বোধ জনগণ, যারা খাস ভোদি নামেও পরিচিত,[১] তারা ভারতের হিমাচল প্রদেশের একটি জাতিগোষ্ঠী। এদের মূলত লাহৌল তহসিল ছাড়াও লাহৌল এবং স্পিতি জেলার প্রধানত ভাগাচন্দ্র উপত্যকায় দেখতে পাওয়া যায়।[২] তবে অল্প কিছু হলেও পট্টানি উপত্যকায়, [১] মিয়ার উপত্যকায় এবং পাঙ্গি, হিমাচল প্রদেশ ও পদ্দার উপত্যকার উপরের অংশে, এছাড়াও জম্মু ও কাশ্মীরে এদের বসবাস আছে।

গান্ধোলা মঠের কাছে বোধ মা ও শিশু

ধর্ম সম্পাদনা

এদের ধর্ম প্রধানত বৌদ্ধধর্ম এবং এর সাথে আছে সর্বপ্রাণবাদশৈব ধর্ম। তাদের মধ্যে ওঝাবাদী এবং লামাবাদী (বৌদ্ধধর্মের একটি রূপ যা বিস্তৃত আচার-অনুষ্ঠান এবং একটি শক্তিশালী শ্রেণিবিন্যাস সংগঠন দ্বারা চিহ্নিত) বিশ্বাসের পাশাপাশি তাদের মার্শাল ঐতিহ্যেরও মিশ্রণ রয়েছে।

বর্ণ সম্পাদনা

বর্ণ অনুসারে, এরা রাজপুত, ঠাকুর বা ক্ষত্রিয় হিসাবে চিহ্নিত হয়, যদিও এখানে বর্ণের নিয়মগুলি সমতলের মতো অত কঠোর নয়।

বিভাগ সম্পাদনা

ঐতিহাসিকভাবে, সাধারণ প্রশাসন ও রাজস্ব সংগ্রহের উদ্দেশ্যে চাম্বা, কুল্লু বা লাদাখের রাজারা এলাকার ৩ - ৪টি বিশিষ্ট পরিবারকে রানা, উজির বা ঠাকুর উপাধি দিয়েছিলেন। কিছু পরিবার / গোষ্ঠী এখানে নামকরা জমিদার / জায়গিরদার ছিল। গত বহু শতাব্দী ধরে লাদাখ, কুল্লু এবং চাম্বার শাসকদের আধিপত্যের অধীনে এই অঞ্চলটি থাকার কারণে এখানে একটি উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক এবং জাতিগত মিশ্রণ দেখা গেছে।

ভাষা সম্পাদনা

এদের কথ্য ভাষা উপত্যকা থেকে উপত্যকায় ভিন্ন হয়, কিছু উপভাষা কুমায়ূনীর খুব কাছাকাছি, অন্যগুলি চাম্ব্যালি এবং দারির সাথে মিশ্রিত।

তারা প্রগতিশীল, উদ্যোগী, সৎ। এরা বহু শতাব্দী ধরে প্রাচীন ভারত-তিব্বত-নেপাল বাণিজ্য পথের সাথে জড়িত ছিল। এখানকার গোষ্ঠীগুলির মানুষের নাম"-পা" প্রত্যয় দিয়ে শেষ হতে পারে, আবার "তা" প্রত্যয় দিয়েও হতে পারে। পা" প্রত্যয় দিয়ে শেষ হওয়া পারিবারিক দল বা সংগঠিত গোষ্ঠীতে নাম হয় বরপা, কার্পা, থোলাকপা, চেরজিপা, গেরুমশিংপা, খিংগোপা ইত্যাদি। আবার "তা" প্রত্যয় দিয়ে শেষ হওয়া নাম, যেমন খিমতা, জিনতা, ব্রক্ত, ব্রাগতা, ইত্যাদি, এগুলি সিমলা এলাকার পরিবার / গোষ্ঠীর নামে পাওয়া যায়।[১]

হিমাচলের হস্ত ও কারুশিল্প সম্পাদনা

যে কোনো অঞ্চলের শিল্প সেই অঞ্চলের পরিবেশ, মানুষ ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন। এই বিবৃতিটি হিমাচল প্রদেশের নেগি এবং বোধ উপজাতিদের জন্য উপযুক্ত, যারা "পাহাড়ি" গহনা তৈরি করার জন্য তার চারপাশের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে উপাদানগুলি সংগ্রহ করে, কঠোরতা এবং দৃঢ়তার অনুভূতির প্রশ্বাস নিয়ে।[৩]<[৪]

যদিও কিছু সম্প্রদায়ের একেবারে অনন্য ঐতিহ্য রয়েছে, কিছু অলঙ্কার সবার কাছে সাধারণ। এর মধ্যে রয়েছে গলার অলঙ্কার যেমন হাঁসলি বা ছোট লকেট যাকে টোক বলা হয়। সবচেয়ে পছন্দের গলার হার হল কয়েন নেকলেস এবং সুতার নেকলেস। নকশাগুলি প্রকৃতি থেকে নেওয়া সাধারণ মোটিফ থেকে অনুপ্রাণিত এবং তার থেকে সূক্ষ্ম নিদর্শন তৈরি করা হয়।[৩][৪]

আরও দেখুন সম্পাদনা

  • ভাটি কিন্নরী

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bhasin এবং অন্যান্য 1983
  2. Singh, Bhasin এবং Singh 2008
  3. "Pink Beads Necklace"। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  4. >"Trifed Tribes India Brochure_28 pages 11 Nov 18_0.pdf" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩