প্রিন্স জর্জ অব ওয়েলস

(প্রিন্স জর্জ অফ কেমব্রিজ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

প্রিন্স জর্জ অফ কেমব্রিজ (ইংরেজি: Prince George of Cambridge; জন্ম: ২২ জুলাই, ২০১৩) প্রিন্স উইলিয়াম, ডিউক অব কেমব্রিজ এবং ক্যাথরিন, ডাচেস অফ কেমব্রিজের পুত্র সন্তান। তার পুরো নাম জর্জ আলেকজান্ডার লুইস[fn ১][২][৩] তিনি রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথপ্রিন্স ফিলিপ, ডিউক অফ এডিনবরার প্র-পৌত্র। কমনওয়েলথ রাজ্য নামে পরিচিত ষোলটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের (যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জামাইকা, বারবাডোস, বাহামা, গ্রেনাডা, পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, টুভালু, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডাইন, বেলিজ, অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা এবং সেন্ট কিটস ও নেভিস) সিংহাসনের উত্তরাধিকারীর সারিতে তার অবস্থান তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ব্রিটিশ রাজসিংহাসনে তার পূর্বে রয়েছেন দাদা চার্লস, প্রিন্স অফ ওয়েলস[৪] এবং বাবা প্রিন্স উইলিয়াম, ডিউক অফ কেমব্রিজ[৫][৬]

প্রিন্স জর্জ
জন্ম(২০১৩-০৭-২২)২২ জুলাই ২০১৩ (বয়স: ১০ বছর)
সেন্ট মেরি’জ হসপিটাল, লন্ডন, ইংল্যান্ড
পূর্ণ নাম
জর্জ আলেকজান্ডার লুইস[fn ১]
রাজবংশহাউজ অফ উইন্ডসর
পিতাপ্রিন্স উইলিয়াম, ডিউক অফ কেমব্রিজ
মাতাক্যাথরিন, ডাচেস অফ কেমব্রিজ

জন্ম ইতিহাস সম্পাদনা

৩ ডিসেম্বর, ২০১২ সালে সেন্ট জেমসে’স প্যালেস থেকে ঘোষণা করা হয় যে ডাচেস গর্ভবতী এবং তার প্রথম সন্তানের আশা করা হচ্ছে। সনাতনী ধারার বিরোধী হিসেবে কমপক্ষে বারো সপ্তাহ পূর্বেই এ ঘোষণা করা হয়। অসুস্থ অবস্থায় অষ্টম কিং এডওয়ার্ড হসপিটাল সিস্টার আগ্নেসে তিনি তিনদিন অবস্থান করেন।[৭][৮] ১৪ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে সেন্ট জেমসে’স প্যালেস থেকে ঘোষণা করে যে, জুলাই, ২০১৩ সালে সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে এবং ডাচেসের অবস্থার উত্তোরণ ঘটছে। ২২ জুলাই, ২০১৩ তারিখ প্রত্যুষে লন্ডনের সেন্ট মেরি’জ হাসপাতালে নেয়া হয়।[৯][১০]

ব্রিটিশ সময় মান ১৬:২৪ ঘটিকায় পুত্র সন্তান জন্ম দেন কেট মিডলটন। নবজাতকের ওজন ছিল ৮ পাউন্ড ৬ আউন্স (৩.৮০ কেজি)।[১১][১২] জন্মকালীন সময়ে ডিউক স্ত্রীর কাছে ছিলেন।[১৩] যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন আরএএফ-এর অনুসন্ধান ও উদ্ধার শাখার পাইলট হিসেবে কর্মরত ডিউক দুই সপ্তাহের পিতৃত্বকালীন ছুটি লাভ করেন।[১৪] জর্জের জন্ম হয় লিন্ডো উইং শাখায়, যেখানে ডায়ানা, প্রিন্সেস অফ ওয়েলসের গর্ভে ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে যথাক্রমে প্রিন্স উইলিয়াম এবং তার ভাই প্রিন্স হ্যারি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দ্বিতীয় এলিজাবেথের সাবেক গাইনোকোলজিস্ট মার্কাস সেটচেল ও তার সহযোগী গাই থর্প-বিস্টোন, সুনীত গোদাম্বে ও রাণীর চিকিৎসক জন কানিংহাম নবজাতককে ভূমিষ্ঠ করান।[১১][১৩][১৫]

ঘোষণা পাঠ সম্পাদনা

বাকিংহাম প্রাসাদের মুখপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে রাজকীয় জন্মের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।[১২][১৬] বন্দুকের গুলি ছোড়ে বারমুদা,[১৭] লন্ডন,[১৮] নিউজিল্যান্ড[১৯] এবং কানাডায়[২০] জন্মের ঘোষণাকে স্বাগতঃ জানানো হয়। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেসহ অনেক গির্জায় ঘণ্টা বাজানো হয়।[২১][২২]

প্রিন্সের জন্মগ্রহণের ফলে একই সাথে তিন প্রজন্ম জীবিত থাকাকালীন সময়ে সরাসরি রাজসিংহাসনের দাবীদার হলেন। রাণী ভিক্টোরিয়ার শাসনামলের শেষ সাত বছর ১৮৯৪ থেকে ১৯০১ সালে সর্বশেষ এ সমস্যার উদ্ভব ঘটেছিল।[২৩]

জন্মের একদিন পর ২৪ জুলাই, ২০১৩ তারিখে ডিউক ও ডাচেসকে সন্তানসহ হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদেরকে তাদের সন্তানকে দেখানো হয়।[২৪] প্রিন্সের নামকরণ করা হয় জর্জ আলেকজান্ডার লুইস।

উল্লেখযোগ্য মাইলফলক সম্পাদনা

উইলিয়াম-কেট দম্পত্তির সন্তান প্রিন্স জর্জ হচ্ছেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি জন্মের পূর্বেই উইকিপিডিয়া’র নিবন্ধে স্থান পেয়েছেন।[২৫]

জন্মের পূর্বে ধারণা করা হয়েছে যে, জাতীয় অর্থনীতি এবং জাতীয় সম্মান আরও বৃদ্ধি পাবে।[২৬][২৭] ওয়েলশের সুরকার পল মিলর স্লিপ অন শিরোনামে গানের সুর তৈরী করেন ও গীত রচনা করেন আইরিশ সুরকার ব্রেন্ডন গ্রাহাম। উল্লেখ তার পিতা-মাতা’র বিয়ের গান উবি কারিতাস অ্যাট অ্যামর তিনিই সুর করেছিলেন। শিশুর উপহারস্বরূপ নিউজিল্যান্ডের সুকণ্ঠী গায়িকা হেলে ওয়েস্টেনরা তা রেকর্ড করেন।[২৮][২৯][৩০]

রাজকীয় কোষাগার থেকে ১০,০০০ স্টার্লিং সিলভার ক্রাউন (ব্রিটিশ মুদ্রা), যার প্রতিটির মূল্যমান £৫ পাউন্ড এবং ২,০১৩টি ২২ ক্যারটের স্বর্ণমুদ্রা জন্ম স্মারকস্বরূপ প্রকাশ করে। এটি হচ্ছে প্রথম রাজকীয় জন্ম, যেখানে মুদ্রা প্রকাশ করা হয়েছে।[৩১]

উপাধি সম্পাদনা

  • ২২ জুলাই, ২০১৩ – বর্তমান: হিজ রয়্যাল হাইনেস প্রিন্স জর্জ অফ কেমব্রিজ[৩২]

১৯১৭ সালে রাজা পঞ্চম জর্জ[৩৩] এবং ২০১২ সালে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ[৩৪][৩৫] প্রণীত রাজাজ্ঞা পত্রের মাধ্যমে জন্মসূত্রে জর্জ ব্রিটিশ রাজকুমার হয়েছেন এবং রয়্যাল হাইনেস নামে সম্বোধন করতে হবে। ২২ জুলাই, ২০১৩ তারিখে বাকিংহাম প্রাসাদে ঘোষিত প্রজ্ঞাপনমাফিক যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ডিউকদের অন্যান্য সন্তানদের ন্যায় (যেমন: প্রিন্সেস অফ ওয়েলস) তিনিও তার পিতার মতো আঞ্চলিক উপাধিপ্রাপ্ত হবেন।[৩৬] ঐ হিসেবে কেমব্রিজ উপাধিটিও তিনি তার পিতার উপাধি ডিউক অফ কেমব্রিজ প্রাপ্ত হবেন।[৩৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "The Royal Family name"The Official Website of the British Monarchy। The Royal Household। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৩ 
  2. Kensington Palace (the official London residence of the Duke and Duchess of Cambridge) said: "The Duke and Duchess of Cambridge are delighted to announce that they have named their son George Alexander Louis. The baby will be known as His Royal Highness Prince George of Cambridge."[১]
  3. "Royal baby: Kate and William name their son George Alexander Louis"Yahoo News। ২৪ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৩ 
  4. http://www.theringbearer.ca/wedding_style.php?aid=7970[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. Gilbert, Dave (২৫ জুন ২০১৩)। "Q&A: Who can inherit the British throne"। CNN। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৩ 
  6. Booth, William (৩ ডিসেম্বর ২০১২)। "William and Kate's baby boy or girl will be third in line to throne"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৩ 
  7. "Royal pregnancy: Duchess leaves hospital"। BBC News। ৬ ডিসেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১২ 
  8. "The Duke and Duchess of Cambridge are expecting a baby"। Clarence House। ৩ ডিসেম্বর ২০১২। ৬ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১২ 
  9. Saul, Heather (২২ জুলাই ২০১৩)। "Royal baby: Duchess of Cambridge goes into labour"The Independent। ১৬ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৩ 
  10. Davies, Caroline (২২ জুলাই ২০১৩)। "Duchess of Cambridge in labour and admitted to hospital"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৩ 
  11. Davies, Caroline (২৪ জুলাই ২০১৩)। "Prince of Cambridge's parents present him to the world at first photocall"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৩As is traditional, the birth announcement also appeared in the Court Circular, the published diary of royal engagements which was started by George III in 1803. It read: "KENSINGTON PALACE 22nd July, 2013. The Duchess of Cambridge was safely delivered of a son at 4.24 p.m. today. Her Royal Highness and her child are both well. Signed: Marcus Setchell, Guy Thorpe-Beeston, Sunnit Godambe, John Cunningham." The signatories are the medical team who attended the duchess during the birth. 
  12. Owen, Paul; Walker, Peter; Quinn, Ben; Gabbatt, Adam (২২ জুলাই ২০১৩)। "Royal baby: Duchess of Cambridge gives birth to a boy – live coverage"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৩ 
  13. "Royal baby: Kate gives birth to boy"। BBC। ২২ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৩ 
  14. "Royal baby: William and Kate name their son George"। BBC News। ২৪ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৩ 
  15. Rayner, Gordon (২২ জুলাই ২০১৩)। "Duchess of Cambridge gives birth to baby boy"The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৩The Queen's gynaecologist, Alan Farthing, was not present. 
  16. "Royal baby bulletin displayed at palace (video)"। BBC। ২২ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৩ 
  17. "Royal Baby Born, Regiment to Fire 21 Gun Salute"Bernews। ২২ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৩ 
  18. "Royal Baby: Birth Marked With Gun Salutes"। Sky News। ২৩ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১৩ 
  19. Shuttleworth, Kate (২৩ জুলাই ২০১৩)। "Royal baby: NZ marks birth with 21-gun salute"The New Zealand Herald। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১৩ 
  20. "Special Gun Salute Honours Birth of Royal Baby", Market Wired, ২৩ জুলাই ২০১৩, সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১৩ 
  21. "Live: Royal baby welcomed with full peal of bells at Westminster Abbey (video)"The Telegraph। ২৩ জুলাই ২০১৩। ২৪ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১৩ 
  22. "The birth of HRH Prince George Alexander Louis of Cambridge"Bell Board। The Ringing World। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৩ 
  23. Saul, Heather (২২ জুলাই ২০১৩)। "Royal baby: Three heirs to the throne in line for first time – and the fact it's a boy avoids gender issue"The Independent। ১৬ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১৩ 
  24. "William and Kate head home with baby prince"। BBC News। ২৩ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৩ 
  25. Jordon-Lee (২ জুলাই ২০১৩)। "Prince William and Kate's baby becomes first person to get Wikipedia page before being born"Royal Central 
  26. ""Baby Bounce: Royal infant may help UK economy", by Danica Kirka, Associated Press"। ১৫ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৩ 
  27. "Campaign launched to show national pride", by Kathie Griffiths, The Telegraph & Argus
  28. Furness, Hannah (৭ মে ২০১৩)। "Royal Wedding composer writes lullaby for Duke and Duchess of Cambridge's baby"The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৩ 
  29. "Brendan Graham pens song for Prince William & Kate Middleton"Hot Press। ৯ মে ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৩ 
  30. "Hayley Westenra / Paul Mealor / Brendan Graham – Sleep On (Gift for Royal Baby) (Lyric Video)"। YouTube। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৩ 
  31. Low, Valentine (২৬ জুলাই ২০১৩)। "Royal Mint strikes lucky with prince's name"। The Times। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৩ 
  32. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৯ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৩ 
  33. Nicolson, Sir Harold (১৯৫২)। King George the Fifth: His Life and Reign। London: Constable and Co। পৃষ্ঠা 310। 
  34. "নং. 60384"দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়): 213। ৮ জানুয়ারি ২০১৩। 
  35. "Royal baby girl 'would be princess'"। BBC News। ৯ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৩ 
  36. The Duke and Duchess of Cambridge – The Duchess of Cambridge has been delivered of a son ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩১ মার্চ ২০১৬ তারিখে. Retrieved 23 July 2013
  37. [২] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুলাই ২০১৩ তারিখে The Prince of Wales and The Duchess of Cornwall News and Diary, 24th July 2013

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. Titled royals such as George do not normally use a surname. When one is needed for British royals, it is usually Mountbatten-Windsor,[১] although others have been used in certain contexts.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা


প্রিন্স জর্জ অব ওয়েলস
জন্ম: ২২ জুলাই ২০১৩
উত্তরাধিকারসূত্রে লাইন
পূর্বসূরী
দ্য ডিউক অফ কেমব্রিজ
ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের দাবীদার
৩য় অবস্থান
উত্তরসূরী
প্রিন্স হেনরি অফ ওয়েলস