হুমায়ুন আজাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[পরীক্ষিত সংশোধন][পরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Moheen (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
৭৩ নং লাইন:
==প্রারম্ভিক জীবন==
===জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি===
আজাদ ২৮ এপ্রিল ১৯৪৭ সালে তার মাতামহের বাড়ি তৎকালীন [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ ভারতের]]<!--দেখুন: [[বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭)]]--> (বর্তমানে [[বাংলাদেশ]]) অধীন [[বিক্রমপুর|বিক্রমপুরের]] কামারগাঁয় জন্ম নেন; যেটি বর্তমানে [[মুন্সিগঞ্জ জেলা|মুন্সিগঞ্জ জেলার]] [[শ্রীনগর উপজেলা|শ্রীনগর উপজেলার]] অন্তর্গত।<ref>{{harvnb|আজাদ|২০১১|p=১১}}: আজাদের জন্ম কিন্তু দক্ষিণ রাড়িখাল গ্রামে নয় (অনেকেই তাই-ই ভাবেন), তার নানান বাড়ি কামারগাঁয়ে।; {{harvnb|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৮}}: আমি জন্মেছিলাম আমার নানাবাড়িতে&ndash; তখন নানাবাড়িতে জন্ম নেয়াই রীতি ছিলো&ndash;, আমাদের গ্রাম থেকে পশ্চিমে একটি গাছপালাছায়াঢাকা গ্রামে, কামারগাঁয়ে।</ref> তার জন্ম নাম ছিল হুমায়ুন কবীর। ১৯৮৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর নাম পরিবর্তনের মাধ্যম তিনি বর্তমান নাম ধারণ করেন।<ref name="বাংলাপিডিয়া">{{বাংলাপিডিয়া উদ্ধৃতি |অধ্যায়=আজাদ,_হুমায়ুন |লেখক=মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম}}</ref> তার বাবা আবদুর রাশেদ প্রথম জীবনে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা{{r|বাংলাপিডিয়া}} ও পোস্টমাস্টারির চাকুরি করতেন,{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৩৬}} পরে ব্যবসায়ী হন। মা জোবেদা খাতুন ছিলেন গৃহিণী।{{r|বাংলাপিডিয়া}} তিন ভাই এবং দুই বোনের মধ্যে আজাদ ছিলেন পিতামাতার দ্বিতীয় পুত্রসন্তান।{{refn|group=বিদ্র|আমার বাবার নাম আবদুর রাশেদ, মায়ের নাম জোবেদা খাতুন। আমি তাঁদের দ্বিতীয় পুত্র, ও তৃতীয় সন্তান। তাঁদের প্রথম পুত্রটি জন্মের পরেই ম'রে গিয়েছিলো, আমি তাই প্রথম পুত্ররূপে গণ্য হয়েছি..।: (প্রাথমিক উৎস){{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৯}}}} ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে তার পিতৃবিয়োগ ঘটে।{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=১০}} ছেলেবেলায় তার ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি রাড়িখাল গ্রামে বেড়ে ওঠেন।<ref>{{harvnb|আজাদ|২০১১|p=১২}}: ..সেই বাল্যকাল তথা রাড়িখালের মাত্র ১৫ বছর জীবনযাপন ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে সুখকর অধ্যায়।; {{harvnb|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৯}}: ১৫ বছর পর্যন্ত আমি বড় হয়েছি আমাদের গ্রামে রাড়খিালে।</ref> পরবর্তীতে তার লেখার বিভিন্ন ভাবে রাড়িখাল গ্রামের বর্ণনা ওঠে এসেছে; এবং এ গ্রাম নিয়ে তিনি "রাড়িখাল : ঘুমের ভেতরে নিবিড় শ্রাবণধারা" নামে একটি লেখা প্রকাশ করেন।{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৯}}
 
===শিক্ষা জীবন===
১৯৫২ সালে আাজাদ দক্ষিণ রাড়িখাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইনফ্যান্ট (তৎকালীন প্রথম শ্রেণী) শ্রেণীতে ভর্তি হন,<ref>{{harvnb|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|pp=১২-১৩}}: আমি ওই প্রথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই সবচেয়ে নিচের ক্লাশে, তার নাম ছিলো 'ইনফ্যান্ট ক্লাশ'..।</ref> সেখানে তিন বছর ইনফ্যান্ট থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন।{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=১৬}} যদিও ১৯৫৫ সালে তৃতীয় শ্রেণী বাদ দিয়ে তিনি সরাসরি চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন রাড়িখালের [[স্যার জে সি বোস ইনস্টিটিউশন|স্যার জে সি বোস ইনস্টিটিউশনে]]।{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|pp=১৬-১৭}} ছেলেবেলা থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী। এ বিদ্যালয় থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৯৬২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন ([[মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট|মাধ্যমিক]]) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।{{r|বাংলাপিডিয়া}}{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=২৩}} এরপর তিনি ১৯৬৪ সালে [[ঢাকা কলেজ]] থেকে [[উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট|উচ্চ মাধ্যমিক]] পাশ করেন।{{r|বাংলাপিডিয়া}} ১৯৬৭ সালে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে [[বাংলা সাহিত্য|বাংলা সাহিত্যে]] [[স্নাতক]] ডিগ্রি এবং ১৯৬৮ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।{{r|বাংলাপিডিয়া}} উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন।{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৪২}} ২০১৬ সালে তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এক বন্ধু স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে বলেন যে, আজাদ লেখাপড়ায় খুবই মনোযোগী ছিল এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে বই পড়ে অনেক সময় ব্যয় করতো।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://swapno71.com/2016/08/12/humayun-azad-and-me/|শিরোনাম=Humayun Azad and me in the university life.|লেখক=Tulu Matin (Humayun Azad's friend)|ওয়েবসাইট=swapno71.com|তারিখ=12 August 2016|সংগ্রহের-তারিখ=6 November 2017|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20160815031056/http://swapno71.com/2016/08/12/humayun-azad-and-me/|আর্কাইভের-তারিখ=১৫ আগস্ট ২০১৬|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref>
 
১৯৭৬ সালে তিনি [[স্কটল্যান্ড|স্কটল্যান্ডের]] [[এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে [[ভাষাবিজ্ঞান|ভাষাবিজ্ঞানে]] [[পিএইচডি]] ডিগ্রি লাভ করেন।{{r|বাংলাপিডিয়া}} তার গবেষণার বিষয় ছিল ''বাংলা সর্বনামীয়করণ''। এই গবেষণাপত্র পরবর্তীকালে ১৯৮৩ সালে ''[[প্রোনোমিনালাইজেশান ইন বেঙলি]]'' নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের [[দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড]] থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
৮২ নং লাইন:
==কর্মজীবন==
===অধ্যাপনা===
হুমায়ুন আজাদ পেশায় শিক্ষক ছিলেন। ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে ২২ বছর বয়সে তার কর্মজীবন শুরু হয় [[চট্টগ্রাম কলেজ|চট্টগ্রাম কলেজে]] প্রভাষক হিসাবে।{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৪৪}} সেখানে কিছুকাল কর্মরত থাকার পর ১৯৭০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি [[চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়|চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের]] বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৪৫}} একই বছর ১২ ডিসেম্বর তিনি [[জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়|জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে]] বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন।{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৪৮}} পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের ১ নভেম্বর আজাদ [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে]] সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন{{r|বাংলাপিডিয়া}}{{sfn|উদ্দিন|বুলবুল|২০০৪|p=৫০}} এবং পরবর্তীকালে বাংলা বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলা বিভাগে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।{{r|বাংলাপিডিয়া}}
 
===ভাষাবিজ্ঞান গবেষণা===
১৯৬০-এর দশকে আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের ছাত্র থাকাকালীন পশ্চিমের ভাষাবিজ্ঞানী [[নোম চম্‌স্কি|চম্‌স্কি-উদ্ভাবিত]] [[রূপান্তরমূলক সৃষ্টিশীল ব্যাকরণ]] তত্ত্বটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রির জন্য আজাদ এই তত্ত্বের কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে বাংলা ভাষার [[রূপমূলতত্ত্ব]] তথা [[বাক্যতত্ত্ব]] নিয়ে গবেষণা করেন। এর মাধ্যমে বাংলার ভাষাবিষয়ক গবেষণায় আধুনিক ভাষাবৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সূত্রপাত ঘটে। তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভের নাম ছিল ''[[Pronominalization In Bengali]]'' (অর্থাৎ ''বাংলা সর্বনামীয়করণ'')। পরবর্তীতে ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে একই শিরোনামের এটি ইংরেজি ভাষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের [[দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড]] থেকে প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাংলা ভাষার [[বাক্যতত্ত্ব|বাক্যতত্ত্বের]] ওপর ''[[বাক্যতত্ত্ব (গ্রন্থ)|বাক্যতত্ত্ব]]'' নামে একটি বই [[বাংলা একাডেমি]] থেকে প্রকাশ করেন। একই সালে বাংলা একাডেমি থেকে তিনি ''[[বাঙলা ভাষা (গ্রন্থ)|বাঙলা ভাষা]]'' শিরোনামে দুই খণ্ডের একটি দালীলিক সঙ্কলন প্রকাশ করেন, যাতে বাংলা ভাষার বিভিন্ন ক্ষেত্রের ওপর বিগত শতাধিক বছরের বিভিন্ন ভাষাবিদ ও সাহিত্যিকের লেখা গুরুত্বপূর্ণ ভাষাতাত্ত্বিক রচনা সংকলিত হয়। এই তিনটি গ্রন্থ বাংলা ভাষাবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসাবে বিবেচিত। তিনি পরবর্তীকালে ''[[তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান]]'' (১৯৮৮) ও ''[[অর্থবিজ্ঞান (গ্রন্থ)|অর্থবিজ্ঞান]]'' (১৯৯৯) শিরোনামে দুইটি সংক্ষিপ্ত প্রাথমিক পাঠ্যপুস্তক লেখেন। ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে তিনি বাংলা ভাষার একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাকরণ রচনার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তবে মৃত্যুর কারণে তার এই আগ্রহ বাস্তবায়িত হয় নি।
 
== সাহিত্যিক জীবন ==