প্রিয়া আমার প্রিয়া
প্রিয়া আমার প্রিয়া হচ্ছে ২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী কৌতুক মারপিট প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন বদিউল আলম খোকন এবং আশা প্রোডাকশনের ব্যানারে প্রযোজনা করেছেন মনির হোসেন। পূর্বনির্মিত চলচ্চিত্র অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির কাহিনী লিখেছেন মনির হোসেন এবং সংলাপ লিখেছেন শচীন নাগ। চলচ্চিত্রটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাকিব খান ও সাহারা। এছাড়াও মিশা সওদাগর, প্রবীর মিত্র, আফজাল শরীফ ও রেহানা জলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।[৪]
প্রিয়া আমার প্রিয়া | |
---|---|
পরিচালক | বদিউল আলম খোকন |
প্রযোজক | মনির হোসেন |
রচয়িতা | শচীন নাগ (সংলাপ) |
কাহিনিকার | মনির হোসেন |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | আলী আকরাম শুভ |
চিত্রগ্রাহক | আসাদুজ্জামান মজনু |
সম্পাদক | জিন্নাত হোসেন জিন্নাহ |
প্রযোজনা কোম্পানি | আশা প্রডাকশন্স |
পরিবেশক | আশা প্রডাকশন্স |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ২ ঘন্টা ৪৫ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
নির্মাণব্যয় | ৳৭৫ লাখ |
আয় | প্রা. ৳১৫ কোটি[২][৩] |
এটি ২০০২ সালের পুনীত রাজকুমার অভিনীত কন্নড় ভাষার আপ্পু চলচ্চিত্রের পুনঃনির্মাণ, যা তেলুগু ভাষায় ইডিয়ট (২০০২),[৫] তামিল ভাষায় দম (২০০৩) এবং বাংলা ভাষায় হিরো (২০০৬) নামে পুনঃনির্মিত হয়। চলচ্চিত্রটি ২০০৮ সালের ১৩ জুন বাংলাদেশে মুক্তি পায়। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শাকিব খান শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসাবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, ইউরো-সিজেএফবি পারফরমেন্স পুরস্কার ও লাক্স চ্যানেল আই পারফরম্যান্স অর্জন করেন।[৬]
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনাহৃদয় (শাকিব খান) একজন কলেজ ছাত্র। সে থানার হেড কনস্টেবল রহমান আলীর (প্রবীর মিত্র) ছেলে। এক রাতে বন্ধুদের সাথে ক্যারম খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে কলেজের তার বিরোধী কিছু সন্ত্রাসীরা তাকে মেরে আহত করে পালিয়ে যায়, সেখান থেকে প্রিয়া (সাহারা) তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং রক্ত দিয়ে তার জীবন রক্ষা করে। হৃদয় তাকে না দেখেই শুধু বন্ধুদের কাছে তার প্রশংসা শুনে প্রেমে পড়ে যায়। সুস্থ হয়ে সে প্রিয়ার পিছু নেয় এবং বাড়ির কাজের লোককে দিয়ে চিঠি পাঠায়। প্রিয়া পুলিশ কমিশনার রাশেদ রায়হান চৌধুরীর (মিশা সওদাগর) একমাত্র বোন। সে তার ভাইকে হৃদয়ের পিছু নেওয়ার বিষয়টি জানায়। হৃদয়কে রাশেদ রায়হান চৌধুরী প্রথমে ভয় দেখায় এবং পরে মারধর করে, এবং বিভিন্ন সময় তাকে ও তার পরিবারকে হেনস্তা করতে থাকে যেন সে প্রিয়াকে ভুলে যায়। রহমত আলী কমিশনারের অতীত কর্মজীবন সম্পর্কে জ্ঞাত থাকায়, তিনি হৃদয়কে প্রিয়ার জীবন থেকে সরে যাবার পরামর্শ দিতে থাকেন। কিন্তু এক পর্যায়ে প্রিয়াও হৃদয়কে ভালোবাসতে শুরু করে।
আইনের লোক হয়ে কিছু করতে না পারায় রাশেদ রায়হান চৌধুরী একজন সন্ত্রাসীকে দিয়ে হৃদয়কে খুন করাতে চায়। সন্ত্রাসীরা হৃদয়কে পিটিয়ে আহত করলে হৃদয়ের বন্ধুরা হৃদয়কে হাসপাতালে নিতে থাকে, অন্যদিকে প্রিয়া হৃদয়কে অনুসরণ করে দৌড়াতে থাকে। এমন সময়ে দৌড়াতে দৌড়াতে প্রাইভেট কারের সাথে ধাক্কা লেগে প্রিয়া পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। হৃদয় এবং প্রিয়া আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে দুজনে একই হাসপাতালে ভর্তি হয়। হাসপাতালে বন্ধুদের সহযোগিতায় হৃদয় পালিয়ে প্রিয়াকে দেখতে যায়। প্রিয়ার ভাই তাদের সম্পর্ক মেনে নিতে চায় না এবং হৃদয়কে যে কোন মূল্যে প্রিয়ার জীবন থেকে সরিয়ে দিতে চায়। হৃদয় প্রিয়াকে নিয়ে পালাতে থাকলে সন্ত্রাসীরা হৃদয়ের পিছু নেয়। এরপর হৃদয় বাংলাদেশ পুলিশের আইজির (সিরাজ হায়দার) কাছে গিয়ে এসব ঘটনা খুলে বলে, আইজি সাহেব এসব শুনে রাশেদ রায়হান চৌধুরীকে শেষ সুযোগ দেন এবং বলেন ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা আবার ঘটালে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। আইজি সাহেবের কথা শুনে রাশেদ রায়হান চৌধুরী ভীতসন্ত্রস্ত হন এবং তার মন গলে যায়। অবশেষে তিনি হৃদয় ও প্রিয়ার সম্পর্ক মেনে নেয়।
অভিনয়
সম্পাদনা- শাকিব খান - হৃদয়
- সাহারা - প্রিয়া
- প্রবীর মিত্র - রহমত আলী, পুলিশের হাবিলদার, হৃদয়ের বাবা
- রেহানা জলি - হৃদয়ের মা
- মিশা সওদাগর - রাশেদ রায়হান চৌধুরী, একজন পুলিশ কমিশনার, প্রিয়ার বড় ভাই
- মেহেদী - আসিফ, হৃদয়ের বন্ধু
- আফজাল শরীফ - হৃদয়ের বন্ধু
- মাধুরী - লতা, হৃদয়ের বোন
- সাদেক বাচ্চু - পুলিশ
- ববি
- ইলিয়াস কোবরা - শিকদার
- সিরাজ হায়দার - স্বভূমিকা; আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ (বিশেষ উপস্থিতি)
প্রযোজনা
সম্পাদনাচলচ্চিত্রটিতে প্রধান অভিনেতা শাকিব খান দেড় লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেন। ২০০৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আশা প্রোডাকশনের কার্যালয়ে ২৫ হাজার টাকা সাইনিং মানি নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি।
২০০৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর চলচ্চিত্রটির চিত্রগ্রহণ শুরু হয়। কয়েকটি লটে চিত্রগ্রহণ করা হয় চলচ্চিত্রের।[৭] ২০০৭ সালের শেষের দিকে চলচ্চিত্রটির চিত্রগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
সঙ্গীত
সম্পাদনাপ্রিয়া আমার প্রিয়া | ||||
---|---|---|---|---|
কর্তৃক সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম | ||||
মুক্তির তারিখ | ১৩ জুন ২০০৮ | |||
স্টুডিও | অনুপম রেকর্ডিং মিডিয়া | |||
ঘরানা | পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সঙ্গীত | |||
দৈর্ঘ্য | ২১:৪০ | |||
ভাষা | বাংলা | |||
সঙ্গীত প্রকাশনী | অনুপম রেকর্ডিং মিডিয়া | |||
প্রযোজক | আলী আকরাম শুভ | |||
আলী আকরাম শুভ কালক্রম | ||||
|
চলচ্চিত্রটির সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আলী আকরাম শুভ এবং সবগুলো গানের গীত রচনা করেছেন কবির বকুল। এতে সর্বমোট পাঁচটি গান ব্যবহার করা হয়েছে।
গানের তালিকা | |||
---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | সঙ্গীতশিল্পী (রা) | দৈর্ঘ্য |
১. | "নিঃশ্বাস আমার তুমি" | এস আই টুটুল | ৪:৩২ |
২. | "চুপি চুপি কথা" | সৈয়দ আব্দুল হাদী, সাবিনা ইয়াসমিন | ৪:৩১ |
৩. | "ফার্স্ট ইয়ার ড্যাম কেয়ার (First Year Damn Care)" | আসিফ আকবর | ৩:৪৮ |
৪. | "আমি যে তোমারি প্রেমেতে পড়েছি" | সাবিনা ইয়াসমিন | ৪:২৬ |
৫. | "তোমায় ছাড়া বেঁচে থাকা" | সাবিনা ইয়াসমিন, এন্ড্রু কিশোর | ৪:২৩ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ২১:৪০ |
মুক্তি
সম্পাদনাচলচ্চিত্রটি ২০০৮ সালের ১৩ জুন বাংলাদেশের ৩৩টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।
অভ্যর্থনা
সম্পাদনাবক্স অফিস
সম্পাদনাচলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে ১৫ কোটি টাকা আয় করে, যা সর্বোচ্চ আয়ের বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের তালিকায় চতুর্থ স্থান দখল করে নেয়।[২][৭]
পুরস্কার
সম্পাদনাপুরস্কার | মনোনীত | বিভাগ | ফলাফল | সূত্র |
---|---|---|---|---|
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার | শাকিব খান | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা | বিজয়ী | |
ইউরো-সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার | বিজয়ী | |||
লাক্স চ্যানেল আই পারফরম্যান্স পুরস্কার | বিজয়ী |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Movie List 2008"। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি। ১৭ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭।
- ↑ ক খ "যে সিনেমা শাকিবের ভাগ্য বদলে দেয়"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৪।
- ↑ "পঞ্চাশ লাখ টাকা বাজেটের সিনেমা থেকে ১৫ কোটি টাকা আয়!"। যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০৫।
- ↑ "'প্রিয়া আমার প্রিয়া'র পর আবার শাকিব ও সাহারা"। দৈনিক প্রথম আলো। ১ জুন ২০১০। ২০১৭-০৬-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭।
- ↑ Shenoy, Megha (২৯ নভেম্বর ২০০৯)। "Inspiration for remakes"। ডেকান হেরাল্ড। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭।
- ↑ "Meril-Prothom Alo Award ceremony held"। দ্য ডেইলি স্টার। ১১ এপ্রিল ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭।
- ↑ ক খ "'প্রিয়া আমার প্রিয়া'র এক যুগ: ছবির আয় ১৫ কোটি, শাকিবের পারিশ্রমিক ছিলো দেড় লাখ"। চ্যানেল আই অনলাইন। ১৩ জুন ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২০।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাবাংলা মুভি ডেটাবেজে প্রিয়া আমার প্রিয়া