পারো ভুটানের একটি শহর এবং পারো জেলার নির্বাচনকেন্দ্র। এটি পারো উপত্যকায় অবস্থিত। পারো একটি ঐতিহাসিক শহর যেখানে বিভিন্ন পবিত্র স্থান এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা ছড়িয়ে আছে। এখানেই ভুটানের একমাত্র বিমানবন্দর পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অবস্থিত।

পারো
སྤ་རོ་
উপর থেকে পারো
উপর থেকে পারো
পারো ভূটান-এ অবস্থিত
পারো
পারো
Location in Bhutan
স্থানাঙ্ক: ২৭°২৬′ উত্তর ৮৯°২৫′ পূর্ব / ২৭.৪৩৩° উত্তর ৮৯.৪১৭° পূর্ব / 27.433; 89.417
দেশ ভুটান
জেলাপারো জেলা
GewogWangchang Gewog
Thromdeপারো
উচ্চতা་ at Paro Airport৭,২০০ ফুট (২,২০০ মিটার)
জনসংখ্যা
 • মোট১৫,০০০
সময় অঞ্চলBTT (ইউটিসি+6)
এলাকা কোড+975-8
ClimateCwb

ইতিহাস সম্পাদনা

পারো উপত্যকার দুর্গ আশ্রম রিনপুং ডিজং এর এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। দশম শতকের শুরুতে এই স্থানে পদ্মসম্ভব প্রথম একটি আশ্রম স্থাপন করেন। ১৬৪৪ সালে পুরনো ভিত্তির উপর ঙ্গাগ-দ্বাং-র্নাম-র্গ্যাল (ভুটান) একটি বড় আশ্রম নির্মাণ করেন। শতাব্দীব্যাপী এই পাঁচতলা ভবনটি তিব্বতীয়দের বহুবিধ আক্রমণ থেকে একটি কার্যকর সুরক্ষা দিয়েছে।[১]

কাদামাটির পরিবর্তে প্রস্তর দিয়ে গড়া এই ডিজং এর নাম রাখা হয়েছে রিনপুং যার অর্থ ‘রত্নের স্তূপ’। কিন্তু ১৯০৭ সালে অগ্নিকাণ্ডে রিনপুং এর ‘থংদেল’ নামক একটি তুলায় অঙ্কিত চিত্র ব্যতীত সব সম্পদ ধ্বংস হয়ে যায়। [১] অগ্নিকাণ্ডের পর পেলপ দাওয়া পেঞ্জর, পারো ডিজংটি পুনর্নির্মাণ করেন। এর দেয়ালগুলো পবিত্র মুখোশ ও পরিচ্ছদে সুশোভিত। কয়েক শতক আগে দাওয়া পেঞ্জর অন্যদের সাহায্য করেছিল, আর তার উত্তরসূরী পেনলপ ৎশেরিং অধুনা এই কাজ করেন।[১]

ডিজং পর্বতের উপরে একটি প্রাচীন পর্যবেক্ষণ কক্ষ রয়েছে যা ১৯৬৭ সাল থেকে ভুটানের জাতীয় জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পাহাড়ের উপরে গ্রেগর থানবিচলের এর সৌধ ও প্রতিকৃতি আছে, যিনি ১৯৯৫ সালে ক্ষমতা লাভ করেছিলেন। ডিজং এর নিচে একটি মধ্যযুগীয় সেতু বরাবর পেনলপ ৎশেরিং পেঞ্জর এর রাজকীয় ভবন ‘আগয়েন পেলরি প্রাসাদ’ অবস্থিত।[১]

স্থাপত্যশৈলী সম্পাদনা

মূল সড়কের পাশে ছোট ছোট দোকান, প্রতিষ্ঠান, রেস্তরা প্রভৃতির ঐতিহ্যবাহী একটি পাড়া দেখা যায়। [২] নতুন সেতুর কাছে ১৫ শতকের একটি পুরনো মন্দির দুংৎসে হাখাং রয়েছে, এর বেড়া থেকেই উগায়েন পেরলি প্রাসাদ দেখা যায়। [২] রাজপরিবারের সদস্যরা এখানে থাকেন। কাছেই একটি পুরনো সেতু আছে। উল্লেখযোগ্য হোটেলগুলোর মধ্যে ওলাথাং হোটেলটি বেশ অলঙ্কৃত ও সুসজ্জিত।[২]

পারোর ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) দূরে বিখ্যাত ও পবিত্র তাকস্থাং (অর্থ বাঘের বাড়ি) আশ্রম রয়েছে। এটি প্রায় এক হাজার মিটার (৩২৮১ ফুট) খাড়া উঁচু পর্বতঢালে অবস্থিত। এই স্থানটি ভুটানিয়দের নিকট খুব পবিত্র। তারা বিশ্বাস করে ভুটানের বৌদ্ধধর্মের জনক গুরু রিনপোচ (পদ্মসম্ভব) ব্যাঘ্রপৃষ্ঠে করে এখানে এসেছিলেন। বাঘের বাড়ি ভ্রমণ করতে সোজা পথে প্রায় তিন ঘণ্টা লাগে। বাঘের বাড়ি থেকে পারো শহরের সৌন্দর্য দেখা যায়। এর ১৬ কিলোমিটার (১০ মাইল) দূরে আরেকটি দুর্গআশ্রম দ্রুকয়েল ডিজং এর ধ্বংসাবশেষ পর্যন্ত একটি রাস্তা গেছে, যেটি ১৯৫১ সালে অগ্নিকাণ্ডেআংশিক ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। [২]

বিমানবন্দর সম্পাদনা

পারো বিমানবন্দরকে ‘পৃথিবীর সবচেয়ে সংকটপূর্ণ বাণিজ্যিক বিমানবন্দর’ বলা হয়।[৩] এর মাত্র একটি রানওয়ে আছে। উড়োজাহাজকে এপ্রোচে ৫৫০০ মিটার হিমালয় পর্বতশৃ্ঙ্গ পার হয়ে ১৯৮০ মিটার রানওয়ে দিয়ে যেতে হয়। এলাকাটির গড় উচ্চতা অত্যন্ত মাত্রায় কম হওয়ায় এর প্রতিকূলতা দ্বিগুণ কঠিন। ফলে মুষ্টিমেয় সংখ্যক বৈমানিক এখানে উড়োজাহাজ চালানোর অনুমতি পান (২০১৪ এর ডিসেম্বরে মাত্র ৮ জন)। প্রতিবছর প্রায় ৩০০০০ যাত্রী এই বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।

চিত্রশালা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Paro - the beautiful valley"East-Himalaya.com। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০০৮ 
  2. "In The Kingdom Of Bhutan"Global Sapiens। ৬ অক্টোবর ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০০৮ 
  3. [১] Paro Airport, atlas obscura (website), accessed 3 December 2014

৪.[২] Beatiful Photos of Paro,Bhutan

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা