নরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ
নরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ (১৪ এপ্রিল, ১৯১২ - ৪ আগস্ট ১৯৯৪) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী। বিপ্লবী মৃণাল কান্তি ঘোষ চৌধুরীর সংস্পর্শে যুগান্তর দলে যোগ দেন। বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে তিনি বহুবার গ্রেপ্তার হন, কারাবরণ করেন এবং শাস্তি ভোগ করেন। অস্ত্রসহ পলাতক জীবন কাটিয়েছেন বহু বছর।[১]
নরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ | |
---|---|
জন্ম | ১৪ এপ্রিল, ১৯১২ |
মৃত্যু | ৪ আগস্ট ১৯৯৪ |
আন্দোলন | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন |
জন্ম
সম্পাদনানরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ ১৯১২ সালে ঠাকুরগাঁওয়ের বালুবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম দুর্গাদাস ঘোষ।[২]
বিপ্লবী জীবন
সম্পাদনাপুলিস ফাইল অনুযায়ী জানা যায় দুর্ধর্ষ বিপ্লবী নরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ ১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর অস্ত্রসহ দিনাজপুরের পতিরামে গ্রেপ্তার হন। বিচারে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১১, (আইপিসি) অনুসারে ঐ বছরেরই ২৩ ডিসেম্বর তার তিন মাসের কারাবাস হয়। সাজা শেষ হলেও তিনি ছাড়া পাননি। পুনরায় ১৯৩৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ড অ্যাক্ট অনুযায়ী বিচারে তার ৫ বছরের সাজা ঘোষণা হয়। ষড়যন্ত্রকারী ইংরেজরা নানা ফন্দি ফিকির করে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বিপ্লবী নরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষকে বারবার জেলে ঢুকিয়েছে। ১৯৩৫ সালে তার বিরুদ্ধে আনা হল ১২০ বিআইপিসি ধারা, সাথে জুড়ে দেয়া হলো ৩৯৫ ধারাও। ১৯৩৬ সালের ২৩ মার্চ ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হল নরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষকে।[২]
আন্দামানে নির্বাসন
সম্পাদনাইংরেজ শাসকের মহাশত্রু নরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষকে পায়ে বেড়ি পরিয়ে আন্দামানে সেলুলার জেলে পাঠানো হয়। আন্দামান সেলুলার জেলের গারদে দিনগুনতে থাকেন তিনি। সেখানে গিয়েও বন্দীদের সুব্যবস্থার দাবিতে সংগঠিত দ্বিতীয় দফার আন্দোলনে অংশ নিয়ে নরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ ১৯৩৭ সালে ৩৭ দিন অনশন করেন। দীর্ঘ পনের বছরের অধিক জেলে কাটানোর পরে তিনি মুক্তি পান।[২]
শেষ জীবন
সম্পাদনানরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ ১৯৪৭-এর পর জলপাইগুড়ি জেলায় চলে যান।পরবর্তীতে তিনি পাণ্ডাপাড়ায় বসবাসের জন্য প্লট পান। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি সংসার জীবনে প্রবেশ করেন এবং সংসার প্রতিপালনে মনোনিবেশ করেন। তার তিন পুত্র রয়েছে। ১৯৯৪ সালের ৪ আগস্ট তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ রায়, অজয় কুমার (আগস্ট ২০১৮)। "রাজনৈতিক ও গুণী ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি"। ঠাকুরগাঁও জেলার ইতিহাস (২ সংস্করণ)। ঢাকা: টাঙ্গন প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা ২৩৮-২৩৯। আইএসবিএন 978-9843446497।
- ↑ ক খ গ ঘ নৃপেন্দ্রনাথ পাল ও অন্যান্য সম্পাদিত, উত্তরবঙ্গের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবনালেখ্য, প্রথম খণ্ড, ক্ষুদিরাম স্মৃতিরক্ষা কমিটি, কোচবিহার, প্রথম প্রকাশ মে, ২০১৪, পৃষ্ঠা ১৪২-১৪৩