ফিদান দোগান (১৭ই জানুয়ারি ১৯৮২  - ৯ই জানুয়ারি ২০১৩) ছিলেন একজন কুর্দি সক্রিয় কর্মী এবং কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য। তিনি প্যারিসের কুর্দি তথ্য কেন্দ্রে কাজ করেছিলেন এবং ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত ব্রাসেলস ভিত্তিক কুর্দি ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ২০১৩ সালের ৯ই জানুয়ারি কুর্দিস্তান তথ্যকেন্দ্র প্রাঙ্গণে কুর্দি কর্মী সাকিঁ জান্সিজ, ফিদান দোগান এবং লায়লা সয়লেমেজকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। ফ্রান্সের তদন্তে অসংখ্য ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল যে সন্দেহভাজন হত্যাকারী ওমার গনি, যিনি অপরাধের কয়েক দিন পরে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তিনি তুর্কি সিক্রেট সার্ভিসের (এমআইটি) পক্ষে কাজ করছিলেন।[১]

ফিদান দোগান
২০১২ সালে স্ত্রাসবুরে ফিদান দোগান
জন্ম১৭ই জানুয়ারি ১৯৮২
মৃত্যু৯ জানুয়ারি ২০১৩(2013-01-09) (বয়স ৩০)
প্যারিস, ফ্রান্স
মৃত্যুর কারণমৃত্যুদণ্ডেরর ধরণে গুলিবর্ষণ
পেশাকুর্দি অধিকার প্রবক্তা

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা সম্পাদনা

দক্ষিণ তুরস্কের এলবিস্তানে জন্মগ্রহণ করে, অল্প বয়সেই দোগান ফ্রান্সে চলে গিয়েছিলেন। তিনি স্ত্রাসবুরে বড় হয়েছেন এবং সেখানেই নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপ্ত করেছেন। তিনি কুর্দিস্তান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং একজন সক্রিয় নারী অধিকার কর্মী ছিলেন।[২]

মৃত্যু সম্পাদনা

২০১৩ সালের ৯ই জানুয়ারি প্যারিসে তাঁকে হত্যা করা হয়। তাঁর সঙ্গেই সাকিঁ জান্সিজ এবং লায়লা সয়লেমেজকেও হত্যা করা হয়েছিল।[৩][৪] ১৭ই জানুয়ারি দিয়ারবাকিরে হাজার হাজার কুর্দি এক অনুষ্ঠানে সমবেত হয়ে এই তিন মহিলাকে স্মরণ করেন।[৫] মৃত্যুর পর, তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন একজন আলেভি দেদে[৬] তাঁকে এলবিস্তান জেলার কাহরমানমারাস প্রদেশে তাঁর পরিবারের গ্রামে সমাধিস্থ করা হয়েছিল।[৭]

পরে সম্পাদনা

তাঁর মৃত্যুর পর বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন থেকে বোঝা যায় যে তিনি রাজনৈতিক মহলে সুপরিচিত ছিলেন, সেইসাথে তিনি ছিলেন পিকেকে -এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল্লাহ ওজালানের ঘনিষ্ঠ। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট, মার্টিন শুলজ, স্বয়ং উপস্থিত থেকে তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছিলেন। ইউরোপের পার্লামেন্টারি অ্যাসেম্বলি কাউন্সিলের তুরস্কের প্রতিবেদক, জোসেটে ডুরিউ, প্রদীপ্ত পরিভাষায় তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন।[৮][৯]

ফ্রঁসোয়া ওলঁদের দেওয়া বিবৃতি যে তিনি প্যারিসে নিহত তিন নারীর একজনকে জানতেন (যার পরে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ান তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন), তার থেকে ধারণা করা হয়েছিল যে দোগানও ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে ছিলেন।[১০][১১]

তাঁর মৃত্যুর পর, এই জল্পনা ছিল যে তিন মহিলার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আসলে তুর্কি কর্তৃপক্ষ এবং ওজালানের মধ্যে সম্প্রতি শুরু হওয়া শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যর্থ করার একটি প্রচেষ্টা।[১২][১৩]

প্যারিসে নিষিদ্ধ পিকেকে- এর অন্যতম সহকর্মী সহ তিনজন কুর্দি কর্মীকে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে হত্যার সন্দেহভাজন একজন ৩৪ বছর বয়সী তুর্কি ব্যক্তি ওমার গনি, প্যারিসের একটি হাসপাতালে বিচার শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে মারা যান।[১৪]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "100 reasons to prosecute Erdoğan for his feminicidal policies!"। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  2. "Fidan Dogan, l'une des trois militantes kurdes assassinées à Paris a vécu à Strasbourg"। France 3। ২০১৩-০১-১০। ২০১৩-০১-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-২৩ 
  3. "Who Murdered Sakine Cansız?"Amnesty International USA (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-০১-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-০৯ 
  4. "Kurdish activists shot dead in Paris"। The Guardian। ২০১৩-০১-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-১২ 
  5. Reynolds, James (২০১৩-০১-১৭)। "Calls for peace at slain PKK activists' funerals" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-২৭ 
  6. Paris killing victim buried with participation of thousands, Doğan News Agency, dated 18 January 2013.
  7. "Paris killing victim buried with participation of thousands"Hurriyet। ২০১৩-০১-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-১৭ 
  8. "FIDAN DOGAN'S FAMILY INVITED TO EU SESSION IN STRASSBURG"। Mesop। ২০১৩-০১-১৫। ২০১৩-০২-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-২৩ 
  9. "Assassinat de trois femmes kurdes"। The Guardian। ২০১৩-০১-১৭। ২০১৩-০২-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-২৩ 
  10. "Erdogan queries Hollande links with dead Kurd"। Al Jazeera। ২০১৩-০১-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-২৩ 
  11. "ERDOĞAN CALLS ON HOLLANDE TO EXPLAIN WHY HE MET WITH A PKK TERRORIST"। Sabah। ২০১৩-০১-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-২৩ 
  12. "Kurdistan's Female Fighters"। Roj women। ২০১৩-০২-১৫। ২০১৩-০৩-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-১৭ 
  13. "3 Kurdish women political activists shot dead in Paris"। CNN। ২০১৩-০১-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-১৭ 
  14. "Suspect in murders of Kurdish activists dies in Paris hospital"। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১