নীলিমা দাস (২৭ মে ১৯৯২ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬) ছিলেন বাংলা রঙ্গমঞ্চ ও চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট   অভিনেত্রী।[১] নৃত্যগীতেও তিনি ছিলেন পারদর্শী।

নীলিমা দাস
জন্ম(১৯২৯-০৫-২৭)২৭ মে ১৯২৯
মৃত্যু১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬(1996-02-12) (বয়স ৬৬)
জাতীয়তাভারতীয় 
নাগরিকত্বভারতীয় 
পেশাঅভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী
দাম্পত্য সঙ্গীকল্যাণ দাস
পিতা-মাতামথুরানাথ দাস (পিতা)
সুহাসিনী দাস (মাতা)

নীলিমা দাসের জন্ম ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ২৭ মে ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। পিতা মথুরানাথ দাস ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। মাতা সুহাসিনী ছিলেন সেকালের খ্যাতনাম্নী অভিনেত্রী। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে নীলিমা ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান। পিতার অকাল মৃত্যু হলে তার মা একরকম বাধ্য হয়েই অভিনয়ের জগতে আসেন। মাতার কিন্তু ইচ্ছা ছিল না, নীলিমা অভিনেত্রী হয়। তাই তিনি লেখাপড়া শেখানোর পর রাজকুমার সিং-এর কাছে মণিপুরি নৃত্য শেখান। মাত্র তের বৎসর বয়সে নীলিমা কলকাতার 'নিউ এম্পায়ার' ও 'টাইগার' সিনেমা হলের মঞ্চে তাসের দেশজটায়ু বধ নৃত্যনাট্যে অংশগ্রহণ করেন। এলাহাবাদে অল ইন্ডিয়া মিউজিক কনফারেন্সে নৃত্য পরিবেশন করে তিনি প্রশংসিত হন। সেকালের প্রখ্যাত ইম্প্রেসারিয়ো তথা প্রমোদ পরিবেশক হরেন ঘোষের দলের সঙ্গে নীলিমা ভারতের নানা স্থানে, এমনকি বিদেশেও ভ্রমণ করেন। পরে অবশ্য তিনি অভিনয় জগতে যুক্ত হন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ষোল-সতেরো বৎসর বয়সে আসেন চলচ্চিত্র জগতে। [১] তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল পরভৃতিকাকবি ছায়াছবিতে তার অভিনয় ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। মানু সেন, তুলসী লাহিড়ী, পশুপতি চট্টোপাধ্যায়, নীরেন লাহিড়ী, উৎপল দত্ত প্রমুখ পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। অনধিক ৩৪ টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি ছিল, অনন্যা[২] তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল–

  • অরক্ষণীয়া (১৯৪৮),
  • মহাকাল,
  • মেঘ (১৯৬১),
  • জীবন সৈকতে (১৯৭২),
  • অমৃত কুম্ভের সন্ধানে (১৯৮২), [২]

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি তিনি পেশাদার নাট্যমঞ্চে ও বেতারেও নিয়মিত অভিনয় করতেন। রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করেই তিনি বিশিষ্ট অভিনেত্রীর স্বীকৃতি পান। রঙমহলে কবি নাটকে 'বসন'-এর চরিত্রে অভিনয় করে প্রভূত প্রশংসা লাভ করেন। [১] ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে উৎপল দত্ত প্রতিষ্ঠিত ইংরেজী নাট্যদল লিটিল থিয়েটার গ্রুপ (এল টি জি) গঠন করলে নীলিমা যুক্ত হন। <ref name="BanglaCinema100"> এই সংস্থার হয়ে নাট্য উৎসবে ওথেলো নাটকে ওথেলোর স্ত্রী 'ডেসডিমোনো' ভূমিকায় নীলিমা অভিনয় করেন।[১] দীর্ঘদিন থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে 'কাশী বিশ্বনাথ মঞ্চ', 'স্টার', 'সুজাতা সদন', 'তপন থিয়েটার' মঞ্চে অভিনয় করেছেন।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলি হল–

এল টি জি–
  • ছায়ানট
  • নীচের মহল
  • একেই কি বলে সভ্যতা
  • অঙ্গার প্রভৃতি
পি এল টি–
  • টোটা
  • সূর্যশিকার
  • দাঁড়াও পথিকবর

জীবনাবসান

সম্পাদনা

নীলিমা দাস নৃত্যশিল্পী কল্যাণ দাসকে বিবাহ করেছিলেন। কিডনির রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন নীলিমা। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ ফেব্রুয়ারি কলকাতার নিজ বাসভবনে প্রয়াত হন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ২০৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. "নীলিমা দাস"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৭