বেদ প্রকাশ উপাধ্যায়

হিন্দু ও সংস্কৃত পণ্ডিত

বেদ প্রকাশ উপাধ্যায় (হিন্দি: वेद प्रकाश उपाध्याय, ইংরেজি: Ved Prakash Upaddhaya) একজন ভারতীয় সংস্কৃত পণ্ডিত, লেখক, প্রভাষক, অধ্যাপক, শিক্ষানুরাগী ও হিন্দু শাস্ত্রবিদ। তিনি সংস্কৃত সাহিত্য ও হিন্দুধর্মের উপর বহু গ্রন্থের প্রণেতা। ২০১৭ সালে তিনি হরিয়ানা সংস্কৃত একাডেমী থেকে সংস্কৃত সাহিত্য অলংকার সম্মাননা লাভ করেন।[৩] ২০১৭ সালে তিনি পাঞ্জাবি ভাষা বিভাগ থেকে সাহিত্য রত্ন পদক পান[৪] এবং ২০১৯ সালে সংস্কৃত ভাষায় অবদান রাখার জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতি পদক সম্মাননা ২০১৮ লাভ করেন।[৫][৬][৭][৮]

ডঃ, সংস্কৃত মহামহোপাধ্যায় (संस्कृत महामहोपाध्याय[১])

বেদ প্রকাশ উপাধ্যায়
জন্ম (1947-02-07) ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৭ (বয়স ৭৭)
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারতীয়
পেশাসংস্কৃত পণ্ডিত, লেখক, প্রভাষক, এমিরেটাস অধ্যাপক (পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়)[২], শিক্ষানুরাগী ও হিন্দু শাস্ত্রবিদ
পরিচিতির কারণমার্কুইসের হুজ হুর তালিকাভুক্ত শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিত্ব, কল্কি অবতার ও মোহাম্মদ সাহেব
পিতা-মাতারামজীবন/রামসজীবন সুমিত্রাদেবী উপাধ্যায়, প্রতিমাদেবী ত্রিপাঠী
পুরস্কারভারতের রাষ্ট্রপতি পদক সম্মাননা ২০১৮, হরিয়ানা সংস্কৃত একাডেমী থেকে সংস্কৃত সাহিত্য অলংকার সম্মাননা
উচ্চশিক্ষায়তনিক পটভূমি
শিক্ষাএলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় (প্রাক্তন প্রয়াগ বিশ্ববিদ্যালয়) গুরুনানক দেব বিশ্ববিদ্যালয়
মাতৃ-শিক্ষায়তনএলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়, গুরুনানক দেব বিশ্ববিদ্যালয়
উচ্চশিক্ষায়তনিক কর্ম
প্রতিষ্ঠানসংস্কৃত ভাষা, হিন্দুধর্ম, বেদ
উল্লেখযোগ্য কাজকল্কি অবতার ও মোহাম্মদ সাহেব

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

বেদ প্রকাশ উপাধ্যায় ২ ফেব্রুয়ারী ১৯৪৭ এ উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শ্রী রামজীবন/রামসজীবন সুমিত্রাদেবী উপাধ্যায় এবং মাতা প্রতিমাদেবী ত্রিপাঠী।[৯]

শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

উপাধ্যায় সংস্কৃত বেদে ডি.ফিল এবং ধর্মশাস্ত্র হিন্দু আইন বিষয়ে ডি.লিট, বেদ, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, সাহিত্য, তন্ত্র, ন্যায় ও শাস্তি ইত্যাদির একজন পণ্ডিত। ১৯৬৮ সালে এলাহবাদ ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার অফ আর্টস, ১৯৭০ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনের ডক্টরেট ও ১৯৭৫ গুরুনানক দেব বিশ্ববিদ্যালয়, স্নাতকোত্তর, ১৯৭৮ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন স্নাতক, ১৯৮১ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অফ লেটারস, ১৯৯৮ সাল জ্যোতিষ গবেষণা প্রকল্প থেকে জ্যোতিষশাস্ত্রে ডক্টরেট লাভ করেন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯৭০-১৯৭৪ গবেষণা সহকারী, বিশ্বেশ্বরানন্দ বিশ্ববন্ধু ইনস্টিটিউট সংস্কৃত ও ইন্ডোলজিক্যাল স্টাডিজ হোশিয়ারপুর, পাঞ্জাব, ভারত, ১৯৭৪, অধ্যক্ষ, ত্রিবেণী সংস্কৃত কলেজ এলাহাবাদ, ১৯৮১-১৯৮৪, সংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক, পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় চণ্ডীগড়, ভারত, ভারত, ১৯৮৪-১৯৯৫, সংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক, পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি চণ্ডীগড়ের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ বছর দায়িত্ব পালন করেন এবং অধ্যাপক ও সংস্কৃত বিভাগের প্রধান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তিনি নয়াদিল্লির শ্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী জাতীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে শাস্ত্রী, আচার্য ও বিশেষাচার্যের ক্লাসে তিন বছর সংস্কৃত মাধ্যমে অধ্যাপনা করেন।

প্রাপ্তি সম্পাদনা

তিনি ইউজিসি সিনিয়র ফেলোশিপ, শাস্ত্রচূড়ামণি পেয়েছেন। ভারত সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক তাকে হিমাচল প্রদেশের আদর্শ সংস্কৃত সংস্থার সভাপতি করেছে। তাঁর গবেষণা কর্মে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সম্মানিত ও পুরস্কৃত হন। এসব অর্জনের ভিত্তিতে ৮টি স্বর্ণপদক ও ৩৩টি সম্মাননা পেয়েছেন। এছাড়াও তিনি ১০০টিরও বেশি সংস্কৃত শাস্ত্রীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন, ২৬টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও গবেষণা সেমিনারে সভাপতিত্ব করেছেন, ১৫টি গবেষণা ও মৌলিক বই এবং ১০০টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর নির্দেশনায় ৭০ জন গবেষক ছাত্র এম.ফিল করেছেন ও ৬০ জন পিএইচডি করেছেন। বর্তমানে তিনি একাধিক কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্য। সংস্কৃতের প্রতি তার অবদানের কারণে দূরদর্শন ২২ মার্চ, ২০১২-এ এক ঘন্টার বিশেষ ব্যক্তিত্বের অনুষ্ঠানও প্রচার করে। তিনি বেশ কয়েকবার রেডিও বক্তৃতা দিয়েছেন, যার লক্ষ্য ছিল সংস্কৃতকে সর্বজনীন করা। মাননীয় মানবসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মহেন্দ্র নাথ পান্ডে কাশী বিদ্যা পরিষদে বিদ্যাভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সুরক্ষা ব্যুরোর পক্ষ থেকে ফিজির রাষ্ট্রদূত প্রভাকর ঝা তাকে মানবাধিকার রত্ন সম্মানে ভূষিত করেছেন। হরিয়ানা সংস্কৃত একাডেমী হরিয়ানা সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য হিসাবে, উপাধ্যায় একজন সক্রিয় অবদানকারী ছিলেন এবং হরিপ্রভা গবেষণা পত্রিকায় পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন। গুরুকুল মনসাদেবী কমপ্লেক্সের কাস্টডিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি বৈদিক সংশোধন মণ্ডলের চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব পালন করছেন।[১০]

পেশাজীবন সম্পাদনা

প্রিন্সিপাল ত্রিবেণী সংস্কৃত কলেজ এলাহাবাদ, ১৯৭০। গবেষণা সহকারী বিশ্বেশ্বরানন্দ বিশ্ববন্ধু ইনস্টিটিউট সংস্কৃত ও ইন্ডোলজিক্যাল স্টাডিজ, পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়, হোশিয়ারপুর, ভারত, ১৯৭০-৭৪, প্রভাষক ভারত, ১৯৭৪-৮১। সংস্কৃত পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক বিভাগ, চণ্ডীগড়, ভারত, ১৯৮১-১৯৮৪, পাঠক ভারত, ১৯৮৪-৯৫, চেয়ারম্যান ভারত, ১৯৯৫-৯৬, অধ্যাপক ভারত, ১৯৯৬-১৯৯৮, চেয়ারম্যান ভারত, ১৯৯৮ সাল থেকে।

অনারারি উপদেষ্টা আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট, রেলে, নর্থ ক্যারোলিনা। প্রধান উপদেষ্টা নেপাল জ্যোতিষ গবেষণা কেন্দ্র, ১৯৯৮, এশিয়ান অ্যাস্ট্রোলজার্স কংগ্রেস, ঢাকা, বাংলাদেশ। উপদেষ্টা ঋষিকুল কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিদ্যাপীঠ, চণ্ডীগড়।

কাজ সম্পাদনা

  • कल्कि अवतार और मुहम्मद साहब (কল্কি অবতার ও মোহাম্মদ সাহেব)[১১] (১৯৭০)
  • नरशंस और अंतिम ऋषि (নরাশংস ও অন্তিম ঋষি)[১২]
  • वेदों और पुराणों के आधार पर धार्मिक एकता की ज्योति (বেদ ও পুরাণের উপর ভিত্তি করে ধর্মীয় ঐক্যের জ্যোতি)
  • हिन्दू विधि एवं स्त्रोत (হিন্দু আইন ও সূত্র), আন্তর্জাতিক আইন সংস্থা, এলাহাবাদ, ১৯৮৬[১৩]
  • हिंदी साहित्य का इतिहास, काव्यशास्त्र एवं लिपि , विश्वविद्यालय प्रकाशन, वाराणसी, ২০১৪ (হিন্দি সাহিত্যের ইতিহাস, কবিতা এবং লিপি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশন, বারাণসী, ২০১৪)[১৪]
  • महाकवि श्री हनुमत प्रणीत हनुमन्नाटकम शिल्प एवं संवेदना (মহাকবি শ্রী হনুমত প্রণীত হনুমন্নাটকম শিল্প এবং সংবেদনা)
  • गद्य-विधा-चयनिका (গদ্য-বিধা-চয়নিকা) ২০১৩
  • आधुनिक हिन्दुविधिः धर्मशास्त्रीयविधिसहितः (আধুনিক হিন্দু বিধি: ধর্মশাস্ত্রীয়বিধিসহিত:) ২০১৮
  • भारतीय गौरव के उद्गाताः श्याम नारायण पाण्डेय (ভারতীয় গর্বের প্রতিষ্ঠাতা: শ্যাম নারায়ণ পান্ডে)

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "संस्कृत के विद्वान डॉ. वेदप्रकाश 24 जून को पहुंचेंगे पंचकूला, 60 से अधिक विद्यार्थियों को करवा चुके पीएचडी - mobile"পাঞ্জাব কেসরী। ২২ জুন ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০২৩ 
  2. সংষ্কৃতভিমর্শঃ (হিন্দি ভাষায়)। রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত সংস্থা। ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০২৩ 
  3. "डा वेद प्रकाश उपाध्याय और डा जगदीश प्रसाद सेमवाल को संस्कृत साहित्य अलंकार सम्मान - Ved Prakash Upadhyay and Jagdish Prasad Semwal award for Sanskrit literature"দৈনিক জাগরণ (হিন্দি ভাষায়)। ২৪ এপ্রিল ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০২৩ 
  4. "Sahitya Ratna Awards announced"দ্য ট্রিবিউন (চণ্ডীগড়)। ৪ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০২৩ 
  5. Prakash, Ishwar (৯ এপ্রিল ২০১৯)। "संस्कृत के क्षेत्र में विशिष्ट योगदान देने पर डा. वेद प्रकाश को मिला राष्ट्रपति सम्मान"Haryana Express। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০১৯ [অকার্যকর সংযোগ]
  6. "डॉ वेद प्रकाश उपाध्याय को मिलेगा राष्ट्रपति सम्मान-2018"khaskhabar। ২০ আগস্ট ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৯ 
  7. "डॉ. वेद प्रकाश उपाध्याय को राष्टऊपति सम्मान"aggarjanpatrika.com। ৯ এপ্রিল ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৯ 
  8. "Presidential Awards Scheme"www.sanskrit.nic.in (কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়)। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০২৩ 
  9. Bhartiya, Bhawanilal (১৯৯১)। Ārya lekhaka kośa: Āryasamāja tathā r̥shi Dayānanda vishayaka lekhana se juṛe sahastrādhika lekhakoṃ ke jīvana evaṃ kāryavr̥tta kā vistr̥ta vivaraṇa (হিন্দি ভাষায়)। Dayānanda Adhyayana Saṃsthāna। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০২৩ 
  10. "Authority – Vaidika Sanshodhana Mandala" (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ জুলাই ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০২৩ 
  11. Srivastava, Ram Pal। अवतारवाद - एक नई दृष्टि (হিন্দি ভাষায়)। Sankalp Publication। পৃষ্ঠা ১৯২। আইএসবিএন 978-93-91173-57-9। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০২৩ 
  12. Haque, M. Zeyaul। "A Hindu view of Islam"দ্য মিল্লি গেজেট। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০২৩ 
  13. Tripāṭhī, Pratibhā (১৯৯৩)। Aparādha evaṃ daṇḍa: smr̥tiyoṃ evam dharmasūtroṃ ke pariprekshya meṃ (হিন্দি ভাষায়)। Rākā Prakāśana। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২৩ 
  14. Agnihotri, Dr Brijendra (২১ ডিসেম্বর ২০২১)। Hindi Sahitya Ka Nikash (হিন্দি ভাষায়)। Book Rivers। পৃষ্ঠা 422। আইএসবিএন 978-93-5515-098-1। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২৩