বি.কে.জি.সি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

বাংলাদেশ হবিগঞ্জে নারী শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিকাশে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ

বসন্ত কুমারী গোপাল চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (সংক্ষেপে বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত) হবিগঞ্জে নারী শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিকাশে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। উক্ত প্রতিষ্ঠানটি ১৯২৩[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে অত্রাঞ্চলের নারী শিক্ষার প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। সিলেট শিক্ষাবোর্ডের অধীনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নীতিমালা অনুসরণ করে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়।

বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
অবস্থান
মানচিত্র
পুরাতন জেলখানার পাশে
প্রেসক্লাব রোড, হবিগঞ্জ

স্থানাঙ্ক২৪°২২′৩৩″ উত্তর ৯১°২৪′৪৯″ পূর্ব / ২৪.৩৭৫৭৬° উত্তর ৯১.৪১৩৪৯° পূর্ব / 24.37576; 91.41349
তথ্য
ধরনসরকারি বিদ্যালয়
নীতিবাক্যশিক্ষা-সংস্কৃতি-শান্তি-প্রগতি
প্রতিষ্ঠাকাল১ জানুয়ারি ১৯২৩ (1923-01-01)
বিদ্যালয় বোর্ডসিলেট শিক্ষা বোর্ড
বিদ্যালয় জেলাহবিগঞ্জ জেলা
বিদ্যালয় কোড১২৯৪১৮
প্রধান শিক্ষকসুধাংশু কুমার কর্মকার (ভার:)[২]
শিক্ষকমণ্ডলী৩৩ জন [৩]
শ্রেণী৩য়–১০ম
ভর্তি৩১/০৭/১৯৬৭
শিক্ষায়তনপ্রায় ০৯.৩০ একর (৩.৭৬ হেক্টর)
রং         নীল ও সাদা
শ্রেণী কার্যক্রমপ্রভাতী শাখা: ৩য়-১০ম
দিবা শাখা: ৩য়-১০ম
বিদ্যালয়ের ধরনবালিকা
ওয়েবসাইটbkgcgghs.edu.bd

ইতিহাস ও অবস্থান সম্পাদনা

বিদ্যালয়টি হবিগঞ্জ জেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র ৭নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। পাশেই রয়েছে পুরতন জেলখানা এবং হবিগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী জালাল স্টেডিয়াম, সুরবিতান ললিতকলা একাডেমী এবং বৃন্দাবন সরকারি কলেজের বাণিজ্য ও কলা অনুষদের ভবন। চারদিকে সুরক্ষা বেষ্টনীতে আবদ্ধ স্কুলটির একটি মাত্র ফটক রয়েছে আসা ও যাওয়ার জন্য। স্কুল চলাকালে ফটকে সার্বক্ষণিক প্রহরীর ব্যবস্থা ছাড়াও বিদ্যালয়টির আসা-যাওয়ার ফটকের আগে-পিছে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। যা প্রধান শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে সার্বক্ষণিক নিরীক্ষা করা হয়।

পোশাক সম্পাদনা

নীল      এবং সাদা      রং এর কাপড় দিয়ে তৈরী হয় বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পোশাক। সাদা ফিতা সংবলিত নীল রঙের ফ্রক, সাদা পায়জামা, নীল রঙের স্কার্ফ (দিবা শাখা)এবং সাদা রঙের স্কার্ফ (প্রভাতী শাখা)ব্যবহার করা হয়।

শিক্ষা পদ্ধতি সম্পাদনা

এই বিদ্যালয়টিতে তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা মাধ্যমে পাঠদান করা হয়। প্রতিটি শ্রেণী বিভিন্ন শিফট ও শাখায় বিভক্ত। বিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা চালু আছে। প্রতি বছরই তৃতীয়ষষ্ঠ শ্রেণীতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এর নীতিমালা অনুসরণপূর্বক জেলা শিক্ষা অফিসারের তত্ত্বাবধানে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন ছাত্রীদের ভর্তি করা হয়।[৪][৫]

শ্রেণি ও শাখা ব্যবস্থা সম্পাদনা

বিদ্যালয়টির লেখাপড়ার মান ও প্রতিবছর ঈর্ষণীয় সফলতার কারণে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি বিবেচনা করা হয়।[৬] আর তাই প্রতি বছরই শত শত ছাত্রী ভর্তির সুযোগ নিতে উন্মুখ হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ে উপচে পড়া ছাত্রীদের সঠিক ও মানসম্মত লেখাপড়া নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়টিকে প্রভাতী ও দিবা দুইটি শিফটে ভাগ করে পাঠদান কর্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণিতে ৪টি করে শাখা বিদ্যমান এবং প্রতিটি শাখায় ৩৫-৪০ জন ছাত্রীর পাঠদান হয়।

শিফট ও শাখা সম্পাদনা

শ্রেণিভেদে প্রতি শিফটের শাখাগুলো[৭]

শিফট তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম !ষষ্ঠ সপ্তম অষ্টম নবম দশম
প্রভাতী (শাখা) ১টি ১টি ১টি ২টি ২টি ২টি ২টি ২টি
দিবা (শাখা) ১টি ১টি ১টি ২টি ২টি ২টি ২টি ২টি

সময়ব্যাপ্তি সম্পাদনা

গ্রীষ্মকাল - প্রভাতী শিফট: সকাল ৭:৩০ হইতে ১১:০০ পর্যন্ত, দিবা শিফট: দুপুর ১২:৩০ হইতে বিকাল ৪:০০ পর্যন্ত
শীতকাল - প্রভাতী শিফট : সকাল ৮:০০ হইতে দুপুর ১১:৩০, দিবা শিফট: দুপুর ১২:০০ হইতে বিকাল ৩:৩০ পর্যন্ত।

বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ সম্পাদনা

ভবন ও আঙিনা সম্পাদনা

বিদ্যালয়ের আঙিনাটি এর চারদিকে ভবনগুলো দ্বারা বেষ্টিত। উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমে একটি করে দোতলা ভবন এবং দক্ষিণ পাশে রছেয়ে দু'টো দোতলা ভবন। দক্ষিণের ভবন দুটোর মাঝখানে একটি একতলা ভবন যা প্রশাসনিক ভবন হিসাবে ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য ভবনগুলোকে শ্রেণীকক্ষ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন

অফিস সম্পাদনা

১নং ভবনটিকে দাপ্তরিক কার্যালয়, শিক্ষক/শিক্ষিকা মিলনায়তন ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে এবং ৫ নং ভবনের নিচতলায় বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক এর কার্যালয় ও বিদ্যালয়ের অফিস রুম অবস্থিত।

বিজ্ঞানাগার ও লাইব্রেরী সম্পাদনা

এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ,লাইব্রেরী, আই এল সি কম্পিউটার ল্যাব ও বিজ্ঞানাগার রয়েছে।

সহশিক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনা

এই বিদ্যালয়ে প্রতি বছর বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। খেলাধুলার জন্য মাঠ হিসাবে বিদ্যালেয়র বিশাল আঙিনাকেই ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া প্রতি বছর এখানে বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রীদের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা ও রয়েছে এখানে। প্রতি বছরই পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় কৃতি ছাত্রীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় জাতীয় সংসদ সদস্য আবু জাহির এর উপস্থিতিতে ২২০জন শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।[৮] এছাড়াও বিদ্যালেয়র ছাত্রীরা বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে বিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত বসুন্ধরা খাতা-কালের কণ্ঠ জাতীয় স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়নের পুরস্কার নিয়ে আসে স্কুলের ছাত্রীরা।[৯]

ছবি আঙিনা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "পোর্টাল : বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখা, মাউশি অধিদপ্তর"bkgcgghs.edu.bd। ২০১৯-০৪-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৪ 
  2. "বি.কে.জি.সি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়"bkgcgghs.edu.bd। ২০১৯-০৪-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৪ 
  3. "কর্মরত শিক্ষকদের তালিকা"bkgcgghs.edu.bd সংগ্রহের-তারিখ=2019-04-25। ২০১৯-০৪-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৫ 
  4. "দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচার - The Daily Habiganj Samachar -25 Apr 2019"habiganj-samachar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৫ 
  5. "হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ও বিকেজিসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল"www.habiganjexpress.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৫ 
  6. BanglaNews24.com। "সিলেট বোর্ডে সেরা ২০ এ হবিগঞ্জের ৪ স্কুল"banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৫ 
  7. "বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখা, মা উ শি অধিদপ্তর"bkgcgghs.edu.bd। ২০১৯-০৪-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৪ 
  8. "হবিগঞ্জে জেলায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা"www.educationbangla.com। ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৫ 
  9. "চার জেলায় শিক্ষার্থীদের উৎসবমুখর অংশগ্রহণ"Kalerkantho। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৫ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। সেরা বক্তা হয়েছে বিজয়ী দলের অধিনায়ক সামিয়া ইসলাম জেরিন।