গাজীউল হক: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
২৪ নং লাইন:
== ছাত্র জীবন ==
১৯৪৬ সালে তিনি ধুবড়িতে অনুষ্ঠিত [[আসাম]] [[মুসলিম লীগ]] কনফারেন্সে যোগ দিতে গিয়ে [[মাওলানা ভাসানী]]র ব্যক্তিত্ব, বাগ্মীতা এবং নেতৃত্বে আকৃষ্ট হন। ১৯৪৭ সালে তিনি পূর্ব [[পাকিস্তান]] গণতান্ত্রিক যুব লীগের [[ঈশ্বরদী]] কনফারেন্সে উত্তরবঙ্গ শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই বছর ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর [[ঢাকা]]য় গণতান্ত্রিক যুবলীগের দুদিনব্যাপী কর্মী সম্মেলনের গাজীউল হক বগুড়ার পাঠচক্র ‘শিল্পায়নে’র সদস্যদের সঙ্গে অংশ নেন। ১৯৪৮ সালে তিনি পূর্বপাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের বগুড়া শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। এ সময় থেকেই রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাইয়ের সংগ্রাম শুরু হয়। ১১ মার্চ গাজীউল হক [[বগুড়া]] কলেজ থেকে ছাত্রদের মিছিল নিয়ে বগুড়া শহর প্রদক্ষিণ করেন। [[বগুড়া জিলা স্কুল]] ময়দানে সেদিনের সভার সভাপতি ছিলেন [[মুহম্মদ শহীদুল্লাহ]]। সভাপতি হিসেবে বাংলাকে রাষ্ট্র্রভাষা করার দাবির স্বপক্ষে দীর্ঘ সময়ব্যাপী যুক্তি ও তথ্য নির্ভর ভাষণ দেন।<ref name=" gaziul haque "/>
১৯৪৮ সালে গাজীউল হক বগুড়া কলেজ থেকে আইএ পাশ করে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে]] [[ইতিহাস]] বিষয়ে অর্নাস ভর্তি হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ওঠেন। এসময় তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি ভাষা আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেন ও বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে কারাবরণ করেন। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্ন-বেতন কর্মচারীগণ ধর্মঘট আহবান করলে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে তিনিও এর সমর্থন করেন। ১৯৪৯ সালের দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় তিনি কাজ করেন। এ সময় [[মাওলানা ভাসানী]]র নেতৃত্বে একটি ভুখা মিছিল বের হয়। এই মিছিলে গাজীউল হকও শরিক হন। ১৯৫১ সালে বি এ অর্নাস পাশ করে এমএ ভর্তি হন। এসময় তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের উপস্থিত বক্তৃতা, আবৃত্তি, বির্তক প্রভৃতি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৫২ সালে তিনি এমএ পাশ করেন। কিন্তু [[বাংলা ভাষা আন্দোলন|ভাষা আন্দোলনে]] নেতৃত্ব দানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ
== কর্মজীবন ==
১৯৫৭ সালে আইনজ্ঞ সৈয়দ নওয়াব আলীর অধীনে বগুড়া বারে যোগদানের মধ্য দিয়ে
== ভাষা আন্দোলন ==
৩৪ নং লাইন:
২০ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সরকার ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতিকে তছনছ করে দেয়ার জন্য ঢাকাতে সমাবেশ, মিছিল-মিটিংযের উপর ১৪৪ ধারা জারি করে।
বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সময় ধরে উপস্থিত ছাত্রনেতাদের মধ্যে [[আব্দুল মতিন]] এবং গাজীউল হক ১৪৪ ধারা ভংগের পক্ষে মত দিলেও সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে কোন সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হন। এ অবস্থায় বাংলার দামাল ছেলেরা দমনমূলক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায়। উপস্থিত সাধারণ ছাত্ররা স্বত:স্ফূর্তভাবে ১৪৪ ধারা ভংগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং মিছিল নিয়ে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের অন্তর্গত) দিকে যাবার উদ্যোগ নেয়। অধিকার আদায়ের দাবিতে শত শত বিদ্রোহী কন্ঠে “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” এই দাবীতে আন্দোলন তীব্র হয়ে উঠে। পুলিশের সঙ্গে ছাত্র জনতার সংঘর্ষ হয়। শ্লোগানে শ্লোগানে কেঁপে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বুলেট আর লড়াই শুরু হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ এবং গুলি বর্ষণ শুরু করে। গুলিতে ঘটনাস্থলেই [[আবুল বরকত]] (ঢাবি এর রাষ্ট্রবিজ্ঞান এর মাষ্টার্সের ছাত্র), [[রফিকউদ্দিন আহমদ]], এবং [[আব্দুল জব্বার]] নামের তিন তরুণ মারা যায়। রফিক, জাব্বার, বরকত, শফিক সহ নাম না জানা আরও অনেকের সাথে সালামও সেদিন গুলিবিদ্ধ হন।<ref>http://biplobiderkotha.com/index.php?option=com_content&view=article&id=81:2010-02-06-07-33-11&catid=41:lorai&Itemid=2</ref>
২৩ ফেব্রুয়ারি গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যে গাজীউল হক পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। [[বগুড়া]]য় এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সেখানকার আলতাফুন্নেছা মাঠে
== অন্যান্য আন্দোলনে ==
গাজীউল হকের সাহসিকতার পরিচয় কেবল [[বাংলা ভাষা আন্দোলন|ভাষা আন্দোলনের]] সময়ই দেখা যায় নি। পরবর্তী সকল অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন, সাংস্কৃতিক ও জাতীয় সংগ্রামে গাজীউল হক অংশ নিয়েছেন। ১৯৬২-র [[শিক্ষা আন্দোলন]], ১৯৬৪-র সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে প্রথমে স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠক হিসাবে ও পরে জাতীয় পর্যায়ের লেখক এবং সংগঠকের ভূমিকায়
১৯৫৪ সালের [[যুক্তফ্রন্ট|যুক্তফ্রন্টের]] নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি অংশ নিয়ে বগুড়ার [[মুসলিম লীগ]]কে শক্তিশালী ঘাঁটিতে পরিণত করেন এবং কাগমারী সম্মেলনে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠনে [[আওয়ামী লীগ|আওয়ামী লীগের]] সর্বাঙ্গীন প্রতিকূলতা প্রতিরোধে [[মাওলানা ভাসানী]]র ঘনিষ্ঠ সহকমী হিসেবে কাজ করেন। ঐ বছর ২১ ফেব্রুয়ারি পালন বন্ধের জন্য সরকার ধরপাকড় শুরু করে। ১৯ ফেব্রুয়ারি গাজীউল হকসহ কয়েকজন নেতাকমীকে [[বগুড়া]] থেকে গ্রেফতার করা হয়। এবার প্রায় ২৯মাস কারাগারে তাকে থাকতে হয় । বগুড়ায় ১৯৬৯ সালের ১১ দফা আন্দোলনের মূল চাবিকাঠি ছিল বিড়ি শ্রমিক ও মজদুরগণ। গাজীউল হকও ১১ দফা আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতেই গাজীউল হক মাত্র ২৭জন যুবকসহ পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত মোতাবেক গাজীউল হক, ডা. জাহিদুর রহমান অন্যান্য যুবকদের নিয়ে বগুড়া থানার আঙ্গিনায় জড়ো হন৷ থানার [[পুলিশ]] এবং ৩৯জন ইপিআর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন৷ এসময় [[আওয়ামী লীগ]], ন্যাপ ভাসানী ও কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দদের নিয়ে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি হাই কমান্ড গঠন করা হয়। এই হাই কমান্ডের সদস্য ছিলেন গাজীউল হক। ২৭ মার্চ থেকে ১এপ্রিল ৬০ জন পুলিশের একটি দল পাকসেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে। ১ এপ্রিল গাজীউল হকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা আড়িয়া ক্যান্টনমেন্টে আক্রমণ চালিয়ে ৬৯ জন পাক সেনাকে বন্দি করেন। মুক্তিযোদ্ধারা এই ক্যান্টনমেন্ট থেকে ৫৮ ট্রাক গোলাবারুদ উদ্ধার করেন। ১৬ এপ্রিল গাজীউল হক অস্ত্র সংগ্রহ এবং অস্থায়ী সরকারের সঙ্গে উত্তরাঞ্চল যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে [[ভারত]] যান। হিলিতে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে একটি খণ্ড যুদ্ধে অংশগ্রহণের পর [[কলকাতা]]য় ফিরে গিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের মুখপাত্র ‘জয়বাংলা’ পত্রিকার বিক্রয় বিভাগের দায়িত্বসহ [[আকাশবাণী]] ও [[স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র]] থেকে রণাঙ্গনের সংবাদ প্রচারের দায়িত্ব পালন করেন। <ref name=" gaziul haque "/>
৫১ নং লাইন:
* বাংলাদেশের গণমাধ্যম আইন (১৯৯৬)
== সম্মাননা ==
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৪তম সমাবর্তনে গাজীউল হক-সহ আরেক ভাষাসৈনিক [[আব্দুল মতিন|আব্দুল মতিনকে]] সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ ডিগ্রি দেওয়া হয়। ১৯৭৭ সালে পান পাবনা থিয়েটার পুরস্কার। ১৯৭৯ সালে [[বগুড়া]] জিলা স্কুলের ১৫০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে 'বন্ধন'-এর পক্ষ থেকে ভাষাসৈনিক গাজীউল হককে ক্রেষ্ট উপহার দেওয়া হয়৷ ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারি 'সড়ক'-এর পক্ষ থেকে
'দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড এ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ'
== মৃত্যুবরণ ==
|