পীযূষকান্তি সরকার
পীযূষকান্তি সরকার (৩১ অক্টোবর ১৯৩৭ — ৩০ জুলাই ২০০১) ছিলেন প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী।[১]
পীযূষকান্তি সরকার | |
---|---|
জন্মনাম | পীযূষকান্তি সরকার |
জন্ম | ফুলেশ্বর, হাওড়া পশ্চিমবঙ্গ | ৩১ অক্টোবর ১৯৩৭
মৃত্যু | ৩০ জুলাই ২০০১ কলকাতা , পশ্চিমবঙ্গ , ভারত | (বয়স ৬৩)
ধরন | রবীন্দ্রসঙ্গীত |
পেশা | সঙ্গীতশিল্পী |
কার্যকাল | ১৯৫৪–২০০১ |
লেবেল | এইচএমভি, ইএমআই, সিবিএস |
সংক্ষিপ্ত জীবনী
সম্পাদনাপীযূষকান্তি সরকারের জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে। পৈতৃক নিবাস ছিল হাওড়া জেলার ফুলেশ্বরে। পিতা হিমাংশুকুমার সরকার ছিলেন কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের একজন আইনজীবী এবং মাতা স্মৃতিরেখা দেবী ছিলেন সাধারণ গৃহবধূ তবে ভালো রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেন। পীযূষকান্তির শৈশব থেকেই সঙ্গীতের প্রতি গভীরভাবে আগ্রহ ছিল। তার পড়াশোনা হাওড়ার উলুবেড়িয়া হাই স্কুলে। কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে ইংরাজী সাহিত্য অনার্স সহ স্নাতক হন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে দিল্লিতে সারা ভারত আন্তর্বিশ্ববিদ্যালয় যুব উৎসবে সমবেত লোকসঙ্গীত প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। পড়াশোনার মধ্যেই ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শিক্ষা নেন পণ্ডিত নিদানবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। কিশোর বয়স থেকে একটানা কুড়ি বৎসর গান গেয়েছেন আকাশবাণীতে।[১] অবশ্য কর্মজীবনের প্রথমদিকে বাগনান হাই স্কুলে ইংরাজির শিক্ষক ছিলেন তিনি।
সঙ্গীত জীবন
সম্পাদনাকিন্তু পরবর্তীতে পুরোপুরি সঙ্গীত জগতে চলে আসেন। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে বীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের লেখা কিছু আধুনিক বাংলা গান নিজের সুরে গেয়েছিলেন এবং এইচএমভি তা রেকর্ড করে। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি একক শিল্পী হিসাবে রবীন্দ্রসঙ্গীত মনোমুগ্ধকর এবং অসামান্য গায়কিতে পরিবেশন করেন কলকাতার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস-এ। শ্রোতারা আপ্লুত হন এবং তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীত জগতে খ্যাতি অর্জন করেন। তার কণ্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীতের আমার সোনার বাংলা প্রথম রেকর্ড ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।[১] এরপরই একের পর এক রবীন্দ্র সঙ্গীতের অ্যালবাম ক্যাসেটে প্রকাশিত হয়। উল্লেখযোগ্য অ্যালবামগুলি হল —
- গানের খেয়া
- গানের ভাষা
- বড় তৃষ্ণা
- মধুর খেলা
- খুশি থাক
- ভাবের খেলা
- বনের পাখি
- সেই আমি
তাঁর মনোমুগ্ধকর কণ্ঠে গীত উল্লেখযোগ্য রবীন্দ্রসঙ্গীতের কয়েকটি হল—
- প্রথম আলোর চরণধ্বনি
- রুদ্রবেশে কেমন খেলা
- পিনাকেতে লাগে টংকার
- এ কী সুধারস আনে
- সকরুণ বেণু বাজায়ে কে যায়
- আজ যেমন করে গাইছে আকাশ
- ধরা দিয়েছি গো
- এক দিন যারা মেরেছিল
- লিখন তোমার ধূলায় হয়েছে ধূলি
- এসেছিলে তবু আস নাই
- আমার সোনার বাংলা
- এ কি লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ
- এ শুধু অলস মায়া
- মরু বিজয়ের কেতন উড়িয়ে
- আমার যেদিন ভেসে গেছে
পীযূষকান্তি সরকার গায়ক হিসাবে নেপথ্য সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করেন গৌতম ঘোষ পরিচালিত পদ্মা নদীর মাঝি ও রাজা মিত্র পরিচালিত নয়নতারা বাংলা ছায়াছবিতে। এছাড়াও তিনি 'খড়িমাটির গণ্ডী' বিষের বাঁশি' 'যমে মানুষে' নাটকে সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেন। একাধিকবার আমেরিকা এবং বাংলাদেশে অনুষ্ঠান করে প্রভূত অর্জন করেছিলেন। [১] তিনি গান ছাড়াও দুটি গ্রন্থ রচনা করেন—
- ভাঙা দিনের বেলা
- রবীন্দ্র সংগীতের রবিনহুড
জীবনাবসান
সম্পাদনারবীন্দ্রসঙ্গীতের বিশিষ্ট শিল্পী ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে জুলাই কলকাতায় পরলোক গমন করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ২১৯, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
- ↑ "Piyushkanti Sarkar sings"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-৩০।