পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এফ)

পাকিস্তানের একটি রাজনৈতিক দল

পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এফ) (উর্দু: پاکستان مسلم لیگ (ف)‎‎, সংক্ষিপ্ত রূপ: পিএমএলএফ, পিএমএল-এফ, পিএমএল (এফ)) হচ্ছে পাকিস্তানের একটি জাতীয়তাবাদী এবং হুর সম্প্রদায়-পন্থী রাজনৈতিক দল। এটি পাকিস্তানের মুসলিম লিগের বিভিন্ন দল উপদলের মধ্যে একটি দল। এর নামে এফ অক্ষরটি দ্বারা ফাংশনাল বুঝায়। দলটি মূলত সিন্ধি ধর্মীয় নেতা পীর পাগারার সাথে জড়িত। ১৯৮৫ সালে যখন মুহাম্মদ খান জুনেজোকে ঐক্যবদ্ধ পিএমএল-এর সভাপতি করার তথা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী করা হলে এর জবাবে, পীর পাগারা সৈয়দ শাহ মর্দান শাহ -২ মূল দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজস্ব দল গঠন করে।

পাকিস্তান মুসলিম লীগ (ফাংশনাল)
پاکستان مسلم لیگ ف
নেতাসৈয়দ ৩য় সিবগতুল্লাহ শাহ রাশিদ (২০১২-বর্তমান)
প্রতিষ্ঠাতাফাতেমা জিন্নাহ (১৯৬৫) সৈয়দ শাহ মর্দান শাহ (সহ-প্রতিষ্ঠাতা)
প্রতিষ্ঠা১৯৮৫
সদর দপ্তরকিংরি হাউজ, করাচি
ভাবাদর্শরক্ষণশীলতা
জাতীয় রক্ষণশীলতা
পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদ
ইসলামী গণতন্ত্র
রাজনৈতিক অবস্থানমধ্য-ডান পন্থী
ধর্মইসলাম
জাতীয় অধিভুক্তিগ্র‍্যান্ড ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স
আনুষ্ঠানিক রঙসবুজ
সিনেট
১ / ১০৪
জাতীয় পরিষদ
০ / ৩৪২
পাকিস্তানের রাজনীতি

১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মোহতারমা ফাতিমা জিন্নাহ জেনারেল আইয়ুব খানের কাছে পরাজিত হওয়ার পর ফাতেমা জিন্নাহ পাকিস্তান মুসলিম লীগ (ফাংশনাল) প্রতিষ্ঠা করেন। পীর পাগারা সৈয়দ শাহ মর্দান শাহ -২ এই রাজনৈতিক দলের প্রধান হন। তিনি ইউনাইটেড মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতিও মনোনীত হন। তিনি একই সাথে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-ফাংশনাল (পিএমএল-এফ) এর প্রধান এবং ‘হুর’ জামায়াত সংগঠনের আধ্যাত্মিক নেতা ছিলেন।

২০০২ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে দলটি ১.১% পেয়ে আসনের ২৭২টি মধ্যে মোট চারজন প্রার্থী নির্বাচিত হয়।

২০০৪ সালের মে মাসে পিএমএল (ফাংশনাল) এবং আরো কিছু দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (কিউ)-এর সাথে একীভূত হয়ে ইউনাইটেড পাকিস্তান মুসলিম লীগ গঠন করে। []

যদিও মাত্র দুই মাস পর ২০০৪ সালের জুলাই মাসে পীর পাগারা এবং পিএমএল (এফ) চৌধুরী ভাইদের সাথে মতপার্থক্যের কথা উল্লেখ করে এবং পিএমএলকে জাট লীগ বলে সম্বোধন করে ইউনাইটেড পাকিস্তান মুসলিম লীগ থেকে বের হয়ে যায়।[]

২০০৮ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে পিএমএল-এফ ৪ টি আসনে জয় লাভ করে[] এবং তাদের একটি সংরক্ষিত মহিলা আসন দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ দলটি জাতীয় পরিষদে মোট পাঁচটি সংসদীয় আসন লাভ করে। এর বাইরে দলটি ০সিন্ধুতে ৮ টি এবং পাঞ্জাবে ৩টি প্রাদেশিক সংসদীয় আসন লাভ করে।

২০১০ এর সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এফ) এবং পিএমএল-কিউ পুনরায় একত্রিত হয়ে অল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পীর পাগারা) গঠন করে।[][]

২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে ৭ম পীর পাগরা: সৈয়দ শাহ মর্দান শাহ -২ এর মৃত্যুর পরে তাঁর পুত্র অষ্টম পীর পাগরা: সৈয়দ সিবগতুল্লাহ শাহ রাশদি-৩য় পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এফ) এর সভাপতি হন। তখন পিএমএল (এফ) এর সদর দপ্তর কিংরি হাউজ থেকে রাজা হাউসের স্থানান্তরিত হয়।

২০১৩ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে, পিএমএল-এফ জাতীয় পরিষদে ৬টি আসন এবং সিন্ধুর প্রাদেশিক পরিষদে ১০টি আসনে জয় লাভ করে। ওই নির্বাচনের পর পিএমএল (এফ) নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এন) সরকারে যোগ দেয়। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-ফাংশনালের নেতা তৃতীয় সৈয়দ সিবগাটুল্লাহ শাহ রাশদির ছোট ভাই পীরজাদা সদরউদ্দিন শাহ রাশদিকে নওয়াজ শরীফ সরকার 'প্রবাসী পাকিস্তানি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন' মন্ত্রী নিযুক্ত করে।

২০১৮ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে পিএমএল-এফ আওয়ামী তাহরিক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, পাকিস্তান পিপলস পার্টির ওয়ার্কার্স এবং পাকিস্তান পিপলস মুসলিম লীগের সাথে 'গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স' নামক একটি নতুন জোটের নেতৃত্ব দেয়।[] যদিও এই নির্বাচনে দলটি কোন আসন লাভ করেনি।

নির্বাচনী ইতিহাস

সম্পাদনা

জাতীয় পরিষদের নির্বাচন

সম্পাদনা
জাতীয় পরিষদ
নির্বাচন ভোট প্রাপ্ত ভোটের হার (%) প্রাপ্ত আসন +/–
২০০২ 328,137 1.1%
৫ / ৩৪২
  5
২০০৮ 685,684 1.98%
৫ / ৩৪২
 
২০১৩ 1,072,846 2.36%
৬ / ৩৪২
  1
২০১৮ 72,553 0.14%
০ / ৩৪২
  6

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Mumtaz, Ashraf (মে ২০, ২০০৪)। "Parties to inform EC about merger with PML"Dawn 
  2. "Pagaro parts ways with PML"Daily Times। জুলাই ২৯, ২০০৪। ডিসেম্বর ২৭, ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ১২, ২০২০ 
  3. "Pakistan Election Results - 2008"Hamari Web 
  4. "PML-Q announces merger with PML-F"ডন। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১০। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "Chaudhrys in new League with Pir Pagara"The Express Tribune। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১০। 
  6. Imran Mukhtar (১৪ জুলাই ২০১৮)। "Pakistan General Election: Grand Democratic Alliance may pose formidable challenge to ruling PPP in Sindh"firstpost.com