যায়যায়দিন
যায়যায়দিন বাংলাদেশ থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি দৈনিক সংবাদপত্র। বাংলাদেশি সাংবাদিক শফিক রেহমান ১৯৮৪ সালে সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসাবে যায়যায়দিন প্রতিষ্ঠা করেন।[১]
![]() | |
![]() | |
মালিক |
|
---|---|
প্রকাশক |
|
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৮৪ |
ভাষা | বাংলা |
সদর দপ্তর | লাভ রোড, ৪৪৬/ই+এফ+জি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ |
ওয়েবসাইট | jaijaidin jaijaidin |
ইতিহাস
সম্পাদনা৮০-র দশকের শেষে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সাপ্তাহিক পত্রিকাটি আলোচিত ভূমিকা পালন করে। ফলে এরশাদ সরকার কর্তৃক তৎকালীন সম্পাদক শফিক রেহমান বাংলাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন ও পত্রিকাটি সে সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়।[২] ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পত্রিকাটি আবার চালু হয়। ১৯৯৯ সালে এটি দৈনিক হিসেবে ট্যাবলয়েড আকারে প্রকাশ হতে শুরু করে।[৩] সে সময় তেমন সাড়া না পাওয়ায় দৈনিক হিসেবে প্রকাশ বন্ধ করে দেয়া হয় ও সাপ্তাহিক হিসেবে প্রকাশ হতে শুরু হয়। এরপর আবার ২০০৬ সালে নতুন আঙিকে পত্রিকাটি দৈনিক হিসেবে প্রকাশ হতে শুরু করে।
শফিক রেহমান ২০০৭ সালে সামরিক-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য যায়যায়দিনের সম্পাদকত্ব হারান। সেই সময় শফিক রেহমান তার পত্রিকার মালিকানা সাঈদ হোসেন চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করেন।[৪] শফিক রেহমান পদত্যাগ করার পর শহীদুল হক খান এবং পরে বরুণ শংকর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০০৮ সালের ২৩ নভেম্বর কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব নেন।[৫]
২০০৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আবুল হাসান মো. আল-ফারুক যায়যায়দিনের প্রকাশকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ২০১১ সালের ৯ জুন পত্রিকার প্রকাশকের পদত্যাগের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে প্রকাশকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদ হোসেন চৌধুরী যায়যায়দিনের প্রকাশক ও মুদ্রাকরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।[৫]
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, ২০২৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশ পত্রিকার মালিক সাঈদ হোসেন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করার জন্য পত্রিকাটির অফিসে অভিযান চালায়।[৬] বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্তৃক দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়।[৬]
২০২৫ সালে শফিক রেহমানের করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ১০ ফেব্রুয়ারি ডিসি অফিস সাঈদ হোসেন চৌধুরীর নামে থাকা পত্রিকার ঘোষণাপত্র (প্রকাশের অনুমতি) বাতিল করে। পত্রিকাটি অনুমোদিত প্রেস থেকে ছাপা না হওয়া এবং মুদ্রণ সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য প্রদানে পত্রিকাটির সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমানের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ১২ মার্চ ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ এই বিষয়ে অফিস আদেশ জারি করেন।[৭] ১৮ মার্চ শফিক রেহমান দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ‘ঘোষণাপত্র’ (প্রকাশনার অনুমতি) ফেরত পান।[৮]
অবস্থান ও কার্যালয়
সম্পাদনাযায়যায়দিন পত্রিকাটির অফিস "যায়যায়দিন মিডিয়াপ্লেক্স" ভবনে অবস্থিত। যায়যায়দিন মিডিয়াপ্লেক্স ঢাকার তেজগাঁও বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত। কমপ্লেক্সটি দুটি দালান নিয়ে গঠিত। দক্ষিণের দালানটি তিনতলা বিশিষ্ট। এর নিচতলায় প্রকাশনা শাখা, বাণিজ্যিক বিভাগ, বিপণন বিভাগ ও অভ্যর্থনা ডেস্ক অবস্থিত। দ্বিতীয় তলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। গোলটেবিল বৈঠকের জন্য "ক্লিনটন রুম" ব্যবহৃত হয়। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া এ. বিউটেনিস এই কক্ষের উদ্বোধন করেন।
বিভিন্ন কর্মশালা আয়োজনের জন্য রয়েছে "মাহাথির রুম"। "মনরো স্টুডিও" পত্রিকার ফটোস্টুডিও ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান ধারণের জন্য ব্যবহৃত হয়। "হিচকক হল" হচ্ছে, একটি ৪০ আসনের মুভি থিয়েটার। এর পরে আছে "পিকাসো গ্যালারি" এবং "চে ক্যাফে"। এখানে যায়যায়দিনের জনপ্রিয় কলাম "চে ক্যাফেতে দশ মিনিট" আয়োজন করা হয়। তৃতীয় তলা সংবাদকর্মীদের কর্মস্থল। সংবাদ, সম্পাদকীয়, নিবন্ধ ও ফটোগ্রাফি বিভাগ এখানে অবস্থিত। এই তলায় কাজ করার উপযোগী ১৭৬টি ডেস্ক রয়েছে।
উত্তরের দালানটি দুইতলা বিশিষ্ট। নিচতলায় প্রকাশিত সংবাদপত্র জমা রাখা হয়। পুরো কমপ্লেক্সের বিদ্যুৎ শক্তিকেন্দ্র এখানেই রয়েছে। প্রথম তলায় ৪৪ আসনের ডরমিটরি রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের শিক্ষার্থীদের স্বল্পকালীন মেয়াদে যায়যায়দিন মিডিয়াপ্লেক্স পরিদর্শনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একারণে ডরমিটরিটি ব্যবহৃত হচ্ছে। যায়যায়দিন এসব শিক্ষার্থীদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি সংবাদপত্র প্রকাশনা বিষয়ক স্বল্পকালীন কোর্সও পরিচালনা করে থাকে। এই তলায় "মাও ক্যান্টিন" অবস্থিত।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Shafik Rehman - who is he?"। দ্য ডেইলি স্টার। এপ্রিল ১৬, ২০১৬।
- ↑ "Who is Shafik Rehman?"। ঢাকা ট্রিবিউন। এপ্রিল ১৬, ২০১৬। জুলাই ২৪, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ৮, ২০২০।
- ↑ "JAY JAY DIN"। shongjog.org.bd। ৮ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০২০।
- ↑ "যায়যায়দিন'র ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দিতে ৩ দিনের আল্টিমেটাম"। যায়যায়দিন। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২৫।
- ↑ ক খ "যায়যায়দিন দখলমুক্ত ও ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি"। যায়যায়দিন। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২৫।
- ↑ ক খ "সাঈদ হোসেনের খোঁজে যায়যায়দিন কার্যালয়ে অভিযান"। বিডিনিউজ২৪.কম। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২৫।
- ↑ প্রতিবেদক, বিশেষ (২০২৫-০৩-১২)। "দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার 'ডিক্লারেশন' বাতিল"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-১২।
- ↑ প্রতিবেদক, বিশেষ (১৮ মার্চ ২০২৫)। "এবার দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার 'ডিক্লারেশন'পেলেন শফিক রেহমান"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২৫।