkyo Tshering (২০০৫)। A compendium of chief Kagyu masters: = Bka' brgyud bla chen rnams kyi don bsdus। Published by Tandin Dolma, in collabortion with Prominent Publishers। আইএসবিএন 978-81-86239-17-9