পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম

মেয়েদের অ্যান্ড্রোজেন বর্ধন-জনিত উপসর্গ

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) হল মহিলাদের মধ্যে অ্যান্ড্রোজেন (পুরুষ হরমোন) এর মাত্রা বেড়ে যাবার জন্য কিছু উপসর্গের সমাহার।[][১৪] পিসিওএস আসলে একটি হরমোনজনিত ব্যাধি। সাধারণত সুস্থ মহিলাদের ডিম্বাশয় প্রত্যেক মাসে একটি করে ডিম্বানু ছেড়ে থাকে। এটি গর্ভদশা চলাকালীন পরিণত হয় নতুবা নির্মূল হয়ে একটি সাধারণ মাসিক চক্রের রূপ নেয়। কিন্তু যখন মেয়েদের শরীরে অ্যান্ড্রোজেন হরমোন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়ে যায় তখন অ্যান্ড্রোজেন হরমোন আধ্যিকের কারনে ডিম্বাশয়ের আশপাশে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়। ফলে ডিম্বাশয় থেকে যে ডিম্বাণু বড় হয়ে ডিম বের হওয়ার কথা, তাতে বাধা সৃষ্টি হয় এবং এভাবে একসময় ডিম বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পিসিওএসে আক্রান্ত মহিলাদের ডিম্বানুগুলি সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠে না অথবা নিয়মিত ডিম্বস্ফোটন চক্রের সময় ডিম্বানু ছাড়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয়। এর ফলে নিয়মিত ঋতুচক্র বাধাগ্রস্থ হয়।

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম
প্রতিশব্দহাইপারঅ্যান্ড্রোজেনিক অ্যান ওভ্যুলেশন (এইচএ),[] স্টেইন–লেভেন্থাল সিনড্রোম[]
আল্ট্রাসাউন্ড ছবিতে পলিসিস্টিক ওভারি দেখানো হয়েছে।
বিশেষত্বস্ত্রীরোগবিদ্যা
লক্ষণঅনিয়মিত ঋতু চক্র, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, অবাঞ্ছিত লোম, ব্রণ, পেটে ব্যথা, গর্ভধারণে ব্যর্থতা, পুরু, গাঢ়, বেগুনি চামড়া দাগ[]
জটিলতাটাইপ-২ বহুমূত্র রোগ, অতিস্থূলতা, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া, হৃদরোগ, মেজাজ পরিবর্তন, এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার[]
স্থিতিকালদীর্ঘ দিন[]
কারণজিনগত এবং পরিবেশগত কারণ[][]
ঝুঁকির কারণঅতিস্থূলতা, যথেষ্ট ব্যায়াম না করা, পারিবারিক ইতিহাস[]
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতিডিম্বপাত না হওয়া, উচ্চ মাত্রার অ্যান্ড্রোজেন, ওভারিয়ান সিস্ট[]
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয়অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লেসিয়া, হাইপোথাইরয়েডিজম, রক্তে উচ্চ ​​মাত্রায় প্রোল্যাক্টিন[]
চিকিৎসাওজন কমা, ব্যায়াম[১০][১১]
ঔষধজন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি, মেটফরমিন, অ্যান্টি-অ্যান্ড্রোজেন[১২]
সংঘটনের হারসন্তানধারণ বয়সের ২% থেকে ২০% মহিলা [][১৩]

পিসিওএস-এ আক্রান্ত বেশিরভাগ মহিলাদের মধ্যে উচ্চ মাপের আন্ড্রোজেন অথবা পুরুষ হরমোনগুলির উপস্থিতি থাকে। এই রোগের বেশিরভাগ বাইরের ও ভেতরের সমস্যাগুলি আন্ড্রোজেন বৃদ্ধিজনিত সমস্যার সঙ্গে জড়িত৷ জিনগত এবং পরিবেশগত কারণের মিলিত প্রভাবে পিসিওএস হতে দেখা যায়।[][][১৫]


পলি কথার অর্থ অনেক সুতরাং পলিসিস্টিক মানে হল অনেকগুলো সিস্ট। পিসিওএসের প্রধান বৈশিষ্ট্যই হল জরায়ু থেকে ডিম নির্গত না হওয়া। তার পরিবর্তে যা ঘটে তা হল ডিমের চারপাশে তরল জমে সেগুলো সিস্টে পরিণত হয়। যদিও এই বৈশিষ্ট্যের কারনে একে পলিসিস্টিক ডিসওর্ডার বলা হয় তবুও অনেকক্ষেত্রেই সব মেয়েদেরই ডিম্বাশয়ে একাধিক সিস্ট নাও থাকতে পারে না। যেহেতু একাধিক কারনে পিসিওএস হয়ে থাকে তাই এর একক কোন চিকিৎসা নেই।[]


১৮ থেকে ৪৪ বছরের মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ এন্ডোক্রিন গ্রন্থির রোগ হল পিসিওএস। [১৬] এই বয়সের প্রায় ২% থেকে ২০% মহিলা এই অসুখে আক্রান্ত।[][১৩] এই রোগের একটি প্রধান কারণ হল হরমোনের অসামঞ্জস্যতার জন্য মহিলাদের শারীরিক উর্বরতা কমে যাওয়া।[]

বর্তমানে যাকে পিসিওএস বলা হয় সেই রোগের প্রাচীনতম বর্ণনা পাওয়া যায় ১৭২১ সালে ইটালিতে।[১৭]

লক্ষণ ও উপসর্গ

সম্পাদনা

এই রোগের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। কারো কারো একটি দুটি উপসর্গ থাকতে পারে আবার কারো অনেকগুলো উপসর্গ থাকতে পারে। এমনকি একজন মেয়ের মধ্যেই ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণ বেড়ে যেতে বা কমে যেতে দেখা যায়। পিসিওএস এর সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গগুলো নিম্নরূপঃ

  • ঋতুস্রাবের ব্যাধি: অধিকাংশ সময়ে পিসিওএস এর জন্য দেখা যায় অলিগোমেনোরিয়া (এক বছরে নয়ের কম ঋতুচক্র) বা অ্যামেনোরিয়া (পর পর তিন বা তার বেশি মাস ধরে কোন ঋতুস্রাব না হওয়া), কিন্তু অন্য কিছু কিছু ঋতুস্রাবের ব্যাধিও দেখা দিতে পারে।[১৬]
  • উচ্চ মাত্রায় পুরুষ হরমোন: এটিকে ইংরেজিতে বলা হয় হাইপারঅ্যান্ড্রোজেনিজম। নারীর শরীরে উচ্চ মাত্রায় পুরুষালী হরমোন নিসৃত হওয়ার ফলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায় যেমন:
    • ব্রণ - ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে বা পূর্বে তুলনায় বেড়ে যেতে পারে বা নতুন করে দেখা দিতে পারে।
    • হিরসুটিজম - শরীরে পুরুষের মত লোম, যেমন গালে এবং বুকে লোম ওঠা। তবে অন্য জাতির থেকে পিসিওএস আক্রান্ত এশিয়ানদের হিরসুটিজম হবার সম্ভাবনা কম।[১৮]
    • হাইপারমেনোরিয়া - অতিরিক্ত এবং বেশিদিন চলা রক্তস্রাব,
    • অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেশিয়া - চুল পাতলা হয়ে যাওয়া বা বিক্ষিপ্তভাবে চুল উঠে যাওয়া

উপর্যুক্ত লক্ষণগুলো ছাড়াও আরো অন্য কিছু লক্ষণ ও আসতে পারে।[১৬][১৯] আন্দাজমত পিসিওএস আক্রান্ত (এনআইএইচ/এনআইসিএইচডি ১৯৯০ এর রোগনির্ণয়ের মানদণ্ড দ্বারা) তিন চতুর্থাংশ মহিলার হাইপারঅ্যান্ড্রোজেনিমিয়া পাওয়া গেছে।[২০]

পিসিওএস সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে এবং রোগী যদি মোটা হতে থাকেন, তাহলে দীর্ঘকালীন জটিলতা দেখা দিতে পারে। পিসিওএসের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য যে লক্ষনগুলো জটিলতর অবস্থায় দেখা যায় সেগুলো হলঃ

 
Polycystic ovaries

অতিস্থূলতা, যথেষ্ট ব্যায়াম না করা, পারিবারিক ইতিহাসে আগে কারো হয়েছে এমন হলে তার সাথে এর যোগসাজস আছে বলে ধারণা করা হয়।[] অজানা কারণের জন্য পিসিওএস একটি হেটারোজেনাস ডিসঅর্ডার[২২][২৩] কিছু প্রমাণ থেকে জানা গেছে এটি একটি জেনেটিক রোগ।এই প্রমাণগুলি সংগ্রহ করা হয়েছে পারিবারিক ইতিহাসে বেশি দেখতে পাওয়ার ক্ষেত্রে, ডাইজাইগোটিক যমজের তুলনায় অধিক ঘটা মোনোজাইগোটিক যমজ এর ক্ষেত্রে এবং এন্ডোক্রিন ও বিপাকীয় লক্ষণে পিসিওএস এর উত্তরাধিকারিতা থেকে।[][২২][২৩] কিছু প্রমাণ থেকে জানা গেছে যে ইউটেরো তে সাধারণত মাত্রার থেকে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্ড্রোজেনএর সম্মুখীন হলে পরবর্তী জীবনে পিসিওএস হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।[২৪]

মহিলাদের মধ্যে জিনগত উপাদানগুলি উচ্চ জেনেটিক পেনিট্রেশন কিন্তু পরিবর্তনশীল এক্সপ্রেসিভিটি সহ অটোসোমাল ডমিনেন্ট ধরনে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত বলে মনে হয়; এর অর্থ, প্রতিটি শিশুর ৫০% সম্ভাবনা থাকে পিতা বা মাতার থেকে জিনগত রূপান্তর (গুলি)র উত্তরাধিকারী হওয়ার, এবং, যদি একটি মেয়ে রূপান্তর (গুলি) পায়, মেয়েটি কিছু পরিমাণে অসুখটিও পাবে।[২৩][২৫][২৬][২৭] জিনগত রূপান্তর (গুলি) বাবা অথবা মায়ের থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যায়, এবং ছেলে বা মেয়ে উভয়তে চালিত হয় (ছেলেদের ক্ষেত্রে কেঊ উপসর্গহীন বাহক হতে পারে বা কিছু উপসর্গ থাকতে পারে যেমন অল্প বয়সে টাকপড়া এবং/অথবা অতিরিক্ত লোম) এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে, পিসিওএস এর লক্ষণ দেখা যাবে।[২৫][২৭] অ্যালিল সহ মহিলাদের ক্ষেত্রে ওভারিয়ান ফলিকল এর থিকা কোষ থেকে উচ্চমাত্রায় অ্যান্ড্রোজেন ক্ষরিত হয়ে অন্তত আংশিকভাবে ফেনোটাইপ (কোনো জীবের বৈশিষ্ট্যগুলির বাহ্যিক প্রকাশ ওই জীবের ফেনোটাইপ বলে) নিজের বৃদ্ধি ঘটায়। ।[২৬] ঠিক কোন জিনটি প্রভাবিত হয় তা এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। [][২৩][২৮] কিছু বিরল ঘটনায় দেখা গেছে, একটি মাত্র জিনের পরিব্যক্তি থেকে সিনড্রোমের ফেনোটাইপ ঘটতে পারে।[২৯] লক্ষণগুলির রোগ সৃষ্টি করার ক্ষমতা বুঝে দেখা গেছে, এটি একটি জটিল বহু জিনগত অসুখ।[৩০]

রোগ নির্ণয়

সম্পাদনা

বর্তমানে পিসিওএস নির্ণয়ে একক কোন পরীক্ষা নেই। অনেকগুলো বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয় তার মধ্যে রয়েছে ক্লিনিক্যাল তথ্য, রোগীর অন্য কোন রোগ বা পারিবারিক ইতিহাস এবং শারিরীক পরিক্ষা ও ল্যাব পরীক্ষা। কিছু পরিক্ষা পিসিওএস আসলেই আছে নাকি অন্য কোন উৎস থেকে রোগীর সমস্যা হচ্ছে তা জানার জন্য করা হয় উদাহরণসরূপ ডিম্বাশয় বা এড্রিনাল গ্লান্ডে কোন টিউমার থাকলে তার কারনে অত্যধিক এনড্রোজেন হরমোন নিসৃত হতে পারে। আবার এড্রিনাল গ্লান্ড যদি অস্বাভাবিক বড় হয় তখনও অতিমাত্রায় এনড্রোজেন হরমোন নিসৃত হতে পারে যা আসলে পিসিওএস নয়।[৩১]

সাধারণত রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, নিম্নলিখিত তিনটির মধ্যে অন্তত দুটি পাওয়া গেলে: ডিম্বপাত না হওয়া, উচ্চ মাত্রার অ্যান্ড্রোজেন, এবং ওভারিয়ান সিস্ট[] আল্ট্রাসাউন্ড করে সিস্ট আছে কিনা নির্ণয় করা যায়।[] একইরকম উপসর্গ দেখা যায় যেগুলিতে সেগুলি হল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লেসিয়া, হাইপোথাইরয়েডিজম, এবং রক্তে উচ্চ ​​মাত্রায় প্রোল্যাক্টিন এর উপস্থিতি।[]

পিসিওএস ল্যাব টেস্ট

সম্পাদনা
  • টেস্টোস্টেরন Testosterone – শুরুতেই এই টেস্ট করা হয় যা দ্বারা বোঝা যায় অতিরিক্ত এনড্রোজেন হরমোন তৈরী হচ্ছে কিনা যাদের পিসিওএস আছে তাদের ক্ষেত্রে এটি standard/normal থেকে বেশি হয়।
  • এসএইচবিজি Sex hormone binding globulin (SHBG) – পিসিওএস থাকলে কম পরিমানে থাকে
  • এএমএইচ Anti-Müllerian hormone (AMH) – ডিম্বানু তৈরী হবার হার বুঝায়। যাদের পিসিওএস সমস্যা থাকে তাদের বেলায় এটি সাধারনের তুলনায় বেশি দেখা যায়।
  • এফএসএইচ Follicle stimulating hormone (FSH) – পিসিওএস রোগীদের ক্ষেত্রে কম বা সাধারণ মাত্রায় থাকে।
  • এলএইচ Luteinizing hormone (LH) – বেশি মাত্রায় থাকে
  • ইস্ট্রোজেন Estrogens – সাধারণ বা বেশি মাত্রায়
  • ডিএইচইএএস DHEAS – বেশি মাত্রায় থাকে
  • এন্ড্রোস্টেনডাইঅন Androstenedione – বেশি মাত্রায় থাকতে পারে

কিছু টেস্টের মাধ্যমে একই রকম লক্ষণ ও উপসর্গ আছে এমন কিছু অসুখ যেমন অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লেসিয়া, হাইপোথাইরয়েডিজম, এবং রক্তে উচ্চ ​​মাত্রায় প্রোল্যাক্টিন ইত্যাদি থেকে পিসিওএস আসলেই হয়েছে কিনা বোঝার জন্য করা হয় যেমন:

পিসিওএস নির্ধারিত হলে পিসিওএস হতে উৎপন্ন অন্যান্য সমস্যা রোগীর রোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে কিনা বা অন্য কোন জটিলতা তৈরী করছে কিনা তা জানার জন্য করা হয় আরো কিছু টেষ্ট:

  • রক্তের লিপিড প্যানেল টেস্ট (Lipid panel) – হৃদরোগের কোন লক্ষণ আছে কিনা বা জটিলতা তৈরী হচ্ছে কিনা তা বোঝার জন্য; low HDL, high LDL, high total cholesterol অথবা triglycerides বেড়ে গেলে ঝুকি আছে।
  • গ্লুকোজ টেস্ট Glucose or A1c – ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য।

অন্যান্য পরিক্ষা

সম্পাদনা
  • তলপেটের আল্ট্রা - ডিম্বাশয়ের আকৃতি, সিস্ট আছে কিনা, ডিম্বাশয় বড় হয়ে গিয়েছে কিনা বা কোন টিউমার রয়েছে কিনা পরীক্ষার জন্য। পিসিওএস রোগীদের ডিম্বাশয় সাধারণের তুলনায় ১.৫ থেকে ৩ গুন বড় দেখা যায়। ডিম্বাশয়ে ২০ বা তার অধিক জলজ সিস্ট দেখা যায়। সিস্টগুলো ডিম্বাশয়ের গায়ে নেকলেস গয়নার মত দেখতে পাওয়া যায়।[৩২] ৯০% পিসিওএস রোগীর ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায় কিন্তু এখন মজার তথ্য হল প্রায় ২৫% মহিলা যাদের কিনা কোন পিসিওএস উপসর্গ নেই তাদেরও এমন দেখা যায়।[৩৩] [[File:Polycystic_ovary.jpg|thumb|Transvaginal ultrasound scan of polycystic ovary]] [[File:PCO polycystic ovary.jpg|thumb|Polycystic ovary as seen on sonography]]
  • ল্যাপারোস্কোপি Laparoscopy - সাধারণভাবে ঔষধের মাধ্যমে সিস্ট না সারলে প্রয়োজনে সিস্ট অপারেশনে ব্যবহার করা হয়। [৩৪]

প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা

সম্পাদনা

যেহেতু একাধিক কারনে পিসিওএস জটিলতা তৈরী হয় তাই একক কোন চিকিৎসা নেই এটি ভাল করার তবে পরিক্ষা নিরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জটিলতা নিরসন করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। রোগের তীব্রতা, রোগীর শারীরিক সক্ষমতা এবং গর্ভধারনের ইচ্ছার উপর সম্পূর্ণ বিষয় নির্ভর করে। জীবনধারায় পরিবর্তন, যেমন ওজন কমানো এবং ব্যায়াম করা, এগুলিই হল এর চিকিৎসা। ডায়েট কন্ট্রোল, ব্যায়াম এবং ওজন নিয়ন্ত্রনের উপর গুরুত্ব দিয়ে পিসিওএস দূর করা সম্ভব।[১০][১১] সবুজ শাক-সবজি খাওয়া, ব্লাড প্রেসার কমানো গেলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চর্বিতে কোলেস্টরলের মাত্রা কমালে পিসিওএস দূর হবার সম্ভাবনা বাড়ে।

রোগী যদি নিজেদের ওজন পাঁচ শতাংশ কমাতে পারেন, তাহলে তাঁদের পিরিয়ড নিয়মিত হতে শুরু করবে। আর ওজন ১০ শতাংশ কমাতে পারলে ডিম্বাশয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে এবং বন্ধ্যাত্বের সমস্যা পুরোপুরি দূর হবে। পিসিওএসের রোগীদের অবশ্য ওজন কমানো অনেক কঠিন। প্রচুর পানি পান করতে হবে, ফলমূল ও শাকসবজি খেতে বেশি করে খেতে হবে। [৩৫]

জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি ব্যবহার করলে রজঃস্রাব স্বাভাবিক হয়, অবাঞ্ছিত লোম এবং ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।[১২]

মেটফরমিন এবং অ্যান্টি-অ্যান্ড্রোজেন জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করলে রজঃস্রাব স্বাভাবিক হয়, অবাঞ্ছিত লোম এবং ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এতে আরো ইনসুলিনের প্রতিরোধ্যতা হ্রাস পায় এবং ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমে।[১২] যাঁদের অন্যান্য ব্যবস্থা কাজ করেনি তাদের জন্য ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।[৩৬]

বিশেষ রকম ব্রণ চিকিৎসা এবং অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।[১২] হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রনের জন্য ঔষধ - Metformin বা Levothyroxine বা carbimazole এবং propylthiouracil।[৩৭] ব্রন এবং অতিরিক্ত চুলের সমস্যার জন্য ঔষধ বা লেজার বা ওয়াক্সিং করা যেতে পারে। ডিম্বাশয় ডিম্বস্ফোটন উর্বরতার জন্য - Clomiphene or Clomid জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা হয়।[৩৬] যাদের জরায়ুর ক্যান্সার ঝুকি রয়েছে তা কমানোর জন্য ডাক্তারের নির্দেশিত ঔষধ সেবন করতে হবে।


তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Kollmann M, Martins WP, Raine-Fenning N (২০১৪)। "Terms and thresholds for the ultrasound evaluation of the ovaries in women with hyperandrogenic anovulation"। Hum. Reprod. Update20 (3): 463–4। ডিওআই:10.1093/humupd/dmu005 পিএমআইডি 24516084 
  2. "USMLE-Rx"। polycystic ovary syndrome (PCOS), is a disorder characterized by hirsutism, obesity, and amenorrhea because of luteinizing hormone-resistant cystic ovaries.। ২০১৪। 
  3. "What are the symptoms of PCOS?"National Institute of Child Health and Human Development (NICHD) (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৩ 
  4. "Polycystic Ovary Syndrome (PCOS): Condition Information"National Institute of Child Health and Human Development। ২০১৩-০৫-২৩। ৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৫ 
  5. "Is there a cure for PCOS?"US Department of Health and Human Services, National Institutes of Health। ২০১৩-০৫-২৩। ৫ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৫ 
  6. De Leo V, Musacchio MC, Cappelli V, Massaro MG, Morgante G, Petraglia F (২০১৬)। "Genetic, hormonal and metabolic aspects of PCOS: an update"Reproductive Biology and Endocrinology : RB&E (Review)। 14 (1): 38। ডিওআই:10.1186/s12958-016-0173-xপিএমআইডি 27423183পিএমসি 4947298  
  7. Diamanti-Kandarakis E, Kandarakis H, (২০০৬)। "The role of genes and environment in the etiology of PCOS"। Endocrine30 (1): 19–26। ডিওআই:10.1385/ENDO:30:1:19পিএমআইডি 17185788 
  8. "How many people are affected or at risk for PCOS?"National Institute of Child Health and Human Development (NICHD)। ২০১৩-০৫-২৩। ৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৫ 
  9. "How do health care providers diagnose PCOS?"National Institute of Child Health and Human Development (NICHD)। ২০১৩-০৫-২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৫  অজানা প্যারামিটার |আর্কাইভের- ইউআরএল= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  10. Mortada R, Williams T (২০১৫)। "Metabolic Syndrome: Polycystic Ovary Syndrome"। FP Essentials (Review)। 435: 30–42। পিএমআইডি 26280343 
  11. Giallauria F, Palomba S, Vigorito C, Tafuri MG, Colao A, Lombardi G, Orio F (২০০৯)। "Androgens in polycystic ovary syndrome: the role of exercise and diet"। Seminars in Reproductive Medicine (Review)। 27 (4): 306–15। ডিওআই:10.1055/s-0029-1225258পিএমআইডি 19530064 
  12. "Treatments to Relieve Symptoms of PCOS"National Institute of Child Health and Human Development (NICHD) (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৩ 
  13. editor, Lubna Pal, (২০১৩)। "Diagnostic Criteria and Epidemiology of PCOS"। Polycystic Ovary Syndrome Current and Emerging Concepts। Dordrecht: Springer। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 9781461483946। ২০১৭-০৯-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  14. "Polycystic ovary syndrome (PCOS) fact sheet"Women's Health। ডিসেম্বর ২৩, ২০১৪। ১২ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৬ 
  15. Dumesic DA, Oberfield SE, Stener-Victorin E, Marshall JC, Laven JS, Legro RS (২০১৫)। "Scientific Statement on the Diagnostic Criteria, Epidemiology, Pathophysiology, and Molecular Genetics of Polycystic Ovary Syndrome"Endocrine Reviews (Review)। 36 (5): 487–525। ডিওআই:10.1210/er.2015-1018পিএমআইডি 26426951পিএমসি 4591526  
  16. Teede H, Deeks A, Moran L (২০১০)। "Polycystic ovary syndrome: a complex condition with psychological, reproductive and metabolic manifestations that impacts on health across the lifespan"BMC Med8 (1): 41। ডিওআই:10.1186/1741-7015-8-41পিএমআইডি 20591140পিএমসি 2909929  
  17. Kovacs, Gabor T.; Norman, Robert (২০০৭-০২-২২)। Polycystic Ovary Syndrome। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 4। আইএসবিএন 9781139462037। ১৬ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১৩ 
  18. Carmina E, Koyama T, Chang L, Stanczyk FZ, Lobo RA (১৯৯২)। "Does ethnicity influence the prevalence of adrenal hyperandrogenism and insulin resistance in polycystic ovary syndrome?"Am. J. Obstet. Gynecol.167 (6): 1807–12। ডিওআই:10.1016/0002-9378(92)91779-aপিএমআইডি 1471702 
  19. Christine Cortet-Rudelli; Didier Dewailly (সেপ্টে ২১, ২০০৬)। "Diagnosis of Hyperandrogenism in Female Adolescents"Hyperandrogenism in Adolescent Girls। Armenian Health Network, Health.am। ২০০৭-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-২১ 
  20. Huang A, Brennan K, Azziz R (২০১০)। "Prevalence of hyperandrogenemia in the polycystic ovary syndrome diagnosed by the National Institutes of Health 1990 criteria"Fertil. Steril.93 (6): 1938–41। ডিওআই:10.1016/j.fertnstert.2008.12.138পিএমআইডি 19249030পিএমসি 2859983  
  21. Nafiye Y, Sevtap K, Muammer D, Emre O, Senol K, Leyla M (২০১০)। "The effect of serum and intrafollicular insulin resistance parameters and homocysteine levels of nonobese, nonhyperandrogenemic polycystic ovary syndrome patients on in vitro fertilization outcome"। Fertil. Steril.93 (6): 1864–9। ডিওআই:10.1016/j.fertnstert.2008.12.024পিএমআইডি 19171332 
  22. Page 836 (Section:Polycystic ovary syndrome) in: Fauser BC, Diedrich K, Bouchard P, Domínguez F, Matzuk M, Franks S, Hamamah S, Simón C, Devroey P, Ezcurra D, Howles CM (২০১১)। "Contemporary genetic technologies and female reproduction"Hum. Reprod. Update17 (6): 829–47। ডিওআই:10.1093/humupd/dmr033পিএমআইডি 21896560পিএমসি 3191938  
  23. Legro RS, Strauss JF (২০০২)। "Molecular progress in infertility: polycystic ovary syndrome"। Fertil. Steril.78 (3): 569–76। ডিওআই:10.1016/S0015-0282(02)03275-2পিএমআইডি 12215335 
  24. Filippou, P; Homburg, R (১ জুলাই ২০১৭)। "Is foetal hyperexposure to androgens a cause of PCOS?"। Human Reproduction Update23 (4): 421–432। ডিওআই:10.1093/humupd/dmx013পিএমআইডি 28531286 
  25. Crosignani PG, Nicolosi AE (২০০১)। "Polycystic ovarian disease: heritability and heterogeneity"। Hum. Reprod. Update7 (1): 3–7। ডিওআই:10.1093/humupd/7.1.3পিএমআইডি 11212071 
  26. Strauss JF (২০০৩)। "Some new thoughts on the pathophysiology and genetics of polycystic ovary syndrome"। Ann. N. Y. Acad. Sci.997 (1): 42–8। ডিওআই:10.1196/annals.1290.005পিএমআইডি 14644808বিবকোড:2003NYASA.997...42S 
  27. Ada Hamosh (১২ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "POLYCYSTIC OVARY SYNDROME 1; PCOS1"OMIM। McKusick-Nathans Institute of Genetic Medicine, Johns Hopkins University School of Medicine। ১৬ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১১ 
  28. Amato P, Simpson JL (২০০৪)। "The genetics of polycystic ovary syndrome"। Best Pract Res Clin Obstet Gynaecol18 (5): 707–18। ডিওআই:10.1016/j.bpobgyn.2004.05.002পিএমআইডি 15380142 
  29. Draper; ও অন্যান্য (২০০৩)। "Mutations in the genes encoding 11β-hydroxysteroid dehydrogenase type 1 and hexose-6-phosphate dehydrogenase interact to cause cortisone reductase deficiency"। Nature Genetics34 (4): 434–439। ডিওআই:10.1038/ng1214পিএমআইডি 12858176 
  30. Ehrmann David A (২০০৫)। "Polycystic Ovary Syndrome"N Engl J Med352 (6039): 1223–1236। ডিওআই:10.1056/NEJMra041536পিএমআইডি 15788499পিএমসি 1688672  
  31. "PCOS Also Known As Stein-Leventhal Syndrome"https://labtestsonline.org। ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০।  |ওয়েবসাইট= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  32. O'Brien, William T. (১ জানুয়ারি ২০১১)। Top 3 Differentials in Radiology। Thieme। পৃষ্ঠা 369। আইএসবিএন 978-1-60406-228-1। ১৯ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৪Ultrasound findings in PCOS include enlarged ovaries with peripheral follicles in a "string of pearls" configuration. 
  33. http://www.radiologyinfo.org: Pelvic ultrasound
  34. [MedlinePlus: Pelvic laparoscopy "Pelvic laparoscopy"] |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) 
  35. "বহুমুখী অসুখ পিসিওএস"প্রথম আলো। ২৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৪: ১৯।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  36. "Infertility and Fertility"National Institute of Child Health and Human Development (NICHD) (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৩ 
  37. "What to know about hormonal imbalances"https://www.medicalnewstoday.com। জানুয়ারি ১৪, ২০২০।  |ওয়েবসাইট= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
শ্রেণীবিন্যাস
বহিঃস্থ তথ্যসংস্থান

টেমপ্লেট:Gonadal disorder