তেজপুর
তেজপুর ভারতের অসম রাজ্যের শোণিতপুর জেলার প্রধান ও প্রশাসনিক শহর। আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে এই শহরের দূরত্ব প্রায় ১৮০ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর পারে অবস্থিত তেজপুর শহর চিত্রলেখা উদ্যান, অগ্নিগড়, জ্যোতি চিত্রবন ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্নের জন্য বিখ্যাত।
তেজপুর তেজপুৰ | |
---|---|
শহর | |
ডাকনাম: শাশ্বত প্রণয়ের শহর | |
স্থানাঙ্ক: ২৬°৩৮′ উত্তর ৯২°৪৮′ পূর্ব / ২৬.৬৩° উত্তর ৯২.৮° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | আসাম |
জেলা | শোণিতপুর |
উচ্চতা | ৪৮ মিটার (১৫৭ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,০২,৫০৫ |
ভাষা | |
• অফিশিয়াল | অসমীয়া |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
ওয়েবসাইট | sonitpur |
নামকরণ
সম্পাদনাহিন্দু ধর্মগ্রন্থ মহাভারতে উল্লেখ করা মতে প্রাচীন কালে বর্তমান তেজপুরে বান নামক রাজার আধিপত্য ছিল। রাজা বানের ঊষা নামক একটি কন্যা ছিল। ঊষা রূপে-গুনে সমৃদ্ধ ছিল। রাজা বান মায়াবলে আগুন দ্বারা আবৃত একটি দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন এবং দুর্গটিতে ঊষাকে নিরাপদ ভাবে রাখা হয়েছিল। একদিন ঊষা স্বপ্নে এক সুন্দর যুবককে দেখেন। ঊষার কল্পনা অনুযায়ী চিত্রলেখা যুবকটির ছবি অঙ্কন করেন। অবশেষে জানা যায় যুবকটি শ্রীকৃষ্ণের নাতি অনিরুদ্ধ। চিত্রলেখার মাধ্যমে ঊষা ও অনিরুদ্ধের প্রেম শুরু হয়। রাজা বানের অনুমতি নাথাকায় তাহারা গন্ধর্ব প্রথায় বিবাহ করেন। বানরাজা ক্রোধিত হয়ে অনিরুদ্ধকে বন্দী করেন। নাতিকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে বানরাজা ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সহিত যুদ্ধের সৃষ্টি হয়। বানরাজা ছিলেন শিবের উপাসক তিনি শিবের থেকে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করায় ভগবান শিব ও শিবের সেনা বানের পক্ষ হয়ে যুদ্ধে যোগদান করেন। শিবসেনা ও কৃষ্ণসেনার সহিত ঘটিত যুদ্ধে রক্তের বন্যা বয়ে যায় তখন থেকে এই স্থানের নাম তেজপুর নামে পরিচিত হয়। কারণ অসমীয়া ভাষায় রক্তকে "তেজ" বলা হয়।
ইতিহাস
সম্পাদনাচীন-ভারত যুদ্ধ এর অংশ হিসেবে নভেম্বর ১৯৬২ সালে এই শহরে চীন হামলার আশঙ্কা দেখা দেয়। ১৯শে নভেম্বর যুদ্ধ বিরাম ঘোষণার পর এই শহরে কোনো হামলা হয়নি।
নদ-নদী
সম্পাদনাব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর পারে এই শহর অবস্থিত। ব্রহ্মপুত্র তেজপুরের প্রধান নদ। জিয়াভরলী নামক একটি নদী তেজপুরের দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হয়। এছাড়া নানা ছোট বড় পুকুর দিয়ে তেজপুর ভরপুর। পদুম পুখুরী এখানকার একটি বিখ্যাত জলাশয়।
সামরিক গুরুত্ব
সম্পাদনাশহরটি অরুণাচল ও ভুটানের সীমান্ত নিকটে অবস্থিত। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর অতি নিকটে চীনের সীমান্ত রয়েছে।
বায়ুসেনা ঘাঁটি
সম্পাদনাতেজপুর বিমানবন্দর টিতে তেজপুর বায়ু সেনা ঘাঁটি অবস্থিত। এটা পূর্ব কমান্ড-এর স্থায়ী বায়ুসেনা ঘাঁটি। এখানে দ্বিতীয় ও ১০৬তম স্কোয়াড্রন অবস্থিত যা প্রধান যুদ্ধবিমান সুখোই সু-৩০ এমকেআই সংবলিত।
সেনা ঘাঁটি
সম্পাদনাসেনার পূর্ব কমান্ড-এর ৪র্থ কোর-এর ঘাঁটি এখানে অবস্থিত।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
সম্পাদনাতেজপুরের প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে:
বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদনা- তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়
- কেকেএইচ স্টেট উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (শিক্ষাকেন্দ্র)
- ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (শিক্ষাকেন্দ্র)
- তেজপুর মেডিকেল কলেজ
বিদ্যালয়
সম্পাদনা- তেজপুর বাঙালি বালক উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- তেজপুর বাঙালি বালীকা উচ্চতর বিদ্যালয়
- তেজপুর রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম
- সরকারী উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
মহাবিদ্যালয়
সম্পাদনাঅন্যান্য
সম্পাদনাদর্শনীয় স্থান
সম্পাদনাতেজপুরের প্রধান দর্শনীয় ধর্মীয় স্থান গুলো হচ্ছে :
আমোদ প্রমোদের স্থান
সম্পাদনাচিকিৎসালয়
সম্পাদনাযোগাযোগ ব্যবস্থা
সম্পাদনারেলপথে
সম্পাদনাডেকারগাঁও শহরের প্রধান রেলওয়ে স্টেশন। তেজপুর নামক রেলওয়ে স্টেশন থাকলেও সেটা ব্রহ্মপুত্র তীরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। এই অঞ্চলে এখনো ডিজেল লাইন রয়েছে।
রাজনীতি
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "List of Parliamentary & Assembly Constituencies" (পিডিএফ)। Assam। Election Commission of India। ২০২০-০৭-২৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৯।