বিভু ভট্টাচার্য
বিভু ভট্টাচার্য্য (ইংরেজি: Bibhu Bhattacharya) (১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৪৪- ২২ সেপ্টেম্বর ২০১১) একজন ভারতীয় বাঙালী টেলিভিশন ও সিনেমা অভিনেতা ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমানে ঝরিয়া, ঝাড়খণ্ড, ভারত) ঝরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৮ সালে সন্দীপ রায় পরিচালিত টেলিসিরিজে জটায়ুর ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য তিনি সুখ্যাতি ও পরিচিতি লাভ করেন । এই ধারাবাহিক নির্মিত হয় সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদার বিভিন্ন গল্প অনুসারে। ২০১১ সালে কলকাতায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
বিভু ভট্টাচার্য্য | |
---|---|
জন্ম | ঝরিয়া, বিহার, ব্রিটিশ ভারত | ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৪৪
মৃত্যু | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১১ | (বয়স ৬৭)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | অভিনেতা |
পরিচিতির কারণ | ফেলুদা সিনেমা জটায়ু |
অভিনয় জীবন
সম্পাদনাশিশুশিল্পী হিসাবে মাত্র সাড়ে চার বছর বয়সে তাঁর অভিনয় জীবনের সূচনা। প্রথাগত পড়াশুনা তাঁর হয়নি। যখন তাঁর বয়সী অন্যান্য ছেলেরা লেখাপড়ার জন্য স্কুলে যেত, তিনি সেসময়ে স্টুডিওতে অভিনয় করতে যেতেন। তিনি প্রথম অভিনয় করেন উত্তম কুমার অভিনীত “মর্য্যাদা” (১৯৫০) সিনেমায়। তাঁকে মাস্টার বিভু নামে ডাকা হত। তৎকালীন বাংলা চলচ্চিত্রে তিনি অন্যতম জনপ্রিয় শিশুশিল্পী ছিলেন এবং জহর গঙ্গোপাধ্যায় এবং ছবি বিশ্বাসের মতন শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পান। তিনি “প্রহ্লাদ(১৯৫২)” সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। তাঁর অন্যান্য সিনেমাগুলোর মধ্যে বিন্দুর ছেলে (১৯৫৩), রাণী রাসমণি (১৯৫৫), দুই বোন (১৯৫৫) উল্লেখযোগ্য। তবে একটা সময় পরে বয়স বাড়ার কারণে তাঁর সিনেমায় অভিনয় করার প্রস্তাব আসা কমে গেল। শিশু শিল্পী হিসেবে তাঁর অভিনীত শেষ সিনেমা সাগর সঙ্গমে (১৯৫৯)। তারপর তিনি প্রায় ৩৮ বছর কোন সিনেমায় অভিনয় করেন নি। এই সময়ে, তিনি নিজেকে টেলিভিশন নাটক ও থিয়েটারে ব্যস্ত রাখেন।
ফেলুদা সিরিজ
সম্পাদনাসময়টা ছিল ১৯৯৮ সাল, বিভু ভট্টাচার্য তাঁর স্বপ্নের চরিত্র “জটায়ু” খুজে পান। জটায়ু চরিত্রে তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমা বোম্বাইয়ের বোম্বেটে (২০০৩) এবং জটায়ু চরিত্রে তিনি কৈলাশে কেলেঙ্কারী (২০০৭), টিনটোরেটোর যীশু (২০০৭) এবং গোরস্থানে সাবধান (২০১০) এ অভিনয় করেন। তাঁর কিংবদন্তিতুল্য অভিনয় জটায়ু চরিত্রকে জীবন্ত করে তুলে। ফলে সবাই এমনকি সিনেমার পরিচালক সন্দীপ রায়, তাঁকে এই চরিত্রের উপযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করেন। মৃত্যুর আগেরদিন তিনি ফেলুদা সিনেমা “রয়েল বেঙ্গল রহস্য” সিনেমার ডাবিং শেষ করেন। আসলে এটা খুবই কঠিন ছিল যে কিংবদন্তি অভিনেতা “সন্তোষ দত্ত” –কে পরিবর্তন করে অন্য কোন অভিনেতা’র আগমন ঘটানো, কিন্তু সময়ের সাথে বিভু ভট্টাচার্যও পরিচিত লাভ করেন।
সিনেমা
সম্পাদনা- মাচো মস্তানা (২০১২)
- ভূতের ভবিষ্যৎ (২০১২)
- আলো ছায়া (২০১২)
- রয়েল বেঙ্গল রহস্য (২০১১)
- টেনিদা (চলচ্চিত্র) (২০১১)
- গোরস্থানে সাবধান (২০১০)
- বেলা শেষে (২০০৯)
- মল্লিক বাড়ি (২০০৯)
- স্বার্থ (২০০৯)
- টিনোটরেটোর যীশু (২০০৮)
- অবেলায় গরম ভাত (২০০৮)
- কৈলাশে কেলেঙ্কারী (২০০৭)
- বোম্বাইয়ের বোম্বেটে (২০০৩)
- সাগর সঙ্গমে (১৯৫৯)
- স্বপ্নপুরী (১৯৫৯)
- ঠাকুর হরিদাস (১৯৫৯)
- পুরীর মন্দির (১৯৫৮)
- শ্রী শ্রী মা (১৯৫৮)
- হরিশচন্দ্র (১৯৫৭)
- জন্মতিথি (১৯৫৭)
- খেলা ভাঙার খেলা (১৯৫৭)
- ওমকারার জয়যাত্রা (১৯৫৭)
- মামলার ফল (১৯৫৭)
- পুত্রবধু (১৯৫৬)
- বীর হম্বীর (১৯৫৫)
- ঝড়ের পরে (১৯৫৫)
- প্রশ্ন (১৯৫৫)
- রাণী রাশমণি (১৯৫৫)
- শ্রীকৃষ্ণ সুদমা (১৯৫৫)
- অগ্নি পরীক্ষা (১৯৫৪)
- বকুল (১৯৫৪)
- লেডিস সিট (১৯৫৪)
- নববিধান (১৯৫৪)
- প্রফুল্ল (১৯৫৪)
- ধ্রুব (১৯৫৩)
- সীতার পাতাল প্রবেশ (১৯৫৩)
- আধি (১৯৫২)
- বিন্দুর ছেলে (১৯৫২)
- বিশ্বমিত্র (১৯৫২)
- নীলদর্পন (১৯৫২)
- পল্লীসমাজ (১৯৫২)
- প্রহ্লাদ (১৯৫২)
- সহসা (১৯৫২)
- ভক্ত রঘুনাথ (১৯৫১)
- কুলহারা (১৯৫১)
- প্রত্যাবর্তন (১৯৫১)
- মারইয়াদা (১৯৫১)
ফেলুদা সিরিজ টেলিফিল্ম
সম্পাদনা- জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা (১৯৯৮)
- অম্বর সেন অন্তর্ধান রহস্য (১৯৯৮)
- গোলাপী মুক্তা রহস্য (১৯৯৮)
- ডাক্তার মুনশীর ডায়রী (২০০০)