ফাড় চিত্রকর্ম বা ফাড় (সংস্কৃত লিপ্যান্তরের আন্তর্জাতিক বর্ণমালা: Phad, হিন্দি: फड़ ) হল ভারতের রাজস্থান রাজ্যে অনুশীলিত গোটান কাগজে চিত্রকর্ম এবং লোকশিল্পের একটি শৈলী[১][২]

পাবুজির ফাড়-এ লোক-দেবতা পাবুজি, জাতীয় সংগ্রহালয়, নতুন দিল্লিতে রক্ষিত ফাড় চিত্রাঙ্কন

বর্ণনা সম্পাদনা

এই শৈলীর চিত্রকর্মটি ঐতিহ্যগতভাবে একটি দীর্ঘ কাপড় বা ক্যানভাসে করা হয়, যেটি ফাড় নামে পরিচিত। রাজস্থানের লোক দেবদেবীদের বিবরণ, বেশিরভাগই পাবুজি এবং দেবনারায়ণকে নিয়ে, ফাড়এ চিত্রিত হয়েছে। 'ভোপা' যাজক-গায়করা ঐতিহ্যগতভাবে আঁকা ফাড় কে সাথে রাখেন এবং এবং সেগুলিকে এই অঞ্চলের রেবারী সম্প্রদায় দ্বারা উপাসনা করা লোক দেবদেবীদের চলমান মন্দির হিসাবে ব্যবহার করেন। পাবুজির ফাড় সাধারণত দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৫ ফুট হয়, আর দেবনারায়ণের ফাড় সাধারণত ৩০ ফুট দীর্ঘ। ঐতিহ্যগতভাবে ফাড় প্রাকৃতিক রঙে আঁকা হয়।

রাজস্থানের ভিলওয়াড়া জেলার ভিলওয়াড়া এবং শাহপুরার জোশী পরিবারগুলি গত দুই শতাব্দী ধরে এই লোকশিল্পের ঐতিহ্যবাহী শিল্পী হিসাবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। বর্তমানে, শ্রী লাল জোশী, নন্দ কিশোর জোশী, প্রদীপ মুখার্জি, প্রকাশ জোশী, ঘনশ্যাম জোশী এবং শান্তি লাল জোশঈ ফাড় চিত্রকলার সর্বাধিক প্রখ্যাত শিল্পী। তাঁরা তাঁদের উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতার জন্য পরিচিত।

ফাড়ের কিছু উদাহরণ সম্পাদনা

এই শিল্পের পরম্পরাগত উদাহরণ হল দেবনারায়ণের ফাড় এবং পাবুজির ফাড়[৩][৪] প্রায় চল্লিশ বছর আগে শ্রী লাল জোশী এবং প্রদীপ মুখার্জি এই শৈলীতে বিপ্লব এনেছিলেন। মুখার্জির চিত্রকর্মগুলি রামচরিতমানস, গীতগোবিন্দম্, কুমারসম্ভবম্, ভগবদ্গীতা এবং হনুমান চালিশার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত।[৫] ফাড় চিত্রকলার শিল্পটি যোশী সম্প্রদায় একচেটিয়াভাবে অনুশীলন করেছিল। কিন্তু পরে, ১৯৬০ সালে, শ্রী লাল জোশী প্রত্যেককে এই শিল্পশৈলী শেখার সুযোগ করে দেবার জন্য 'জোশী কলা কেন্দ্র' নামে একটি বিদ্যালয় খোলেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টির নাম 'চিত্রশালা'। [৬][৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Chillibreeze। Indian Murals and Paintings। Chillibreeze। পৃষ্ঠা 14–। আইএসবিএন 978-81-904055-1-5 
  2. Rakesh Kumar (২০০৭)। Encyclopaedia of Indian paintings। Anmol Publications। পৃষ্ঠা 83। আইএসবিএন 978-81-261-3122-8 
  3. Dalrymple, William (২০০৯)। Nine LivesThe Singers of Epics। Bloomsbury Publishing Plc। পৃষ্ঠা 96–97। আইএসবিএন 1-4088-0153-1। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-১৩ 
  4. "The bhopas of Rajasthan"। The National। ২০০৯-০৯-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-১৩ 
  5. Shilp Guru Awards 2007 and 2008। New Delhi: Ministry of Textiles, Government of India। ২০০৮। পৃষ্ঠা 40–41। 
  6. Chaudhuri, Zinnia Ray। "Phad paintings: Rajasthan's travelling temples are fading away after half a millennium"Scroll.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-১৫ 
  7. "Chitrashala: Keeping Phad Art alive"The Better India (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১০-০৯-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-১৫ 

আরো পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা