নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

বাংলদেশের নওগাঁ জেলায় অবস্থিত স্বনামধন্য একটি বিদ্যালয়

নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নওগাঁ জেলায় অবস্থিত স্বনামধন্য একটি বিদ্যালয়। ১৯১৭ সালে নওগাঁ শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টিতে তৃতীয় শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে। বিদ্যালয় প্রভাতি এবং দিবা -এই দুই শাখায় পরিচালিত হয়। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধীনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নীতিমালা অনুসরণ করে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়।

নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের লোগোর ছবি
নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের লোগো
অবস্থান
মানচিত্র

৬৫০০

স্থানাঙ্ক২৪°৪৮′৪৭″ উত্তর ৮৮°৫৬′৩৩″ পূর্ব / ২৪.৮১৩০৬৪° উত্তর ৮৮.৯৪২৫১০° পূর্ব / 24.813064; 88.942510
তথ্য
প্রাক্তন নামমুসলিম বালিকা বিদ্যালয়
ধরনসরকারি বিদ্যালয়
নীতিবাক্যজ্ঞানই শক্তি
প্রতিষ্ঠাকাল১৯১৭
অবস্থাসক্রিয়
বিদ্যালয় বোর্ডমাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড,রাজশাহী
বিদ্যালয় জেলানওগাঁ
সেশনজানুয়ারি
বিদ্যালয় কোড১২৩৪১৯
প্রধান শিক্ষিকা
প্রধান শিক্ষকনিলীমা আখতার জাহান
কর্মকর্তা
শিক্ষকমণ্ডলী৫০
শ্রেণী৩য়-১০ম
Years offered
লিঙ্গমেয়ে
শিক্ষার্থী সংখ্যাপ্রায় ২২০০ জন
ভাষাবাংলা
সময়সূচিদিবা ও প্রভাতি
বিদ্যালয়ের কার্যসময়
শ্রেণীকক্ষ২৫
শিক্ষায়তন১.০৮ একর
ক্যাম্পাসের ধরনশহরাঞ্চলীয়
রং         নীল ও সাদা
ওয়েবসাইটnaogaongovtgirlshighschool.edu.bd

অবস্থান সম্পাদনা

নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার খাস নওগাঁ এলাকায় অবস্থিত। এই বিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে নওগাঁ কে.ডি. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এব নওগাঁ সরকারি ডাকবাংলো অবস্থিত। আর পশ্চিম দিকে নওগাঁ উদ্যান অবস্থিত।

ইতিহাস সম্পাদনা

১৯১৭ সালে নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে বিদ্যালয়টির নাম ছিল মুসলিম বালিকা বিদ্যালয়। ১৯৭০ সালে বিদ্যালয়টিকে সরকারি আত্তীকরণ করা হয়।[১]

অবকাঠামো সম্পাদনা

নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ১.০৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। কাঠামোগতভাবে স্কুলটিতে ৫টি ভবন রয়েছে। বর্গাকার আকৃতিতে ভবনগুলো অবস্থিত। ভবনগুলোর মাঝে একটি বিশাল আঙিনা আছে। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩টি বিজ্ঞানাগার রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে আইসিটি ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। এছাড়া সকল শিক্ষার্থীর জন্য খেলার মাঠ, নামায ঘর, অডিটরিয়াম, গ্রন্থাগার ও ২৫টি শ্রেণি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে।[২]

শিক্ষার্থীদের পোশাক সম্পাদনা

নীল      এবং সাদা      রং এর কাপড় দিয়ে তৈরী হয় বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পোশাক। সাদা ফিতা সংবলিত নীল রঙের ফ্রক, সাদা পায়জামা, নীল রঙের স্কার্ফ ব্যবহার করা হয়।

শিক্ষা পদ্ধতি সম্পাদনা

এই বিদ্যালয়টিতে তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা মাধ্যমে পাঠদান করা হয়। প্রতিটি শ্রেণী বিভিন্ন শিফট ও শাখায় বিভক্ত। বিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা চালু আছে। প্রতি বছরই তৃতীয়ষষ্ঠ শ্রেণীতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এর নীতিমালা অনুসরণপূর্বক জেলা শিক্ষা অফিসারের তত্ত্বাবধানে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন ছাত্রীদের ভর্তি করা হয়।

শ্রেণি ও শাখা ব্যবস্থা সম্পাদনা

বিদ্যালয়টির লেখাপড়ার মান ও প্রতিবছর ঈর্ষনীয় সফলতার কারণে রাজশাহী বিভাগের উল্লেখযোগ্য বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি বিবেচনা করা হয়। আর তাই প্রতি বছরই শত শত ছাত্রী ভর্তির সুযোগ নিতে উন্মুখ হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ে উপচে পড়া ছাত্রীদের সঠিক ও মানসম্মত লেখাপড়া নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়টিকে প্রভাতী ও দিবা দুইটি শিফটে ভাগ করে পাঠদান কর্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণিতে ৪টি করে শাখা বিদ্যমান এবং প্রতিটি শাখায় ৩৫-৪০ জন ছাত্রীর পাঠদান হয়।

শিফট ও শাখা সম্পাদনা

শ্রেণিভেদে প্রতি শিফটের শাখাগুলো

শিফট তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম ষষ্ঠ সপ্তম অষ্টম নবম দশম
প্রভাতী (শাখা) ১টি ১টি ১টি ২টি ২টি ২টি ২টি ২টি
দিবা (শাখা) ১টি ১টি ১টি ২টি ২টি ২টি ২টি ২টি

শিক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনা

বিদ্যালয়টিতে ৩য় শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। প্রতিটি শ্রেণী/শাখাতে একজন ক্লাস শিক্ষক থাকে। সর্বপ্রথম ক্লাস ক্লাস শিক্ষক নেন। তিনি সেই ক্লাস নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি ছাত্রীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন, ছাত্রীদের মাসিক বেতন গ্রহণ করেন, সেই শ্রেণীর ছাত্রীদের অবিভাবকের সাথে যোগাযোগ করেন, তিনি সেই শ্রেণীর সর্বশেষ ফলাফল দান করেন, সেই শ্রেণীর কোন ছাত্রীর যেকোনো প্রকার সাহায্যের জন্য তিনি সর্বপ্রথম এগিয়ে আসেন।

সমাবেশ সম্পাদনা

প্রতিদিন প্রত্যেক শিফটের শুরুতে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে প্রাত্যহিক সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে ছাত্রীদের মধ্যে একজন পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত এবং তারপর গীতা পাঠ করে আরেকজন ছাত্রী। তারপর সকল ছাত্রীরা একসাথে শপথ বাক্য পাঠ করে এবং জাতীয় সঙ্গীত গায়। তারপর শারীরিক চর্চার শিক্ষক ছাত্রীদের কিছু কসরত করান। সমাবেশে সকল ছাত্রীদের থাকা বাধ্যতামূলক। সকল শিক্ষকও উপস্থিত থাকেন। প্রতিটা শ্রেণী এবং শাখার ছাত্রীরা আলাদা আলাদা সুশৃঙ্খল সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। শিক্ষকগন সকল ছাত্রীদের বাধ্যতামূলক ইউনিফরমের নিশ্চিত করেন। সবশেষে ছাত্রীরা সারিবদ্ধভাবে মাঠ পরিত্যাগ করে এবং শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করে।

বেতন সম্পাদনা

সরকারী স্কুল হওয়ায় এই বিদ্যালয়ে বেসরকারী স্কুলের তুলনায় খরচ অনেক কম। প্রতি মাসে বেতনের সাথে টিফিন ফি নেয়া হয়। মাসে ৩টা তারিখ থাকে বেতন দেওয়ার জন্য। শ্রেণী শিক্ষক বেতন আদায় করেন।

সহ-শিক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনা

২০০৫ সালের এনটিভির শাপলা কুড়ি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা তৃতীয় স্থান অর্জন করে। ২০০৬ সালের শাপলা কুড়ি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা প্রথম স্থান অর্জন করে। তাছাড়াও অঞ্চলভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করে।[৩][৪]

প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়ের নিজস্ব খেলার মাঠে। তাছাড়া বার্ষিক সংস্কৃতি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় হল রুমে। এসবের পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে এলাকার গণ্যমান্য বাক্তিবর্গ এবং একজন বিশেষ ব্যক্তি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকেন।[৫][৬][৭]

তাছাড়া স্কুলে নিয়িমিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রেডক্রিসেন্ট কার্যক্রম, বিজ্ঞান মেলা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সপ্তাহ ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা - নওগাঁ জেলাঢাকা: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৪৩। আইএসবিএন 983-07-5332-0 
  2. "এক নজরে নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়"www.naogaongovtgirlshighschool.edu.bd। ২০২০-০৬-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৫ 
  3. "বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ছাত্রী (দলীয় নৃত্য)"জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২০২০-০৬-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৫ 
  4. "আজ সেরাদের লড়াই"দৈনিক সমকাল। ১৫ জুন ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৫ 
  5. "নওগাঁ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা"Bahumatrik.com। ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৫ 
  6. "নওগাঁ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত"দৈনিক সংগ্রাম। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৫ 
  7. "নওগাঁয় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত"সময়নিউজ২৪.কম। ২০১৯-০৯-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা