পালক
পালক নির্দিষ্ট মেরুদণ্ডী প্রাণীদের (বিশেষত পাখিদের) দেহে বহিঃত্বক বা ইপিডার্মিস থেকে উৎপন্ন বিচ্ছেদনযোগ্য জড় আবরণ। পাখিদের ছাড়াও কয়েক প্রজাতির প্রাগৈতিহাসিক উপাঙ্গযুক্ত ডাইনোসরদের দেহে পালকের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। মেরুদণ্ডী প্রাণীদের দেহে প্রাপ্ত আচ্ছাদন তন্ত্রের মধ্যে পালকের গঠন সবচেয়ে জটিল ও বৈচিত্র্যপূর্ণ।[১][২] বিবর্তনের ফলে প্রাণীদেহে কি ব্যাপক পরিবর্তন হতে পারে, পালক তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ।[৩] অন্যসব প্রাণীদের থেকে পাখিদের খুব সহজে আলাদা করা যায় পালক দেখে। এ বৈশিষ্ট্য অন্য কোন প্রাণীতে নেই। এমনকি গৌণ বৈশিষ্ট্য হিসেবেও কোন কোন প্রাণী পাখিদের এ মৌলিক বৈশিষ্ট্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। যেসব প্রাগৈতিহাসিক উপাঙ্গযুক্ত প্রাণীদের পালক ছিল, তাদের পালকযুক্ত ডাইনোসর বলা হয়। পালক হালকা, স্থিতিস্থাপক, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পানিরোধী এবং উড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পাখিরা আত্মরক্ষা ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেও পালক ব্যবহার করে।[৪] মেলানিনের বিভিন্ন মাত্রার উপর নির্ভর করে পালকের বিভিন্ন রঙ হয়। পালক বিভিন্ন পাখিতে বিভিন্নভাবে রূপান্তরিত।
পালকের বিন্যাসসম্পাদনা
পাখির শরীরের বেশিরভাগ অংশ পালক দ্বারা আবৃত হলেও ত্বকের সবখান থেকে পালকের উৎপত্তি হয় না। ত্বকের নির্দিষ্ট অবস্থান থেকে নির্দিষ্ট বিন্যাসে পালকের উদ্ভব হয়। পাখির ত্বকে পালকের বিন্যাস বা বিস্তারকে টেরিলোসিস বলে। উড়বার ক্ষমতাহীন পাখি, যেমন পেঙ্গুইন এবং স্ট্রুথিওনিফর্মিস বর্গের পাখিদের পালক ত্বকে সমভাবে বিস্তৃত থাকে।[৫] কিন্তু উড়তে সক্ষম পাখিদের পালক ত্বকের নির্দিষ্ট এলাকায় অঞ্চলভিত্তিকভাবে বা পট্টি আকারে বিস্তৃত থাকে। এ ধরনের বিন্যাসকে টেরিলি বলে। পালকযুক্ত অঞ্চল পালকহীন অঞ্চল দ্বারা পৃথক থাকে। পালকহীন অঞ্চলকে এপ্টেরিয়া বলে। পাখির বর্গ, গোত্র ও প্রজাতির উপর নির্ভর করে টেরিলির বিন্যাস বিভিন্ন হয়। সাধারণত একটি পাখির পালকযুক্ত অঞ্চলগুলো হল- মস্তক, গ্রীবা, অগ্রপদের অগ্রবাহু, মেরুদণ্ডীয় অঞ্চল, অঙ্কীয় অঞ্চল, অ্যালার, পুচ্ছ, কটি ইত্যাদি।[৬][৭]
পালকের গঠনসম্পাদনা
একটি সাধারণ পালক অবলম্বনকারী অক্ষ বা প্রধান কাণ্ড এবং একটি বিস্তৃত প্রান্তীয় অংশ ভেন বা ফলক দ্বারা গঠিত।
অক্ষসম্পাদনা
অক্ষকে অপ্রান্তিক নিম্নাংশ ও প্রান্তিক ঊর্ধাংশে ভাগ করা যায়। নিম্নাংশকে ক্যালামাস বা কুইল এবং ঊর্ধাংশকে মূল অক্ষ বা শ্যাফট বা রাকিস বলে।
ক্যালামাসসম্পাদনা
ক্যালামাস বা কুইল ফাঁপা, নলাকার এবং অর্ধস্বচ্ছ। ক্যালামাসের ভিত্তি বহিঃত্বকের ছোট গর্ত বা ফলিকলের মধ্যে বসানো থাকে। এখান থেকে পেশিতন্তু পালকের মধ্যে প্রবেশ করে এবং নির্দিষ্ট পালকের নড়াচড়ায় প্রভাব ফেলে। ক্যালামাসের নিম্নপ্রান্তে ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে যাকে অধঃঅ্যাম্বিলিকাস বলে। এটি একটি ক্ষুদ্র কোণাকার ডার্মিসের জন্য পুষ্টি সংগ্রহ করে। এ ছিদ্রের সাহায্যে ডার্মিসজাত পাম্পের মধ্যে রক্তনালী প্রবেশ করে পুষ্টি সরবরাহ করে এবং বৃদ্ধিমান পালকে রঞ্জকদ্রব্য প্রদান করে। আরেকটি ছিদ্র ক্যালামাস ও মূল অক্ষের সংযোগস্থলে উপস্থিত থাকে। একে অধিঃঅ্যাম্বিলিকাস বলে। কয়েক প্রজাতির পাখির ক্যালামাস ও মূল অক্ষের সংযোগস্থল থেকে একগুচ্ছ নরম পালকের সৃষ্টি হয়। একে অধঃঅক্ষ বা হাইপোরাকিস বা আফ্টার শ্যাফট বলে। অধঃঅক্ষের কাজ হল অধিঃঅ্যাম্বিলিকাসকে ঢেকে রাখা।[৮] ক্যাসোয়ারি, এমু, বিলুপ্ত মোয়া প্রভৃতি পাখির অধঃঅক্ষ প্রধান পালকের মতই দীর্ঘ হয়। সাধারণ পাখির অধঃঅক্ষ ক্ষুদ্র, যেমন পাতিকাক, কবুতর ইত্যাদি।
মূল অক্ষসম্পাদনা
মূল অক্ষ বা শ্যাফট পালক ফলকের জন্য অনুদৈর্ঘ্য অক্ষ গঠন করে। এটা ক্যালামাস থেকে পুরোপুরি পৃথক। ক্যালামাস ফাঁপা ও অর্ধস্বচ্ছ; কিন্তু মূল অক্ষ শক্ত, নিবিড়, অস্বচ্ছ, অনুপ্রস্থচ্ছেদে প্রায় চারকোনা এবং পিথ কোষের গুচ্ছ দ্বারা ঘনভাবে পূর্ণ থাকে। মূল অক্ষের অন্তঃ বা অঙ্কীয় তলে সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্য বরাবর খাদ উপস্থিত। এ খাদকে অ্যাম্বিলিকাল খাদ বলে।
পালক ফলকসম্পাদনা
পালকের প্রশস্ত পর্দার মত অংশকে পালক ফলক বা ভেন বা ভ্যাক্সিলাম বলে। মূল অক্ষ দ্বারা এটি দু'টি অসমান পার্শ্বীয় অর্ধে বিভক্ত থাকে। এর মুক্ত প্রান্তিক দিক অপ্রান্তিক দিক থেকে তুলনামূলক সরু থাকে। পালক ফলক অনেকগুলো সারিবদ্ধ, সমান্তরাল এবং ঘনভাবে বসানো নরম সুতার মত গঠন দ্বারা গঠিত। এ গঠনগুলোকে বার্ব বলে। মূল অক্ষের দুই পার্শ্বীয় দিক থেকে কিছুটা তীর্যকভাবে এগুলোর উৎপত্তি হয়। অক্ষের দুই প্রান্তের দিকে বার্বের দৈর্ঘ্য ক্রমশ কমতে থাকে। প্রত্যেক বার্ব থেকে আবার অনেকগুলো নরম তীর্যক সূত্র উপস্থিত। এদেরকে বার্বিউল বলে। বার্বিউল দুই রকমের। মুক্ত প্রান্তিক বার্বিউল পালকের শীর্ষের দিকে মুখ করা থাকে। আবার অপ্রান্তিক বার্বিউল পালকের ভিত্তির দিকে মুখ করা থাকে। মুক্ত প্রান্তিক বার্বিউলের নিম্নপ্রান্ত ক্ষুদ্র বড়শির মত গঠন হুকলেট, হ্যামুলি বা বার্বিসেল গঠন করে। আবার অপ্রান্তিক বার্বিউলের ঊর্ধ্ব প্রান্ত গভীরভাবে খাঁজ কাটা বা পাকানো। এগুলো খাদের সৃষ্টি করে। বার্বিউলগুলোর তীর্যক অবস্থানের কারণে পাশাপাশি বার্বের বার্বিউল একে অপরকে অতিক্রম করে। মুক্ত প্রান্তিক বার্বিউলের হুকলেট অপ্রান্তিক বার্বিউলের বাঁকা প্রান্তে সংযুক্ত থাকে।
এ ধরনের সীমিত নড়নক্ষম আন্তঃসংযোগী বিন্যাসে সকল বার্ব আর বার্বিউল ঢিলে ভাবে একে অপরকে ধরে রাখে। এর ফলে পালক ফলক নমনীয়, দৃঢ়, প্রশস্ত, চ্যাপ্টা ও অবিচ্ছিন্ন তল গঠন করে। এটা ওড়ার সময়ে বাতাসে আঘাত করার জন্য আদর্শ গঠন। এ আন্তঃসংযুক্ত অংশ দুরে সরে যেতে পারে যদি পালক ফলক প্রসারিত করা হয়। প্রথমে এরা বাধা দেয়, পরে সরে যায়। আবার পুনরায় পিছলিয়ে আগের অবস্থানে চলে আসে। তবে অনেকসময় পালক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত পালক পাখি ঠোঁটের সাহায্যে টেনে ঠিক করে দেয়। যেসব পাখির মধ্যে এ ধরনের আন্তঃসংযোগী বিন্যাস নেই বলে উড়তে পারে নি। আফ্টার শ্যাফটে কোন বার্বিউল থাকে না।
বিভিন্ন প্রকারের পালকসম্পাদনা
1. প্রাথমিক পালক
2. প্রাথমিক পালক-ঢাকনি
3. আলুলা
4. মাধ্যমিক বা গৌণপালক
5. গৌণপালক-ঢাকনি
6 ও 7. ডানা-ঢাকনি
8. তৃতীয় পালক (কখনও কখনও গৌণপালকের অন্তর্ভুক্ত)
উড়বার পালক বা কুইলসম্পাদনা
একটি আদর্শ উড়বার পালকে তুলনামূলক শক্তিশালী প্রধান অক্ষ থাকে। এছড়া পালকে মজবুত আন্তঃসংযোগ বিশিষ্ট বার্বিউল থাকে। উড়বার পালক আবার বিভিন্ন রকমের:
== ডানার পালক বা রেমিজেসসম্পাদনা
ডানার উড়বার পালককে পিনিওন, রেমিজেস বা ডানা কুইল বলে। এদের পালকের অন্তঃফলক বহিঃফলকের তুলনায় প্রশস্ত। ডানার পালক বার কয়েকটি অংশে বিভক্ত। ডানার অগ্রভাগের বড় পালকগুলোকে বলে প্রাথমিক পালক। ইংরেজিতে এদের নাম ম্যানুয়েল। প্রাথমিক পালকগুলোর প্রথম কয়েকটি হাড়ের দ্বিতীয় আঙ্গুলের সাথে যুক্ত থাকে। এদের ডিজিটালস্ বলে। ডিজিটেলসগুলোর প্রথম ভাগকে বলে অগ্রডিজিটালস্ যা মুক্ত প্রান্তিক আঙ্গুলিনলকে যুক্ত থাকে। বাকি ডিজিটালসগুলোকে মধ্য ডিজিটালস্ বলে। এগলো অপ্রান্তিক আঙ্গুলিনলকে যুক্ত থাকে। বাকি প্রাথমিক পালকগুলো মেটাকার্পাল অঞ্চলে যুক্ত থাকে। এগুলোকে মেটাকার্পালস্ বলে। মেটাকার্পাল পালকগুলোর মধ্যে যেগুলো তৃতীয় আঙ্গুলে যুক্ত থাকে তাদের এডডিজিটাল বলে। প্রাথমিক পালকগুলো ছাড়া বাকি পালকগুলোকে গৌণপালক বলা হয়। ইংরেজিতে এদের নাম সেকেন্ডারিস বা কিউবিট্যালস্। এগুলো অগ্রবাহু বা আলনায় যুক্ত থাকে।
লেজের পালকসম্পাদনা
যদিও লেজের পালক ওড়ার কাজে সরাসরি সহায়তা করে না, তবু এরা উড়বার পালকের অন্তর্ভুক্ত। এরা রেক্ট্রিসেস নামেও পরিচিত। সধারণত এগুলো লেজের উপর অর্ধবৃত্তাকারে বা পাখার মত বিন্যাস্ত। এ পালকগুলো দুই অর্ধ সমান আকারের। লেজের পালক ওড়ার সময় ব্রেক ও হালের কাজ করে।
পালক-ঢাকনি বা কোভার্টস্সম্পাদনা
মূল পালককে ঢেকে রাখে এমন পালকগুলোকে পালক-ঢাকনি বা কোভার্টস্ বলে। এগুলো কেবল ডানায়ই থাকে না; লেজ, পিঠ প্রভৃতি অংশেও দেখা যায়। লেজের পালকের গোড়া ঊর্ধ্ব ও নিম্ন পালক-ঢাকনি দ্বারা আবৃত থাকে। পালক-ঢাকনি ডানার পালক বা লেজের পালক থেকে আকারে ছোট, তবে গঠনের দিক দিয়ে একরকম। ডানার পালক বা লেজের পালকের গোড়ায় অবস্থান নিয়ে এরা বায়ুরোধী অবিচ্ছিন্ন অঞ্চল সৃষ্টি করে। ফলে ওড়া সহজ হয়।
আলুলাসম্পাদনা
কয়েক প্রজাতির পাখির ডানার অন্তঃস্থ অভিক্ষেপ আকারের অতিরিক্ত আরেকটি ছোট ডানা থাকে যা প্রজাতিভেদে তিন থেকে পাঁচটি পালক নিয়ে গঠিত। একে আলুলা বা অ্যালা স্পুরিয়া বা বাস্টার্ড উইং বলে। ওড়ার গতি নিয়ন্ত্রণের কাজে আলুলা ব্যবহৃত হয়।
দেহ পালকসম্পাদনা
যে সমস্ত পালক দেহের আবরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাদের দেহ পালক বলে। এদের কন্টুর ফেদার বা পিনিও বলা হয়। এ পালক আদর্শ গঠনের। এর একটি মূল অক্ষ ও একটি পালক ফলক থাকে। এ পালকগুলো ক্ষুদ্রকায় ও নরম লোমের মত। এদের বার্বিউলগুলো দুর্বলভাবে বিকশিত। এ কারণে বার্বগুলো সহজভাবে পৃথক করা যায়। দেহ পালক দেহের একটি মসৃণ তল সৃষ্টি করে, যা ওড়ার সময় বাতাসের ঘর্ষণ রোধ করে। এছাড়া দেহের তাপ সংরক্ষণ ও পানি রোধেও দেহ পালক সহায়তা করে।
লোম পালকসম্পাদনা
লোম পালক ফিলোপ্লুমস বা পিন ফেদার নামেও পরিচিত। পালকগুলো ছোট ও নমনীয় লোমের মত। এগুলোর কাজ এখন পর্যন্ত অজ্ঞাত। পাখিদের দেহে এগুলো বেশ দূরে দূরে অবস্থান করে। বড় পালক সরালে লোম পালক দেখা যায়। এ পালকগুলোর ক্যালামাস খাটো এবং মূল অক্ষ দীর্ঘ ও সূতার মত। ক্ষের মুক্ত প্রান্তে কয়েকটি দুর্বল বার্ব ও বার্বিউল থাকে।
ডাউন পালকসম্পাদনা
ডাউন পালক বা প্লুমিউলস ক্ষুদ্র, নরম ও লোমের মত পালক। এ পালকের কোন অক্ষ নেই। বার্বগুলো দীর্ঘ, নমনীয় এবং বার্বিউলের দৈর্ঘ্য আগার দিকে ক্রমশ কমতে থাকে। ক্যালামাসের শীর্ষ থেকে সরাসরি বার্বগুলো লোমের ন্যায় গুচ্ছাকারেবেরিয়ে আসে। ডাউন পালক মূলত পাখির শাবকের দেহের বহিরাবরণ। এরা অপরিবাহী হিসেবে কাজ করে। পূর্ণবয়স্ক পাখিতে এরা স্থায়ী দেহ পালক দ্বারা পুণঃস্থাপিত হয়।
পাউডার ডাউন পালকসম্পাদনা
এসব পালক কয়েকটি নির্দিষ্ট প্রজাতির পাখির দেহে একত্রিত হয়ে বিশেষ পট্টি গঠন করে। যেমন জোড়া বক্ষ এবং শ্রোণী অঞ্চলের হলুদাভ পট্টি যা বক ও বগলা জাতীয় পাখিদের ত্বকে থাকে। মাঝে মাঝে নীলকণ্ঠ ও টিয়া পাখিতে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে ও গুচ্ছাকারে এ পালক উপস্থিত থাকে। এগুলো মূলত ডাউন পালক যেগুলোর শীর্ষ কখনও বিকশিত হয় না এবং অবিচ্ছিন্নভাবে ভেঙে ভেঙে পাউডারের মত নরম লোমের সৃষ্টি করে। সম্ভবত পালক পরিষ্কার রাখার কাজে এরা ব্যবহৃত হয়।
অন্যান্য প্রকারের পালকসম্পাদনা
এছাড়া বিভিন্ন রকমের পালক দেখা যায় যেগুলো কোন শ্রেণীতে ফেলা যায় না। কিছু সংবেদনশীল গোঁফের মত পালক দেখা যায় রাতচরা, ব্যাঙমুখো, ধনেশ ইত্যাদি পাখির ঠোঁট ও চোখের চারপাশে। আবার স্বর্গীয় পাখিদের লেজে অলঙ্কারিক পালকগুলোও একই শ্রেণীভুক্ত। এগুলো সম্ভবত দেহ পালক থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
রিক্টাল ব্রিসলসম্পাদনা
কিছু পাখির দেহে শক্ত লোমের মত পালক থাকে। এ পালককে রূপান্তরিত লোম পালক বলে মনে করা হয়। প্রত্যেক ব্রিসলের খাটো ক্যালামাস থাকে এবং একটি সরু অক্ষ থাকে। এর ভিত্তিতে কয়েকটি খাটো বার্ব থাকে। এ পালক ফলভোজী ও পতঙ্গভোজী পাখিদের ঠোঁটের চারপাশ বেষ্টন করে রাখে।
পালকের কাজসম্পাদনা
পালক পাখির দেহে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত হয়। পালক ওজনে হালকা, অভেদ্য, নমনীয় কিন্তু নগ্নত্বককে ক্ষত হওয়া থেকে রক্ষা করে। পাখির দেহে তাপের সাম্যতা ও তাপ সংরক্ষণে সহায়তা করে। আবার উড়ার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে পালক। পালক চ্যাপ্টা, পাতলা ও পরস্পর অতিক্রমকারী বলে পাখির ওড়ার অবলম্বন হিসেবে কাজ করে। পাখির আত্মগোপনেও পালক সহায়তা করে। পালক অলঙ্কার হিসেবে কাজ করে। লিঙ্গ নির্ধারণ ও বিভিন্ন অংশে পালক রূপান্তরিত হয়ে অঙ্গসজ্জা ও অলঙ্কার হিসেবে কাজ করে। এ পালক পূর্বরাগের সময় পুরুষ পাখি স্ত্রী পাখিকে প্রদর্শন করে আকর্ষণ করতে সহায়তা করে। এছাড়া ডাউন পালক শাবকের আবরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অনেকক্ষেত্রে পালক বাসা নির্মাণে সহায়তা করে। পালকে উপস্থিত স্পষ্ট চিহ্ন একই প্রজাতির সদস্য চিনতে সহায়তা করে।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Prum, Richard O. & AH Brush (২০০২)। "The evolutionary origin and diversification of feathers" (পিডিএফ)। The Quarterly Review of Biology। 77 (3): 261–295। ডিওআই:10.1086/341993। পিএমআইডি 12365352। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০১০।
- ↑ Prum, R.O., & Brush, A.H (মার্চ ২০০৩)। "Which Came First, the Feather or the Bird?" (পিডিএফ)। Scientific American। 288 (3): 84–93। ডিওআই:10.1038/scientificamerican0303-84। পিএমআইডি 12616863। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০১০।
- ↑ Prum, Richard O (১৯৯৯)। "Development and Evolutionary Origin of Feathers" (পিডিএফ)। Journal of Experimental Zoology (Molecular and Developmental Evolution)। 285 (4): 291–306। ডিওআই:10.1002/(SICI)1097-010X(19991215)285:4<291::AID-JEZ1>3.0.CO;2-9। পিএমআইডি 10578107। ৯ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০১০।
- ↑ Pettingill, OS Jr. (১৯৭০)। Ornithology in Laboratory and Field. Fourth edition। Burgess Publishing Company। পৃষ্ঠা 29–58। আইএসবিএন 8-0871-609-3
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: length (সাহায্য)। - ↑ Demay, Ida S. (১৯৪০)। "A Study of the Pterylosis and Pneumaticity of the Screamer"। The Condor। 42 (2): 112–118। জেস্টোর 1364475। ডিওআই:10.2307/1364475।
- ↑ K. Susanna S. Hall (২০০৫)। "Do nine-primaried passerines have nine or ten primary feathers? The evolution of a concept"। Journal of Ornithology। 146 (2): 121–126। ডিওআই:10.1007/s10336-004-0070-5।
- ↑ Pycraft, W. P. (১৮৯৫)। "On the pterylography of the hoatzin (Opisthocomus cristatus)"। Ibis। 37 (3): 345–373। ডিওআই:10.1111/j.1474-919X.1895.tb06744.x।
- ↑ McLelland, J. (১৯৯১)। A color atlas of avian anatomy। W.B. Saunders Co.। আইএসবিএন 0-7216-3536-9।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- Chandler, Asa C. (১৯১৬)। "A study of the structure of feathers, with reference to their taxonomic significance"। University of California Publications in Zoology। 13 (1): 278।
- McGraw, K. J. 2005. Polly want a pigment? Cracking the chemical code to red coloration in parrots. Australian Birdkeeper Magazine 18:608-611.
- DeMeo, Antonia M. Access to Eagles and Eagle Parts: Environmental Protection v. Native American Free Exercise of Religion (1995)
- Electronic Code of Federal Regulations (e-CFR), Title 50: Wildlife and Fisheries PART 22—EAGLE PERMITS
- U.S. v. Thirty Eight Golden Eagles (1986)
- পালকের গঠন
- পালকের বিবর্তনের উপর তথ্যচিত্র
- পাখির আচ্ছাদন তন্ত্রের উপর লেকচার নোট
- U.S. National Fish and Wildlife Forensics Laboratory's Feather Atlas
- Federn.org