দিওয়ালিবেন পাঞ্জাভাই ভীল (২রা জুন ১৯৪৩ - ১৯শে মে ২০১৬), যিনি দিওয়ালিবেন পাঞ্জাভাই লাধিয়া নামেও পরিচিত, ছিলেন গুজরাটের একজন ভারতীয় লোক গায়ক এবং নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী। তাঁর প্রতিভা দেরিতে আবিষ্কৃত হয়েছিল; তারপরে তিনি রেডিওতে এবং গুজরাটি ছবিতে গান গেয়েছিলেন এবং ১৯৯০ সালে পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন।

দিওয়ালিবেন ভীল
জন্মনামদিওয়ালিবেন পাঞ্জাভাই লাধিয়া
জন্ম(১৯৪৩-০৬-০২)২ জুন ১৯৪৩[]
দলখানিয়া গ্রাম (বর্তমানে ধরি তালুকা, আমরেলি জেলা, বোম্বে প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১৯ মে ২০১৬(2016-05-19) (বয়স ৭২)
জুনাগড়, গুজরাট, ভারত
ধরনলোক সঙ্গীত
পেশালোকশিল্পী, নেপথ্য গায়ক

দিওয়ালিবেন ভীল ১৯৪৩ সালের ২রা জুন[] ডালখানিয়া গ্রামে (বর্তমানে ধরি তালুকা, আমরেলি জেলা, গুজরাট) একটি উপজাতি পরিবারে পাঞ্জাভাই এবং মঙ্গিবেনের কাছে জন্মগ্রহণ করেন।[][][] তাঁর আসল নাম ছিল লাধিয়া।[] মায়ের কাছে অনুপ্রেরণা পেয়ে, তিনি অল্প বয়সেই ঐতিহ্যবাহী গরবা গান গাইতে শুরু করেন। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তে পড়তে পড়া ছেড়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু লোকগান শিখেছিলেন।[] তাঁর বাবা জুনাগড় স্টেট রেলওয়েতে চাকরি পাওয়ার পর, তিনি নয় বছর বয়সে জুনাগড়ে চলে আসেন। নয় বছর বয়সেই রাজকোটে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়, কিন্তু মতবিরোধের কারণে মাত্র দুই দিন পরেই তাঁর বিয়ে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল; তিনি আর বিয়ে করেনি। প্রায় কুড়ি বছর বয়সে, তিনি একটি হাসপাতালে চাকরি পেয়েছিলেন এবং সেখানে দশ বছর কাজ করেছিলেন। পরে, তিনি জুনাগড় পাবলিক হাসপাতালের নার্সদের কোয়ার্টারে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন।[] তিনি জুনাগড়ে চলে আসেন এবং ঘাঘিরাম এলাকায় নিজের ভাইয়ের সাথে থাকতেন।[]

১৯৬৪ সালে, গুজরাটি লোক গায়ক হেমু গাধভি তাঁর প্রতিভার খোঁজ পেয়েছিলেন এবং রাজকোটের অল ইণ্ডিয়া রেডিওতে তাঁর প্রথম রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন, দিওয়ালিবেন ভীল পাঁচ টাকা সাম্মানিক পেয়েছিলেন। সমাজকর্মী রতুভাই আদানি তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যান, সেখানে লোকসংগীত উৎসবে তিনি প্রথম পুরস্কার জিতেছিলেন। মুম্বাইতে, মঞ্চে তাঁর প্রদর্শনের সময় সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণজি তাঁর কথা শুনেছিলেন এবং তাঁকে গুজরাটি চলচ্চিত্রে নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। জেসাল তোরাল (১৯৭১) ছবিতে তিনি প্রথম গান করেন এবং তাঁর গাওয়া "পাপ তারু পরকাশ জাদেজা.." গানটি খুব জনপ্রিয় হয়। তিনি সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য ভারত এবং বিদেশে ভ্রমণ করেছিলেন।[] তিনি প্রাণলাল ব্যাসের সাথে বেশ কয়েকটি মঞ্চ পরিবেশন করেন।[] তিনি গোণ্ডালের কাছে গোমতা গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাজ করতেন।[]

দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তিনি ২০১৬ সালের ১৯শে মে মারা যান।[]

দিওয়ালিবেন একজন স্ব-শিক্ষিত গায়ক ছিলেন, এবং সঙ্গীতের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেননি।[]

দিওয়ালিবেন প্রচুর সংখ্যক লোকগীতি, গরবা, ভজন এবং গুজরাটি ছবির গান গেয়েছেন এবং সেগুলির ক্যাসেট ও রেকর্ড প্রকাশ করেছেন।[] মন কে মঞ্জিরে (২০০১) অ্যালবামে তাঁর লোকগান "আইওয়া আইওয়া" গেয়ে তিনি স্বীকৃতি পান। লোকগানটি ছিল সৌরাষ্ট্রের খারওয়া সম্প্রদায়ের। তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু গান হল "মারে তোড়লে বেঠো মোর", "সোনা ভাতকড়ি রে কেশর ঘোল্যা", "ভাগে ছে রে", "রাম না বন ভাগ্যা", "হরি না বন ভাগ্যা রে", "হালো নে কাঠিয়াবাড়ি রে", "কোকিলকণ্ঠী", "হুঁ তো কাগালাইয়াঁ লাখি লাখি থাকি", "বর্ষে বর্ষে আষাঢ়ী কেরে মেঘ" এবং গুজরাটি চলচ্চিত্র হালো গামড়ে জাইয়ে থেকে "চেলাইয়া খামা খামারে"।[][]

স্বীকৃতি

সম্পাদনা

দিওয়ালিবেন ভীলের লন্ডন সফরের সময় সেখানকার গুজরাটি সমাজ তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছিল।[] তিনি ১৯৯০ সালে ভারত সরকারের চতুর্থ-সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন।[][][][] গুজরাট সরকার তাঁকে গুজরাট গৌরব পুরস্কার প্রদান করে।[] তিনি ২০১১ সালের কবি কাগ পুরস্কারের প্রাপক ছিলেন।[]

নির্বাচিত চলচ্চিত্রের তালিকা

সম্পাদনা
  • জেসল তোরাল (১৯৭১)
  • হোথাল পদামনি (১৯৭৪)
  • ভাদর তারা বহেতা পানি (১৯৭৬)
  • গঙ্গা সতী (১৯৭৯)
  • মানিয়ারো (১৯৮০)
  • রা নবঘন (১৯৭৬)
  • সতী সাবিত্রী
  • লঙ্কানি লদি ঘোঘা নো ভার (১৯৭৮)
  • মাণ্ডবদা রপভো মানরাজ
  • মাছু তারা বহেতা পানি
  • গোরাল গড়সানি (১৯৮২)
  • সোনবা আনে রূপবা
  • আষাঢ়ী বিজ
  • সম্পূর্ণ রামায়ণ
  • বীর আবল ভাল
  • ভগত পিপাজি
  • পিঠি না রং
  • মাইয়ার মা মাণ্ডু নাথি লাগতু
  • শ্যামলশানো বিবাহ
  • বত বচন আনে ভার
  • মালি মেথান
  • বীরাঙ্গনা নাথিবাই
  • দিয়ার ভাতু
  • সোনবাই নি চুন্দদি
  • 'সন্ত তুলসীদাস'
  • লাকো লয়ান

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Ghosh, Nikhil (২০১১)। The Oxford Encyclopaedia of the Music of India। Saṅgīt Mahābhāratī. (1st সংস্করণ)। Oxford University Press। আইএসবিএন 9780199797721ওসিএলসি 729238089 – Oxford Reference-এর মাধ্যমে। 
  2. Kateshiya, Gopal (২০ মে ২০১৬)। "Gujarat: Popular folk singer passes away at 75"The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  3. Ram, Sarman (২০ মে ২০১৬)। "પદ્મ શ્રી લોકગાયિકા દિવાળીબેન ભીલનું નિધન"Divya Bhaskar (গুজরাটি ভাষায়)। ২৪ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৮ 
  4. (গুজরাটি ভাষায়)।  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  5. "Gujarat's renowned folk singer Diwaliben Bhil passed away in hometown Junagadh"The Times of India। ২০ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  6. "Popular Gujarati folk singer Diwaliben Bhil passes away at 83"Mid-Day। ১৯ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১৬ 
  7. "Books by Vijaydan Detha - Prabhat Prakashan"www.prabhatbooks.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-০৩ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা