পাতালগঙ্গা নদী

ভারতের নদী

পাতালগঙ্গা নদী ( মারাঠি : पाताळगंगा नदी) মাথেরান উপকূলের পশ্চিমের একটি নদী। এটি খোপোলির কাছাকাছি প্রধান শৈলশিরা থেকে শাখা হিসেবে পশ্চিমাভিমুখে একটি সাধারণ প্রবাহ বজায় রাখে যতক্ষণ না তা ধরমতার খাতে প্রশস্ত মোহনায় যোগদান করে। ভারতের মহারাষ্ট্রের খোপোলির কাছাকাছি খোপোলি বিদ্যুৎ প্রকল্পের জল এই নদীতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি দূষণের ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে আসে। পাতালগঙ্গা এমআইডিসি থেকে আসা দূষণের কারনে এটি মহারাষ্ট্রের অন্যতম দূষিত নদী। পাতালগঙ্গা এমআইডিসি-র অন্তর্ভুক্ত শিল্পগুলি নদী দূষণে অবদান রাখে।[১] এমপিসিবি পানির গুণগত মান সম্পর্কিত কোনও সঠিক তথ্য সরবরাহ করে না। এটি এমন একটি বিষয় যা বিভিন্ন এনজিও এবং স্থানীয়দের প্রতিবাদকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। আজকাল পাতালগঙ্গা নদীর তীরের গ্রামগুলি (তুরাদে, কালিভালি, আপ্তা, দুশ্মী, খড়পাড়া, রাভে) মাছ খাওয়ার ফলে সৃষ্ট বিষক্রিয়া সম্পর্কে অভিযোগ করে। রঞ্জন, সার, কীটনাশক, অ্যালকাইল অ্যামাইনের শিল্পগুলি থেকে ক্ষতিকারক রাসায়নিকগুলির কারণে নদীর জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে দূষণের প্রভাব: পানির উচ্চ অ্যাসিডীয় পিএইচ এর কারণে শস্য ঝলসে যায়। বর্ষা মৌসুমে বন্যার ফলে ক্ষতিকারক রাসায়নিক মিশ্রিত পানিতে কৃষিজমিগুলি প্লাবিত হয় যা জমিকে চাষের জন্য অনুপযুক্ত করে তোলে।

চাওয়ান বাঁধের (হেতাওয়ান বাঁধ নির্মাণের আগে জল সরবরাহের জন্য নির্মিত ছোট স্তরের ব্যবস্থা) পরে শিল্পগুলির বর্জ্য প্রবাহ নদীতে ছাড়া হয়। ভোরবেলা বা সন্ধার বেশিরভাগ দূষণ প্রক্রিয়াজাত না করেই ছেড়ে দেওয়া হয়।

ইতিহাস সম্পাদনা

মহাভারতে ভীষ্ম যখন মারা যাচ্ছিলেন তখন অর্জুন তীর দিয়ে মাটিতে গর্ত করে একটি ফোয়ারা তৈরি করে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করেছিলেন যা পাতালগঙ্গা নামে পরিচিত। [২]

পুরাণ অনুসারে গঙ্গা নদীর তিনটি শাখা রয়েছে এবং সেগুলি হলো স্বর্গ গঙ্গা (মন্দাকিনী), ভু গঙ্গা (ভাগীরথী) এবং পাতালগঙ্গা (ভগবতী)। সমুদ্রে প্রবেশের আগে গঙ্গা কয়েকটি শাখা নদীতে বিভক্ত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশে যায়।

পাতালগঙ্গা নদীর কথা প্রাচীন বৈদিক গ্রন্থ এবং তুরাদে-করাদে এলাকার মন্দিরে উল্লেখ করা হয়েছে এবং নদীর তীর পবিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হতো ও এই নদীতে একটি ডুব দেওয়া আধ্যাত্মিকভাবে অন্তত উপকারী বিবেচনা করা হয়। ভবানীপাটনা পাতালগঙ্গার নিকটবর্তী একটি প্রাকৃতিক উষ্ণ প্রস্রবণ যা স্থানীয় এবং উপাসকরা পবিত্র গঙ্গা নদী রূপে পূজা করে।

কারজাত এবং পানভেল এর কাছাকাছি এমআইডিসির পাতালগঙ্গা শিল্প এলাকার [১] নাম পাতালগঙ্গা নদীর কাছ থেকে এসেছে। শিল্পাঞ্চলের উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে যানজট এড়ানোর জন্য পাতালগঙ্গা নদীর উপর একটি দুই লেনের উচ্চ স্তরের সেতু নির্মিত হয়েছে।

গতিপথ সম্পাদনা

পাতালগঙ্গা নদীর উৎস পশ্চিমঘাট পর্বতমালার খান্ডালা অংশে। উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ২৫ মাইল (৪০ কিমি) আঁকাবাঁকা পথের উভয় পাশে বেশ কয়েকটি নদীর কারনে আশেপাশের জমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে যা পাহাড়ের অবশেষ হিসেবে চিহ্নিত। এর মধ্যে লক্ষণীয় বিশিষ্ট হলো ২,৩১৮ ফুট (৭০৭ মি) প্রবাল উচ্চতা এবং কমলা দুর্গ পরিসর। দক্ষিণে মানিকগড় উত্তর উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বের ঝোঁকের সাথে ১,৮৭৬ ফুট (৫৭২ মি) এর একটি খাড়া রেঞ্জ গঠন করে; এটি আসলে পাতালগঙ্গা এবং বালগঙ্গা নদীকে পৃথককারী পাহাড়। ওয়াভেশ্বরের নীচে পাতালগঙ্গা ধরমতার খাতের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে হঠাৎ তার গতিপথ পরিবর্তন করে প্রায় ২০ মাইল (৩২ কিমি) যাত্রা করে। পাহাড়ি ভূসংস্থান অব্যাহত থাকলেও নদীর উপত্যকা বিস্তৃত এবং ধরমতার খাতের জোয়ার সমতলে একত্রিত হয়েছে। বালগঙ্গা নদীটি পাতালগঙ্গার একটি শাখা নদী যা আরও পার্বত্য অঞ্চলে এর সাথে সমানতালে প্রবাহিত হয় এবং কেবল ধরমতার খাতে পাতালগঙ্গার সাথে মিলিত হয়; ভূমি যদিও পাহাড়ী তবে শিলোট এবং বদরুদ্দিনের মতো রেঞ্জের উচ্চতা সাধারণত কম। ১৮°২৯′ উত্তর ৭৩°২৪′ পূর্ব / ১৮.৪৮° উত্তর ৭৩.৪° পূর্ব / 18.48; 73.4

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Patalganga Factory List"। Scribd। 
  2. [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুলাই ২০০৯ তারিখে Rivers in Mythology

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  • [২] পাতালগঙ্গা নদীর অববাহিকার জলের শ্রেণিবিন্যাস-উৎস- মহারাষ্ট্র সরকার, ভারত
  • [৩] পাতালগঙ্গা নদী মুম্বাইয়ের শিল্প ইউনিট বিকল করে দিয়েছে-উতস-দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন