বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হলো বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নাগরিকদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এটি ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়।[১] মেজর জেনারেল (অব.) চিত্ত রঞ্জন দত্ত সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।[২]
সংক্ষেপে | বিএইচবিসিওপি |
---|---|
গঠিত | ১৯৮৮ |
প্রতিষ্ঠাতা | বীর উত্তম চিত্ত রঞ্জন দত্ত (প্রাক্তন মেজর জেনারেল) |
ধরন | অলাভজনক সংগঠন |
আলোকপাত | মানবাধিকার |
সদরদপ্তর | ঢাকা, বাংলাদেশ |
অবস্থান | |
সাধারণ সম্পাদক | রানাদাশ গুপ্ত |
সভাপতি | ঊষাতন তালুকদার নিমচন্দ্র ভৌমিক নির্মল রোজারিও |
ওয়েবসাইট | https://bhbcop.org/ |
ইতিহাস
সম্পাদনাদীর্ঘ সংগ্রামের পর জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা মূলনীতি হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়।[৩] কিন্তু সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণার পর ধর্মনিরপেক্ষতার হওয়ার পরেও একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়।[৪] ফলে ধর্মরাষ্ট্রে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সাংবিধানিকভাবে শুধুমাত্র সম-নাগরিক অধিকারের মর্যাদা থেকেই বিচ্যুত হলো না, তাদের উপর বৈষম্য, নিগৃহণ, নিপীড়ন চালানোর অধিকার প্রকারান্তরে সংবিধানে স্বীকৃতি পায়। এরই প্রতিবাদে, প্রতিরোধে এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত মতে সম-অধিকার, সম-মর্যাদা প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে জন্ম নেয় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।[৫] এটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল চিত্ত রঞ্জন দত্ত।[২]
পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে উত্তর আমেরিকার বাংলাদেশী ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা নিউ ইয়র্কে ঐক্য পরিষদের একটি শাখা খোলেন।[৬] ২০০৫ সালে টরন্টোতে এর কানাডীয় শাখা গঠন করা হয়। ফ্রান্সের মতো ইউরোপীয় দেশগুলিতেও এর শাখা রয়েছে।
বর্তমান পরিষদ
সম্পাদনা২০২২ সালে সংগঠনটির নতুন কমিটিতে অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এবং নতুন তিন সভাপতি হয়েছেন ঊষাতন তালুকদার, অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও।[৭][৮][৯]
উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য
সম্পাদনাসংগঠনের প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হলো মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি রক্ষা, ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যবোধের স্বীকৃতি, সকল মানুষের স্বাভাবিক জীবন বিকাশের পরিপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি, ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, বৈষম্য-বঞ্চনা-সাম্প্রদায়িকতার অবসান, আদিবাসী জনগোষ্ঠীসহ অনগ্রসর জনগনের উপর শোষণ-নির্যাতন-বৈষম্যের অবসান, সামাজিক স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ গঠন এবং সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সমমর্যাদার ভিত্তিতে সার্বিক রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তোলা।[১০]
অঙ্গ সংগঠন
সম্পাদনাবাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আটটি অঙ্গ সংগঠন আছে:
- বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ
- বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ
- বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ
- বাংলাদেশ আইনজীবী ঐক্য পরিষদ
- বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদ
- বাংলাদেশ পেশাজীবী ঐক্য পরিষদ
- বাংলাদেশ ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ
- বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক ঐক্য পরিষদ
আরো পড়ুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Chowdhury, G. R.। "Unnatural Disasters: Pogroms have killed thousands of Bangladeshi minorities; millions more are refugees in India"। Cultural Survival। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১৩।
- ↑ ক খ "বীর উত্তম সি আর দত্ত আর নেই"। jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২২।
- ↑ "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান | রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি"। bdlaws.minlaw.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২২।
- ↑ "সংবিধানে থেকে যাবে রাষ্ট্রধর্ম?"। dw.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২২।
- ↑ "Background – Bangladesh Hindu Buddhist Christian Unity Council"। bhbcop.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২২।
- ↑ "About Us – BHBUC-Bangladesh Hindu Buddhist & Christian Unity Counsil, USA" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১২-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২২।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠন"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২২।
- ↑ "Central Committee – Bangladesh Hindu Buddhist Christian Unity Council"। bhbcop.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২২।
- ↑ "হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠন"। দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২২।
- ↑ "Aims & Objects – Bangladesh Hindu Buddhist Christian Unity Council"। bhbcop.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২২।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ঐক্য পরিষদের যুক্তরাষ্ট্র শাখা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে