বীণা সহস্রবুদ্ধে

ভারতীয় গায়িকা

বীণা সহস্রবুদ্ধে (১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ - ২৯ জুন ২০১৬) হলেন কানপুরের একজন শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী এবং হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সংগীতের সুরকার। তিনি মূলত গোয়ালিয়র ঘরানায় গান গাইতেন, তবে তার মধ্যে জয়পুর ঘরানাকিরানা ঘরানাও মিশ্রিত ছিল। সহস্রবুদ্ধে খেয়ালভজনের সংগীতশিল্পী হিসাবে পরিচিত ছিলেন।

বীণা সহস্রবুদ্ধে
হিন্দুস্থানী কন্ঠ সংগীতে বীণা সহস্রবুদ্ধের অবদানের জন্য, প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁকে ২০১৩ সালের সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত করছেন
জন্ম(১৯৪৮-০৯-১৪)১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮
মৃত্যু২৯ জুন ২০১৬(2016-06-29) (বয়স ৬৭)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাহিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী

সংগীত জীবন সম্পাদনা

বীণা সহস্রবুদ্ধে একটি সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা শঙ্কর শ্রীপদ বোড়াস ছিলেন কণ্ঠশিল্পী বিষ্ণু দিগম্বর পালুস্করের শিষ্য। তিনি তাঁর প্রাথমিক সংগীত শিক্ষা পিতার অধীনে এবং তার পরে তাঁর ভাই কাশীনাথ শঙ্কর বোড়াসের অধীনে শুরু করেছিলেন। শৈশবে তিনি কত্থক নাচ শিখতেন । সহস্রবুদ্ধের সংগীত শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন বলভন্তরাই ভট্ট, বসন্ত ঠাকুর এবং গজাননরাও যোশী

তিনি কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কন্ঠ উপস্থাপনা, সংস্কৃত সাহিত্য এবং ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন (১৯৬৮)। এরপর এবিজিএমভি মন্ডল থেকে কন্ঠ উপস্থাপনায় স্নাতকোত্তর (সংগীত অলঙ্কার) (১৯৬৯) এবং কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃত বিষয়ে আরেকটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন (১৯৭৯)। এবিজিএমভি মন্ডল তাঁকে ১৯৮৮ সালে কণ্ঠ সংগীতে ডক্টরেট ডিগ্রি (সংগীত প্রবীণ) প্রদান করেন। এরপর কয়েক বছর তিনি এসএনডিটি পুনে ক্যাম্পাসের সংগীত বিভাগের প্রধান ছিলেন।

তিনি সমগ্র ভারতবর্ষ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে পরিবেশন করেছিলেন।

শৈশব / প্রাথমিক দিনগুলি সম্পাদনা

তাঁর পিতা শঙ্কর শ্রীপদ বোড়াস ছিলেন ওমকারণাথ ঠাকুর এবং বিনায়করাও পটবর্ধনের সমসাময়িক। তিনি ছিলেন, বিখ্যাত গন্ধর্ব মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, বিষ্ণু দিগম্বর পালুস্করের প্রথম দিকের শিক্ষার্থী। মুম্বই থেকে কানপুরে এসে সংগীত ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পালুস্কার বিশেষভাবে বোড়াসকে মনোনীত করেছিলেন। বোড়াস এবং শান্তা ১৯২৬ সালে কানপুরে পাড়ি জমান। সেখানে তাঁরা একটি সংগীত সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং শিক্ষার্থীদের সংগীত শিক্ষা দেওয়া শুরু করেন। তাঁরা এই কাজে অন্য শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানান এবং সংগীতের প্রচার শুরু করেন। পালুস্করের গীতি ঐতিহ্যটি ছিল মূলত গোয়ালিয়র ঘরানার এবং মেজাজের সঙ্গে গাওয়া গান। কানপুর একটি শিল্প নগরী ছিল, এখানে কোন উল্লেখযোগ্য কোন সাংস্কৃতিক জীবন ছিলনা। বিশেষত শাস্ত্রীয় সংগীত তো ছিলইনা। ততদিন পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের অন্যান্য জায়গা যেমন বেনারস এবং এলাহাবাদ সংগীতে সমৃদ্ধ ছিল। বীণার মা শান্তাও একজন গায়ক ছিলেন এবং কানপুরের স্থানীয় বিদ্যালয়ে সংগীত শেখাতেন। বীণা সংগীতের এমন একটা পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছিলেন। বাবার কাছ থেকে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তিনি তাঁর ভাই কাশীনাথের কাছেও প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। [১]

মৃত্যু সম্পাদনা

বীণা তাই ২০১২সালের ২রা ডিসেম্বর, তাঁর শেষ সঙ্গীতানুষ্ঠানটি করেছিলেন। তারপরে তাঁর প্রগ্রেসিভ সুপার নিউক্লিয়ার পলসি নামে একটি বিরল অবক্ষয়জনিত স্নায়বিক অবস্থা রোগ ধরা পড়ে, যে অসুখে এক হাজার মানুষের মধ্যে একজন আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই। ২০১৬ সালের ২৯ শে জুন, তিনি মারা যান।

পুরস্কার সম্পাদনা

  • অল ইন্ডিয়া রেডিও কর্তৃক পরিচালিত ২৫ বছরের কম বয়সী শিল্পীদের মধ্যে জাতীয় প্রতিযোগিতায় কন্ঠ ধ্রুপদী বিভাগে একটি পুরস্কার (১৯৭২)
  • উত্তরপ্রদেশ সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার (১৯৯৩)
  • সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার (২০১৩)
  • অখিল ভারতীয় গন্ধর্ব মহাবিদ্যালয় মন্ডল (এবিএমএমভি) মরণোত্তর সম্মাননা ডিগ্রি "সংগীত মহামহীপাধ্যায়" (২০১৯) [২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Sai, Veejay। "Veena Sahasrabuddhe (1948-2016) was one of the most authentic Gwalior gayaki exponents"Scroll.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-০৮ 
  2. "आत्मतेजाचे गाणे"Maharashtra Times (মারাঠি ভাষায়)। ২০১৯-০৪-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-০৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা