দেশে বিদেশে
দেশে বিদেশে হচ্ছে কথা-সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত একটি ভ্রমণ কাহিনি, যা ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সালের আফগানিস্তান ভ্রমণের উপর রচিত। এটি ১৯৪৮ সালের মার্চ মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।[১] এটি সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রকাশিত প্রথম বই। একটি ভ্রমণলিপি হওয়া সত্ত্বেও এটি আফগানিস্তানের লিখিত ইতিহাসের একটি অনবদ্য দলিল।
![]() | |
লেখক | সৈয়দ মুজতবা আলী |
---|---|
ভাষা | বাংলা |
ধরন | ভ্রমণসাহিত্য |
প্রকাশিত | ১৯৪৮ |
মিডিয়া ধরন | মুদ্রিত গ্রন্থ |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ২০৮ |
সারাংশসম্পাদনা
শান্তিনিকেতনে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে মাত্র ২৩ বছর বয়সে আফগানিস্তান সরকারের অনুরোধে "কাবুল কৃষি কলেজে" ফারসি এবং ইংরেজি ভাষার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। দেশে বিদেশে ভ্রমণলিপিটি শুরু হয় তার কলকাতা থেকে পেশাওয়ার হয়ে কাবুল যাওয়ার বর্ণনা দিয়ে। কাবুলে তিনি ব্যক্তিত্বের সাথে পরিচিত হন এবং অত্যন্ত সূক্ষ্ম রসবোধের সাহায্যে তাদের সাথে কথোপোকথন ও দৈনন্দিন জীবনের কার্যকলাপ তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে আফগানিস্তানের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, শিক্ষা ও মোল্লাতন্ত্র-প্রকৃত ধর্মচর্চার প্রভেদ সম্পর্কে লেখক তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেন। কাবুলে অবস্থানের শেষ পর্যায়ে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন শুরু হয় এবং বাচ্চায়ে সাকোর আক্রমণে বিপর্যস্ত কাবুল ত্যাগের করুণ কাহিনির মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই আখ্যান। [২]
গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রবৃন্দসম্পাদনা
- আবদুর রহমান- লেখকের ভৃত্য এবং অন্যতম প্রধান চরিত্র। পুরো কাহিনিজুড়ে হাস্যরসাত্মক ও বিচক্ষণতা মিশ্রিত ঘটনার জন্ম দিলেও শেষ পর্যায়ে লেখকের সাথে বিদায়ের মুহূর্তে মর্মান্তিক এবং করুণ পরিণতি হয়।
- অধ্যাপক বেনওয়া- অধ্যাপক এবং কাবুলে লেখকের বন্ধু।
- শেখ আহমদ আলী খান পাঠান- লেখকের বন্ধু এবং পেশাওয়ারের পুলিশ কর্মকর্তা।
- সর্দার আমর সিং বুলানী- প্রবীণ শিখ ড্রাইভার, লেখকের ভাষায় সর্দারজি, লেখকের পেশওয়ার থেকে কাবুলে প্রথম আগমনের সাক্ষী।
- অধ্যাপক খুদাবখশ- ইসলামিয়া কলেজের অধ্যাপক।
- অধ্যাপক বগদানফ- অধ্যাপক এবং কাবুলে লেখকের বন্ধু।
- মৌলানা জিয়াউদ্দীন- অধ্যাপক এবং কাবুলে লেখকের বন্ধু ও পরে শান্তিনিকেতনের অধ্যাপক ছিলেন।
- মীর আসলম- অধ্যাপক এবং কাবুুুলে লেখকের বন্ধুু।
- তারিশ দেমিদফ- সোভিয়েত দূতাবাসের কোষাধক্ষ্য ও কাবুুুলে লেখকের বন্ধুু।
- দোস্ত মুহম্মদ- অধ্যাপক এবং কাবুলে লেখকের বন্ধু।
- মুঈন-উস-সুলতান- আফগানিস্তানের যুবরাজ ইনায়েতুল্লাহ। ১৯২৯ সালের জানুয়ারিতে মাত্র তিন দিনের জন্য আফগানিস্তানের বাদশাহ ছিলেন।
- বাচ্চায়ে সাকো- ডাকাত, যার আক্রমণে আফগানিস্তানে আমানুল্লাহর পতন ঘটেছিল।
- কর্নেল বলশফ- রাশিয়ান এয়ারফোর্সের কর্নেল এবং কাবুলে লেখকের বন্ধু।
- স্যার ফ্রান্সিস হামফ্রিস- কাবুলে ব্রিটিশ লিগেশনের প্রধান।
অন্য ভাষায়সম্পাদনা
২০১৫ সালে বইটি ইংরেজিতে ইন এ ল্যান্ড ফার ফ্রম হোম শিরোনামে অনূদিত হয়।[৩]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ সৌমিত্র দেব। "সৈয়দ মুজতবা আলী ও তার দেশে বিদেশে"। প্রতিদিনের সংবাদ।
- ↑ দেশে বিদেশে (১৪১৭ বঙ্গাব্দ). মুজতবা আলী, সৈয়দ. স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা
- ↑ "'"In A Land Far From Home""। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- হাসান, মুহিত (৯ ডিসেম্বর ২০১৭)। "দেশে বিদেশে-র নেপথ্যকাহিনি"। arts.bdnews24.com।