নাহরকাটিয়া (নাহারকাটিয়া বা নাহোরকাটিয়া) হল ভারতের আসাম রাজ্যের ডিব্রুগড় জেলার একটি শহর এবং নগর অঞ্চল কমিটি। এটি জ্বালানী এবং গ্যাসের ভূগর্ভস্থ ভাণ্ডারের জন্য সুপরিচিত। এর আগে, অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের প্রধান অফিস দুলিয়াজান শহরটি এর বৃত্তের মধ্যে ছিল। যাইহোক, শহরদুটি কাছাকাছি, ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায়।

নাহরকাটিয়া
নাহারকাটিয়া
শহর
পাখির চোখে নাহরকাটিয়ার মঙ্গলবার বাজারের দৃশ্য।
পাখির চোখে নাহরকাটিয়ার মঙ্গলবার বাজারের দৃশ্য।
নাহরকাটিয়া আসাম-এ অবস্থিত
নাহরকাটিয়া
নাহরকাটিয়া
ভারতের আসামে অবস্থান।
স্থানাঙ্ক: ২৭°১৭′ উত্তর ৯৫°২০′ পূর্ব / ২৭.২৮° উত্তর ৯৫.৩৩° পূর্ব / 27.28; 95.33[১]
দেশ ভারত
রাজ্যআসাম
জেলাডিব্রুগড়
সরকার
 • শাসকনাহারকাটিয়া টাউন কমিটি
উচ্চতা১২১ মিটার (৩৯৭ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১৮,৯৩৭
ভাষা সমূহ
 • সরকারিঅসমীয়া
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০)
পিন৭৮৬৬১০
টেলিফোন কোড(+৯১)৩৭৪
যানবাহন নিবন্ধনএএস-০৬

জনসংখ্যার উপাত্ত সম্পাদনা

২০১১ সালে ভারতের আদমশুমারি অনুসারে,[২] নাহরকাটিয়ার জনসংখ্যা হল ১৮,৩৭ জন, এর মধ্যে ৯,৭৯০ জন পুরুষ এবং ৯,১৪৭ জন মহিলা। এখানকার সাক্ষরতার হার ৮৭.২৯%, রাজ্যের গড় ৭২.১৯% এর তুলনায় অনেক বেশি। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৯১.২৩%, মহিলাদের সাক্ষরতার হার ৮৩.০৮%। এই শহরর জনসংখ্যার ৯.৭৬% এর বয়স ৬ বছর তার কম।

শহরটিতে বহু সম্প্রদায়ের সংমিশ্রণ দেখতে পাওয়া যায়, মূলত অসমীয়া, বাঙালি, ভারতীয় গোর্খা, রাজস্থানী, বিহারি এবং অনেক মারোয়ারী এই জনপদ শহর অঞ্চলে বাস করে। কয়েকটি পাঞ্জাবি পরিবারও বহু বছর ধরে এই শহরে বাস করছে।

তবে, বৌদ্ধ ফকিয়াল বা তাই-ফাকে নামে পরিচিত একটি মঙ্গোলিয় উপজাতির বংশধররাও, এই শহরের বাইরে থাকে। তাদের গ্রামে একটি বৌদ্ধ বিহার রয়েছে এবং তাদের হাতে বোনা হস্তশিল্পগুলি খুব সুন্দর। মঠটি পর্যটকদের একটি আকর্ষণ কেন্দ্র এবং নির্মল পরিবেশে ধ্যান করার স্থান হিসাবে বিবেচিত হয়।[৩] এখানে তিনটি চা রোপণ কেন্দ্র থাকার কারণে শহরটি আরও আকর্ষণীয়।

এছাড়াও কিছু বোড়ো, মণিপুরী মানুষজন শহরের বাইরের বাসিন্দা।

পরিবহন সম্পাদনা

নাহরকাটিয়া রেলওয়ে স্টেশনটি প্রান্তিক স্টেশন হিসাবে কাজ করে। এই শহরটি দুলিয়াজান, নামরূপ, তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়, মোরান, গুয়াহাটি, জোরহাট এবং শিবসাগর শহরের সাথে ঘন ঘন বাস পরিষেবা দিয়ে যুক্ত।

ভূগোল সম্পাদনা

ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদী বুড়ি দিহিং এই শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে।

সাসোনি গজপুরিয়া, গাভোরু ডোলোং, মারবিল ইকো-ট্যুরিজম,[৪] নামফাকে ইত্যাদি গ্রামগুলি কয়েক কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত।

ইতিহাস সম্পাদনা

তাই-আহোম রাজা বা খোরা রাজা শিউখাম্ফার দত্তক পুত্র যুবরাজ নাহরকে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন কালিয়া চাওদাং। এই শাস্তিদানের ইতিহাসের সাথে নাহরকাটিয়া নামটি জড়িত। স্থানীয় বক্তব্য অনুযায়ী, মন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ তাই-অহোম অভিজাতদের বিরুদ্ধে তার অপকর্মের জন্য, 'এক অহোম উচ্চবংশজাত কালিয়া চাওদাং'কে রাজপুত্র নাহরকে শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল। এই কালিয়া ওরফে কোলা চাওদাং শেষ পর্যন্ত আজকের নাহরকাটিয়া রেলস্টেশনের কাছে এসে নিজ বসতি স্থাপন করেন, এবং এরপর থেকে, এই অঞ্চলের নাম নাহরকটিয়া হয়ে ওঠে। নাহর + কাটিয়া, অর্থাৎ, যে ব্যক্তি তাই-অহোম রাজা শিউখাম্ফার নির্দেশে নাহরকে কাটা বা শিরশ্ছেদ করেছিলেন তিনি সেখানেই এসেছিলেন।

অর্থনীতি সম্পাদনা

এই শহরটি কাছাকাছি চা বাগান এবং গ্রামগুলির বাণিজ্যিক কেন্দ্র। কয়েক কিলোমিটার দূরে জয়পুরের পাশে একটি ঘন জঙ্গল আছে এবং এর মধ্য দিয়ে গিয়ে অরুণাচল প্রদেশে প্রবেশ করা যায়, এবং সেখানে অবৈধ কাঠ ব্যবসা চলে। নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অবৈধ কাঠ ব্যবসা হ্রাস করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "redirect to /world/IN/03/Nahorkatiya.html"www.fallingrain.com 
  2. "Census of India 2011: Data from the 2011 Census, including cities, villages and towns (Provisional)"। census2011.co.in। ২০১৫-০৩-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-১৪ 
  3. Namphake Village , Naharkatiya
  4. "Pledge to promote wetland tourism - Dibrugarh villagers take vow to turn Merbil into favoured destination"telegraphindia.com। ২৩ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৯ 

আরও দেখুন সম্পাদনা