ভাণ্ডারা জেলা
ভাণ্ডারা জেলা ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের একটি প্রশাসনিক জেলা। জেলা সদর ভান্ডারা শহরে অবস্থিত। জেলাটির আয়তন ৪০৮৭ বর্গকিমি এবং এর জনসংখ্যা ১,২০০,৩৩৪ জন (৬০৫,৫২০ জন পুরুষ এবং ৫৯৪,৮১৪ জন মহিলা) জনসংখ্যার ১৯.৪৮% শহরাঞ্চলে বসবাস করেন[১]।
ভান্ডারা জেলা | |
---|---|
মহারাষ্ট্রের জেলা | |
মহারাষ্ট্রের মধ্যে ভান্ডারা জেলার অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | মহারাষ্ট্র |
বিভাগ | নাগপুর বিভাগ |
সদর শহর | ভান্ডারা |
তালুক | ১. ভান্ডারা, ২. টুমসর,৩. পাউনি and ৪. মোহাড়ি, ৫. সাকোলি, ৬. লাখনি, ৭. লাখান্দুর |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | ভাণ্ডারা-গোণ্ডিয়া লোকসভা কেন্দ্র (কিছু অংশ রয়েছে গোন্ডিয়া জেলাতেও) |
আয়তন | |
• মোট | ৪,০৮৭ বর্গকিমি (১,৫৭৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১২,০০,৩৩৪ |
• জনঘনত্ব | ২৯০/বর্গকিমি (৭৬০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ১৯.৪৮% |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় স্থানীয় সময় (ইউটিসি+05:30) |
জাতীয় সড়ক | NH53, NH247, NH353C. |
Average annual precipitation | 1327 mm |
ওয়েবসাইট | bhandara |
ভান্ডারা "হ্রদের জেলা" নামেও পরিচিত। এছাড়া পিতলের পণ্য উতপাদনের কারণে এটি "ব্রাস সিটি" নামেও পরিচিত। ভান্ডারায় অম্বাগড় দুর্গ, ব্রাহ্মী, চিঞ্চগড় ও দিঘোরীর মতো কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে।
জেলাটি সশস্ত্র কারখানা বোর্ডের অর্ডন্যান্স কারখানার জন্যেও পরিচিত; এই কারখানাতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী র জন্যে অস্ত্র তৈরি করা হয়।
ইতিহাস
সম্পাদনাসপ্তম শতাব্দীতে, জেলাটি ছত্তিশগড়ের হৈহয় রাজপুত রাজাদের রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল; এই রাজ্যটি মহাকোশল নামে পরিচিত ছিল। জেলার নামটি 'ভন্নারা' থেকে উদ্ভূত, রতনপুরের একটি পাথরের শিলালিপিতে এই নামটির উল্লেখ করা হয়েছে; রতনপুরের শিলালিপিটি অন্তত একাদশ শতকের, যার অর্থ একাদশ শতকেও ভান্ডারা একটি জনপদরূপে পরিচিত ছিল। দ্বাদশ শতকে এই অঞ্চল হৈহয়দের হাত থেকে পানওয়ার রাজপুতদের দ্বারা অধিগৃহীত হয়। এর পরে এটি গোন্ড রাজাদের অধীনে আসে।
সপ্তদশ শতাব্দীতে, জেলাটিকে মারাঠা সাম্রাজ্যের পেশোয়াদের দ্বারা বেরারের একটি অংশে পরিণত হয়েছিল। ১৬৯৯ সালে, অঞ্চলটি বিদর্ভ এবং বেরার অঞ্চল সহ পরোসজি ভোঁসলের নিয়ন্ত্রণে আসে। বিদর্ভের রাঘোজি ভোঁসলে ১৭৪৩ সালে এই অঞ্চলের পরিচালক হন এবং ১৭৫৫ সালে তাঁর মৃত্যুর পরে পুত্র জানোজি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। ১৮১৮ থেকে ১৮৩০ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চল ভোঁসলেরাই শাসন করে এবং ১৮২১ সালে ভান্ডারা জেলা গঠিত হয়।
১৮৫০-এর দশকে হায়দ্রাবাদের নিজাম এই অঞ্চল আক্রমণ করে এবং পেশোয়দের ক্ষমতাচ্যুত করে এই অঞ্চলকে নিজাম রাজবংশের নিয়ন্ত্রণে আনে। ১৯০৩ সালে বেরারকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে তুলে দেন তারা। ১৯৫৬ সালে রাজ্যগুলির পুনর্গঠনের মাধ্যমে, ভান্ডারাকে মধ্যপ্রদেশ রাজ্য থেকে বম্বে প্রভিন্সে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৬০ সালে মহারাষ্ট্র গঠনের পরে, ভান্ডারাকে এই রাজ্যের জেলা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।পূর্ববর্তী ভাণ্ডারা জেলাটি ১৯ মে ১৯৯৯ সালে দ্বিখণ্ডিত হয় এবং ভান্ডারা এবং গোন্ডিয়া নামে দুটি নতুন জেলা গঠিত হয়।
ভূগোল
সম্পাদনাভান্ডারা মহারাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান প্রশাসনিক জেলা এবং এটি ২১°১০'উত্তর অক্ষাংশ এবং ৭৯°৩৯' পূর্ব দ্রাঘিমায় নাগপুর বিভাগে অবস্থিত। জেলাটি উত্তরে মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট জেলা এবং দক্ষিণে চন্দ্রপুর জেলা, পূর্বে গোন্ডিয়া জেলা এবং পশ্চিমে নাগপুর জেলা দ্বারা সীমাবদ্ধ।৩৭১৬ বর্গকিলোমিটার ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট ভাণ্ডারা জেলাটি তিনটি মহকুমা ভাণ্ডারা, তুমসার ও সাকোলিতে বিভক্ত। ভাণ্ডারা মহকুমাটি দুটি তালুকায় বিভক্ত: ভান্ডারা এবং পাউনি।তুমসার মহকুমায় রয়েছে তুমসার ও মহাদি এবং সাকোলি মহকুমাটি তিনটি তালুকায় বিভক্ত: সাকোলি, লাখানী এবং লখান্দুর।
জনমিতি
সম্পাদনাবছর | জন. | ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ২,৭৬,৩০৬ | — |
১৯১১ | ৩,২২,২৭৭ | +১৬.৬% |
১৯২১ | ৩,৩৭,১৯৩ | +৪.৬% |
১৯৩১ | ৩,৮৭,৩৮৮ | +১৪.৯% |
১৯৪১ | ৪,৫২,৫১২ | +১৬.৮% |
১৯৫১ | ৫,০৩,৫৩৬ | +১১.৩% |
১৯৬১ | ৫,৯৩,৮৯৮ | +১৭.৯% |
১৯৭১ | ৭,৩১,০৫৩ | +২৩.১% |
১৯৮১ | ৮,৫০,৪৮৮ | +১৬.৩% |
১৯৯১ | ১০,২১,৪০৮ | +২০.১% |
২০০১ | ১১,৩৬,১৪৬ | +১১.২% |
২০১১ | ১২,০০,৩৩৪ | +৫.৬% |
২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভাণ্ডারা জেলার জনসংখ্যা ১,২০০,৩৩৪ জন[২] যা পূর্ব তিমোর[৩] বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড রাজ্যের সমান সমান। জনসংখ্যার বিচারে ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে ভান্ডারার অবস্থান ৩৯৭তম।
জেলাটির জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৯৪ জন (৭৬০ জন/বর্গ মাইল)। ২০০১-২০১১ এর দশকে এর জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৬৫%। ভাণ্ডারায় প্রতি ১০০০ পুরুষ পিছু ৯৮২ জন মহিলা রয়েছেন এবং সাক্ষরতার হার ৮৩.৭৬%।
ভাষা ও সংস্কৃতি
সম্পাদনাভারতের ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, জেলার জনসংখ্যার ৯৩.১৯% মারাঠি, ৪.৯৯% হিন্দি এবং ০.৪৮% গোন্ডি তাদের প্রথম ভাষা হিসাবে ব্যবহার করেন।[৪]
অর্থনীতি
সম্পাদনাভান্ডারার অর্থনীতি মূলত কৃষি, উতপাদন ও বনজ সম্পদের উপর নির্ভরশীল। বেশ কয়েকটি প্রাচীন মন্দির এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন, হ্রদ, উদ্যান এবং অভয়ারণ্য সহ, ভান্ডারা একটি ভালো পর্যটন কেন্দ্র এবং পর্যটন থেকেও বেশ কিছু আয় হয়।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Archived copy"। ২০১০-০১-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২৭।
- ↑ "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০।
- ↑ US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। ২০১১-০৯-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-০১।
Timor-Leste 1,177,834 July 2011 est.
- ↑ 2011 Census of India, Population By Mother Tongue
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ভান্ডার জেলা ওয়েবসাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে