নলিনাক্ষ সান্যাল

ভারতীয় রাজনীতিবিদ এবং অর্থনীতিবিদ

নলিনাক্ষ সান্যাল (নভেম্বর, ১৮৯৮ — ২৯ অক্টোবর, ১৯৮৭) একজন বাঙালি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও অর্থনীতিবিদ। তার জন্ম হয়েছিল নদিয়া জেলায়।

নলিনাক্ষ সান্যাল
জন্মনভেম্বর, ১৮৯৮
মৃত্যু২৯ অক্টোবর, ১৯৮৭
নাগরিকত্বভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনপ্রেসিডেন্সি কলেজ, লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স
পেশাঅর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক
পরিচিতির কারণভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নেতা
আন্দোলনস্বাধীনতা আন্দোলন

শিক্ষা

সম্পাদনা

বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ এবং প্রেসিডেন্সী কলেজের পাঠ শেষ করে বিলেত যান। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স এর ছাত্র ছিলেন। খ্যাতনামা পণ্ডিত হ্যারল্ড ল্যাস্কির অধীনে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি।

রাজনীতি

সম্পাদনা

লন্ডনে থাকাকালীন জাতীয়তাবাদী ও দেশাত্মবোধক রাজনীতিতে আকৃষ্ট হন। সেদেশে একটি সরকারি ভবনে কংগ্রেস পতাকা উড়িয়ে কারাদণ্ড ভোগ করেন। সাইমন কমিশন বয়কটের জন্যেও তার কারাবাস হয়। দেশে ফিরে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কমিটির প্রথম সারির নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। কলকাতায় ১৯৩৩ সালে নিষিদ্ধ কংগ্রেস অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতিত্ব করার অভিযোগে আবার তিনি গ্রেপ্তার হন। ১৯৩৬ সালে প্রথমবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস বিধায়ক হয়েছিলেন। সুবক্তা ছিলেন। ১৯৩৭-৪৭ টানা দশ বছর বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সংসদে দলের মুখ্যসচিব ছিলেন। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে অজয় মুখোপাধ্যায়ের সংগে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে আলাদা বাংলা কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন এবং পূনরায় বিধায়ক হন। মতবিরোধে আবার দল পরিত্যাগ করে প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ এর পি ডি এফ মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। এই মন্ত্রিসভা বিদায়ের পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসেন নলিনাক্ষ সান্যাল।[১]

সামাজিক কর্মকাণ্ড

সম্পাদনা

দীর্ঘ ৩৫ বছর কলকাতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অর্থনীতি বিষয়ে অধ্যাপনা করেছেন নলিনাক্ষ সান্যাল। আধুনিক মনস্ক, সংস্কারমুক্ত চিন্তার মানুষ ছিলেন তিনি। ১৯২৪ সালে বিবাহ করেন বহরমপুরের ভট্টাচার্য পরিবারের কন্যাকে। নিজের বিবাহ অনুষ্ঠানে কোনো রকম ধর্মীয় সংস্কার ও গোঁড়ামিকে প্রশ্রয় দেননি। তৎকালীন হিন্দু সমাজপতিদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে শালগ্রামশিলা, পঙ্‌ক্তি ভোজনের প্রথাকে বাতিল করে বিবাহ করেন। নিমন্ত্রণ করেন বন্ধু কাজী নজরুল ইসলামকে। যা তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল বিবাহ বাসরে।[২] বহরমপুর জেল থেকে কবি নজরুল ছাড়া পেলে সর্বপ্রথম সংবর্ধনা দিয়েছিলেন তার সুহৃদ নলিনাক্ষ সান্যাল ও জেল গেট থেকে নজরুলকে শোভাযাত্রা সহকারে নিয়ে যান এবং সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজের বাসায় তোলেন।

নলিনাক্ষ সান্যাল করিমপুর পান্নাদেবী কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।[৩]

মৃত্যু

সম্পাদনা

২৯ অক্টোবর, ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান নলিনাক্ষ সান্যাল।[১]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. দ্বিতীয় খন্ড, অঞ্জলি বসু (২০০৪)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ১৫০। 
  2. "রেজাউল করিমই দ্বিজশ্রেষ্ঠ, প্রণাম করে বলেছিলেন কলেজের ছাত্রীরা"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ১৬ নভেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৭ 
  3. "Karimpur Pannadevi College"karimpurpannadevicollege.in। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৭