দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য

বাঙালি লেখক

দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য (১৮৯০ - ১৯৫৭) ছিলেন একজন প্রাচীন সাহিত্যের গবেষক।[] তিনি বাঙালীর সারস্বত অবদান: বঙ্গে নব্যন্যায়চর্চা শীর্ষক সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থটির জন্য ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন।

দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য অবিভক্ত বাংলার রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও হুগলির বিভিন্ন কলেজের অধ্যাপক ছিলেন এবং প্রাচীন সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করতেন। নানা স্থান হতে সংগৃহীত হাতের লেখা, পুরানো পুঁথি, কুলজি, সরকারী দপ্তরের কাগজপত্র ঘেঁটে গ্রন্থ ও গ্রন্থাকারদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতেন। তার সংগৃহীত তথ্যাদি 'ইন্ডিয়ান হিস্টোরিক্যাল কোয়াটার্লি', 'সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা', প্রবাসী, আনন্দবাজার পত্রিকা ইত্যাদিতে প্রকাশিত হয়। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ তার রচিত বাঙালীর সারস্বত অবদান: বঙ্গে নব্যন্যায়চর্চা গ্রন্থটি প্রকাশ করে। গ্রন্থটি মূলত নবদ্বীপের 'নব্যন্যায়' বৃত্তির প্রামাণিক ইতিহাস, যেখানে নবদ্বীপের নানা দার্শনিকের জীবনী ও তাদের কাজের বিবরণ উপস্থাপিত হয়েছে। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি এই গ্রন্থটির জন্য সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। তার রচিত অন্যান্য গ্রন্থগুলি হল

  • হিস্ট্রি অফ নব্যন্যায় ইন মিথিলা
  • কবিরঞ্জন রামপ্রসাদ সেন

এছাড়াও তিনি শ্রী আশুতোষ ভট্টাচার্যের সঙ্গে যুগ্মভাবে বাংলায় প্রথম শিবমঙ্গল কাব্য রচয়িতা কবিচন্দ্র রামকৃষ্ণ রায় রচিত 'শিবায়ন কাব্য' সম্পাদনা করেন যা আষাঢ়, ১৩৬৩ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থের ভূমিকায় তাঁরা রামকৃষ্ণ রায় কবিচন্দ্রের বংশপরিচয়, গ্রন্থরচনার কালনির্ণয় প্রভৃতি বিষয়ে আলোকপাত করেন, যা রামকৃষ্ণ রায় কবিচন্দ্রের ইতিহাস জানার এক গুরুত্বপূর্ন দলিল হয়ে আছে।

অধ্যাপক দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য দীর্ঘদিন (১৯৪০ - ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের পুঁথিশালার অধ্যক্ষ ছিলেন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ পরিষদের সহ-সভাপতি ও পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ২৮৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬