বড়ইবাড়ি ঢোল সমুদ্র প্রত্নস্থল

(বড়ইবাড়ি প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বড়ইবাড়ি ঢোল সমুদ্র প্রত্নস্থল গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন রাজধানী ও বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল।[১] অনেকেই মনে করেন বড়ইবাড়ি দশম শতাব্দীর পাল শাসক যশোপালের রাজধানী ছিল। এটি উপজেলার বোয়ালিয়া ও চাপার ইউনিয়নের ঢোল সমুদ্র নামক গ্রামে অবস্থিত।

বড়ইবাড়ি প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট
ধরনপ্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
অবস্থানকালিয়াকৈর
অঞ্চলগাজীপুর, ঢাকা
মালিকবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
সূত্র নংBD-C-18-38

ইতিহাস

সম্পাদনা

২০০১ সালে এ স্থানটি আবিষ্কৃত হয়। বড়ইবাড়ি সম্পর্কে ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতত্ত্ববিদগণ অনেক আগে থেকে অবগত থাকলেও ২০১৩ সালের ১০ই আগস্ট প্রাথমিকভাবে স্থানটি শনাক্ত করে খননকাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। ২০১৪ সালের ১৮ই জানুয়ারি এর খননকার্য শুরু হয় ও আস্তে আস্তে আবিষ্কৃত হয় প্রাচীন রাজার এই রাজধানীর ধ্বংসবাশেষ।[২]

খনন করার পর এখানে বেশ কয়েকটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। মনে করা হয় রাজ্যটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী শাসক দ্বারা শসিত হলেও এখানে হিন্দুদের উল্লেখযোগ্য হারে বসতি ছিল। এছাড়াও, এখানে প্রাচীন দেয়ালের ধ্বংসাবশেষ, বিভিন্ন নকশা অঙ্কিত ব্যবহার্য এবং পোড়া মাটির ফলক আবিষ্কৃত হয়েছে।

তবে পরবর্তিতে পাওয়া একটি ভবনের ভাঙ্গা অংশ দেখে অনেকেই মনে করেন এটি মুসলিম স্থাপত্যের অংশ। অনেকেই মনে করেন মধ্যযুগে এ অঞ্চলি মুসলিমরা শাসন করেছে। এছাড়াও প্রত্নতত্ত্ববিদ ড. আতাউর রহমানের মতে,

বাংলাদেশে শিক্ষিত বাঙালি মুসলিম সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে ১২৭৫ সালে সোনারগাঁও থেকে। সেসময় শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্ররা আসতো। সেসময় প্রায় দুইশ’ বছর মুসলিম শাসন ছিল। বড়ইবাড়ি ঢোলসমুদ্র সেই প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার ছোট কেন্দ হতে পারে। এটি শাসন রাজ্যের রাজধানীও হতে পারে।

তবে অনেক প্রত্নতত্ত্ববিদেই মনে করেন, স্থাপত্যরীতিটি মুসলিম শাসনের অংশ বলে মনে হলেও এটি নিশ্চিত করে বলা যায়। ষোলশ থেকে সতেরশ শতকে এ অঞ্চলে বৈষ্ণব ধর্মানুসারীদের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়। এটি তাদের তৈরিও হতে পারে।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা