ভুজঙ্গভূষণ ধর

বাঙালি বিপ্লবী

ভুজঙ্গভূষণ ধর (ইংরেজি: Vujangavushan Dhar) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব। তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। বিপ্লবী যুগান্তর দলের কর্মীরূপে বিভিন্ন রাজনৈতিক ডাকাতি এবং বৈপ্লবিক কার্যকলাপে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিলো। ১৯১৪ সালে ২৬ আগস্ট বিপ্লবের প্রয়োজনে রডা কোম্পানির অস্ত্রলুণ্ঠন করবার কাজে তিনি ছিলেন অন্যতম নেতা। আত্মোন্নতি সমিতির একজন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি ছিলেন।[১]

রডা কোম্পানির পিস্তল চুরি সম্পাদনা

১৯১৪ সনের ২৬ আগস্ট বিপিন গাঙ্গুলির দলের সভ্য শ্রীশচন্দ্র মিত্র বন্দুক ব্যবসায়ী রডা এন্ড কোম্পানির ৫০টি মশার পিস্তল এবং ৪৬ হাজার কার্তুজ সুকৌশলে অপহরণ করেন। শ্রীশচন্দ্র মিত্র এই কোম্পানির কর্মচারী ছিলেন। তিনি বিপ্লবী দলের জন্য চাকুরির মায়া ত্যাগ করে ফেরার হন। এই পিস্তল ও কার্তুজ বিভিন্ন স্থানে সরিয়ে ফেলা হয়। কতক পিস্তল ও কার্তুজ পুলিস হস্তগত করতে সক্ষম হয়। অবশিষ্ট পিস্তল ও কার্তুজ অনুশীলন সমিতিসহ বিভিন্ন বিপ্লবী দলের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। শ্রী হরিদাস দত্ত গাড়োয়ান সেজে গরুর গাড়িতে করে পিস্তল ও কার্তুজ অতুল কৃষ্ণ ঘোষের বাড়িতে নিয়ে যান। রডা কোম্পানির পিস্তল অপসারণ প্রসঙ্গে অতুল কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, নরেন্দ্র ভট্টাচার্য কয়েকজন সঙ্গীসহ সমস্ত পিস্তল ও কার্তুজ তার বাড়িতে রাত ৯টার সময় নিয়ে আসে। এরপর ২৬ আগস্ট দিবাগত রাত ৩টার দিকে মালামাল পুরোহিতের মারফৎ ময়মনসিংহের জমিদার গোপালদাস চৌধুরীর বাড়িতে সরান হয়। শেষ রাত্রে পুলিস অতুল বাবুর বাড়ি খানা তল্লাশি করে কিছু পেল না। এই পিস্তলগুলি হস্তগত হওয়ায় বাংলার বিপ্লবী দলগুলির ভেতরে সেসময় নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়। পুলিস এই উপলক্ষে খানা তল্লাশি করে অনুকূল মুখার্জি, গিরিন্দ্র মুখার্জি, কালিদাস বসু, ভুজঙ্গভূষণ ধর, হরিদাস দত্ত, নরেন্দ্র ব্যানার্জিসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৫১৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গন, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৮৬-১৮৭।