ত্রিশাল সরকারি নজরুল একাডেমি
ত্রিশাল সরকারি নজরুল একাডেমি (সাবেক দরিরামপুর হাইস্কুল) বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়টি ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে ১৯১৩ সালে দরিরামপুর হাইস্কুল নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই বিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। কবি'র নামেই ১৯৬৪ সালে বিদ্যালের নাম পরিবর্তন করে নজরুল একাডেমি করা হয়েছিল, যা ২০১৮ সালে সরকারিকরণ করা হলে বর্তমান নাম ধারণ করে।
ত্রিশাল সরকারি নজরুল একাডেমি | |
---|---|
অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক | ২৪°৩৪′৫৬″ উত্তর ৯০°২৩′৩৯″ পূর্ব / ২৪.৫৮২১° উত্তর ৯০.৩৯৪১° পূর্ব |
তথ্য | |
প্রাক্তন নাম | দরিরামপুর হাই স্কুল |
ধরন | সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯১৩ ইং |
প্রধান শিক্ষক | এ. কে. এম. কামরুল হাসান |
শ্রেণি | ৬ষ্ঠ - ১০ম |
লিঙ্গ | বালক, বালিকা |
ভাষা | বাংলা |
ক্যাম্পাস | ত্রিশাল, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ |
রং |
|
বোর্ড | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ময়মনসিংহ |
ওয়েবসাইট | tgna.edu.bd |
পরিচিতি
সম্পাদনা১৯১৩ সালে ত্রিশাল উপজেলার দরিরামপুর গ্রামের কিছুসংখ্যক শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি দরিরামপুর উচ্চ বিদ্যালয় নামে এই বিদ্যাপীঠটি প্রতিষ্ঠা করেন। যাদের মধ্যে হাজি মেহের আলী মৃধা অন্যতম। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান বাবু বিপিং চন্দ্র চাকলাদার। তখন বিদ্যালয়টি কলকাতার অধীন ছিল। কতটুকু জমিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা জানা না গেলেও বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের ৬ একরের বেশি জমি রয়েছে। ১৯৬৪ সালে এটির নাম পরিবর্তন করে নজরুল একাডেমি নাম ধারণ করে। কবির স্মৃতিজড়িত বিদ্যালয়টিকে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৯০, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে তিনবার সরকারিকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়। সে সময় সরকারিকরণের কিছু কাজ হলেও পরে আর তা বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টিকে সরকারিকরণ করা হলে বর্তমান সরকারি নজরুল একাডেমি নাম ধারণ করে।
ইতিহাস
সম্পাদনাকবি নজরুলের স্মৃতিবাহক
সম্পাদনাজাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার জীবনের খণ্ডকালীন সময় কাটিয়েছেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায়। তিনি এই এলাকায় থাকাকালীন সময়ে তৎকালীন দরিরামপুর হাইস্কুলে দু-বছর লেখাপড়া করেছেন। ১৯১৪ সালে ত্রিশালের কাজী শিমলা গ্রামের দারোগা রফিজ উল্লাহ কবি নজরুলকে তৎকালীন দরিরামপুর হাই স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে ভর্তি করান।[১] তখন এটি ছিল টিনশেড ঘর। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ত্রিশালে কবি নজরুলের স্মৃতি নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন তারা এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন যে, কবি নজরুল এখানে ১৯১৪ সালে অবস্থান করে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৮ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করেছেন, কিন্তু বার্ষিক পরীক্ষা দেননি।[১] নজরুল ইসলাম এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়াকালীন সময় থেকেই কবিতা লিখতেন। নজরুলের স্মৃতির সাক্ষী হয়ে এই বিদ্যালয়টি যুগযুগ ধরে দাঁড়িয়ে আছে। কবি নজরুলের ব্যবহূত এবং যে ক্লাসে বসে ক্লাস করেছেন সেই কক্ষ দুটি সংরক্ষিত আছে। এটি কবি নজরুলের দরিরামপুর হাইস্কুলে একমাত্র সাক্ষী।[১]
নজরুল জন্মজয়ন্তী
সম্পাদনাকবি নজরুল জীবিত থাকা অবস্থায় ও জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার আগেই ১৯৬৫ সাল থেকে এই বিদ্যালয় মাঠে জাঁকজমকভাবে নজরুল জন্মজয়ন্তী পালন শুরু হয়। ১৯৬৫ সালে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক পি.এ. নাজির ত্রিশালে নজরুল জন্মজয়ন্তীর সূচনা করেন এবং এখনও জাঁকজমকতার সাথে এই বিদ্যালয় মাঠে নজরুল জন্মজয়ন্তী রাষ্ট্রীয়ভাবে উৎযাপিত হয়।[১]
ভর্তি প্রক্রিয়া
সম্পাদনাএই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা প্রদান করা হয়। সাধারণত ৫ম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর পরবর্তীতে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তি করা হয়। আসন খালি থাকা সাপেক্ষে কোন কোন বছর অন্যান্য শ্রেণিতেও ভর্তি করা হয়। ভর্তি পরীক্ষা দিতে কোন আলাদা যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না এবং যেসব ছাত্র ভর্তি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করে তারাই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়।
পোশাক
সম্পাদনা- ছেলেদের ইউনিফর্ম
- হাফ/ফুল হাতা সাদা শার্ট
- খাকি রঙের ফুল প্যান্ট
- সাদা মোজা ও জুতা (কেডস)
- বাঁ পকেটের ওপর বিদ্যালয়ের মনোগ্রাম
- কাঁধের দুই পাশে বিদ্যালয়ের প্রতীক সংবলিত ব্যাজ
- মেয়েদের ইউনিফর্ম
- সাদা সালোয়ার-কামিজ
- সাদা ওড়না ও বেল্ট
- সাদা এপ্রন
- সাদা মোজা ও জুতা