ধীরাজ ভট্টাচার্য
ধীরাজ ভট্টাচার্য (জন্ম:৫ নভেম্বর, ১৯০৫, মৃত্যু: ১৯৫৯) উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্রের এক নক্ষত্রের নাম। পঞ্চাশের দশকের সিনেমায় অভিনয় করে তিনি লক্ষ মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেন।
ধীরাজ ভট্টাচার্য | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ৫ নভেম্বর ১৯০৫ |
মৃত্যু | ১৯৫৯ |
জাতীয়তা | বাঙ্গালী |
পরিচিতির কারণ | অভিনেতা |
পিতা-মাতা | ললিতমোহন ভট্টাচার্য |
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষাসম্পাদনা
১৯০৫ সালে এক শিশু জন্মগ্রহণ করেন যশোর জেলাস্থ কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া গ্রামে । নাম তার রাখা হয় ধীরাজ। তার পিতা ছিলেন ললিতমোহন ভট্টাচার্য, পেশায় একজন শিক্ষক।
ধীরাজ বাবুর শিক্ষাজীবনের শুরু হয় নিজ গ্রাম পাঁজিয়ার স্কুলে। পরবর্তীতে তিনি ভর্তি হন কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিশনে এবং তিনি ১৯২৩ সালে পাশ করেন ম্যট্রিকুলেশন। এরপর তিনি ভর্তি হন আশুতোষ কলেজে। এই কলেজে পড়ার সময় সিনেমার প্রতি প্রবল আগ্রহ জন্মে তার। ফলে কলেজ পাশ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
কর্মজীবনসম্পাদনা
কর্মজীবনের শুরুটা হয় একটি নির্বাক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। চলচ্চিত্রটি ১৯২৪ সালে নির্মিত হয়। যার চিত্র পরিচালক ছিলেন জ্যোতিষ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণ তার পরিবার মেনে নেয়নি। ফলে চলচ্চিত্র তাকে ছাড়তে হয়। এবং বাবার কথায় ভর্তি হন পুলিশের কলকাতা জোনের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চে। তারপর তার বদলি হয় বার্মায়। কিন্তু কিছু অসুবিধার কারণে তাকে চাকরি ছাড়তে হয়। ১৯২৩-১৯২৪ সালের দিকে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কক্সবাজারের টেকনাফে কর্মরত ছিলেন তিনি।
আবার কলকাতায় ফিরে তিনি সিনেমায় অংশগ্রহণের চেষ্টা করেন। সেই সময় ১৯৩০ সালে তার পরিচয় হয় চিত্র পরিচালক মধুবাবুর সঙ্গে। মধুবাবু তখন সিনেমার জন্য নতুন নায়ক খুঁজছিলেন। তখই ধীরাজকে দেখে ভাল লেগে যায় মধু বাবুর। এরপর থেকে আর ধীরাজকে পিছনে তাকাতে হয়নি।।[১]
অভিনীত কিছু চলচ্চিত্রসম্পাদনা
ধীরাজ অভিনীত কিছু নির্বাক চলচ্চত্রি হলোঃ-
- সতীলক্ষ্ণী,
- গিরিবাল,
- কাল পরিণয়,
- মৃণালিনী এবং
- নৌকাডুবি।
এই সবাক যুগে এসে ধীরাজের প্রথম ছবি হলো কৃষ্ণকান্তের উইল। আরো কিছু সবাক চলচ্চিত্রঃ-
- যমুনা পুলিন,
- দক্ষযক্ষ,
- বসনত্মসেনা,
- নরনারায়ণ,
- কৃষ্ণসুদামা।
এছাড়া আরো কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ধীরাজ কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন । যেমনঃ-
- মরণের পরে,
- হানাবাড়ী
- রাত একটা
- ডাকিনলার চর,
- ধূমকেতু।
সাহিত্যসম্পাদনা
সাহিত্যে ধীরাজের আগ্রহ ছিল। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি লিখেছেন দুটি আত্মাজীবনীমূলক গ্রন্থ। গ্রন্থদুটি হচ্ছে একটি যখন নায়ক ছিলাম এবং যখন পুলিশ ছিলাম । এছাড়া তার আরো কিছু গ্রন্থ রয়েছে। যেমনঃ মন নিয়ে খেলা, সাজানো বাগান, মহুয়া মিলন ইত্যাদি।[১]
পরলোকগমনসম্পাদনা
এই জনপ্রিয় অভিনেতা ১৯৫৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। জীবনে তিনি অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।