বিশুদ্ধানন্দ মহাথের
বিশুদ্ধানন্দ মহাথের (২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৯ - ২ মার্চ, ১৯৯৪) ছিলেন একজন বৌদ্ধ ধর্মীয় পণ্ডিত ও সমাজসেবী। তিনি বাংলাদেশ সরকার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত ছিলেন।[১] সমাজসেবায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ২০০৫ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে।
বিশুদ্ধানন্দ মহাথের | |
---|---|
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট | |
ভাইস চেয়ারম্যান | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮৪-১৯৯৪ | |
পূর্বসূরী | পদ সৃষ্টি |
উত্তরসূরী | রাখাল চন্দ্র |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | শশাঙ্ক বড়ুয়া ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯০৯ হোয়ারাপাড়া, রাউজান, চট্টগ্রাম, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ২ মার্চ ১৯৯৪ হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ | (বয়স ৮৫)
সমাধিস্থল | সুদর্শন বিহার অঙ্গন, হোয়ারাপাড়া, চট্টগ্রাম |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | বিদ্যালঙ্কার বিশ্ববিদ্যালয় |
ধর্ম | বৌদ্ধ |
পুরস্কার | একুশে পদক (২০০৫) |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাবিশুদ্ধানন্দ ১৯০৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার হোয়ারাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কর্মধন বড়ুয়া এবং মাতার নাম চিন্তাবতী বড়ুয়া। তাঁর পিতার দেওয়া নাম ছিল শশাঙ্ক বড়ুয়া। স্থানীয় নোয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় এবং পরে মহামুনি এ্যাংলো পালি বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। ১৯২১ সালে তিনি অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি ১৯২৫ সালে শ্রামণ্যধর্মে দীক্ষিত হলে তার নাম রাখা হয় বিশুদ্ধানন্দ। শ্রামণ্যধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তিনি বাংলা ভিক্ষু সংঘের প্রতিনিধি হিসেবে সর্বভারতীয় বৌদ্ধ সম্মেলনে যোগদান করেন এবং কলকাতায় অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে যোগদানের মাধ্যমে তিনি যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর সান্নিধ্য লাভ করেন।[২]
১৯৩০ সালে তাঁর গুরু সংঘনায়ক অগ্রসার মহাস্থবিরের কাছে উপসম্পদা গ্রহণ করেন। বৌদ্ধধর্মে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য তিনি ১৯৩৪ সালে শ্রীলঙ্কায় যান এবং সেখানে বিদ্যালঙ্কার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তিন বছর পড়াশুনার পর ১৯৩৭ সালে তিনি সেখান থেকে 'শ্রী সদ্ধর্মভাবক' অভিধা অর্জন করেন।[৩]
সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড
সম্পাদনাশ্রীলঙ্কা থেকে পড়াশুনা করে দেশে ফিরে তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন। তিনি দেশে শিক্ষা বিস্তারে কয়েকটি বিহার ও পালি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।[৩]
১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষকালীন বিশুদ্ধানন্দ আর্তমানবতার সেবায় বেনীমাধব বড়ুয়া, মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সহায়তায় ত্রাণ কমিটি গঠন করেন। পরে দরিদ্র বৌদ্ধদের কল্যাণে হোয়ারাপাড়া গ্রামের সুদর্শন বিহারে 'অগ্রসার অনাথালয়' প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে অগ্রসার মহাবিদ্যালয় নামে পরিচিত।[৩] ১৯৪৪ সালে জনকল্যাণের জন্য 'অগ্রসার স্মৃতি সমিতি' প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে শিলক বৌদ্ধ সম্মেলনে 'পূর্ব পাকিস্তান বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ' প্রতিষ্ঠা করেন, যা বর্তমান 'বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ' নামে পরিচিত। তিনি সংঘটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন।[২]
সম্মাননা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "সম্মানিত ভাইস চেয়ারম্যানবৃন্দের তালিকা"। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সংগ্রহের তারিখ , ২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ গ আহমদ, নেছার (১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭)। "স্মরণের আবরণে বিশুদ্ধানন্দ মহাথের"। এবিনিউজ। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে, ২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ গ বড়ুয়া, সুকোমল। "বিশুদ্ধানন্দ মহাথের"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে, ২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]